ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১২ ১৪৩১

‘ভালো নির্মাতা হওয়ার জন্য সততা-নিজস্বতা প্রয়োজন’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৫:২৬, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
‘ভালো নির্মাতা হওয়ার জন্য সততা-নিজস্বতা প্রয়োজন’

একজন ভালো নির্মাতা কিংবা অভিনয়শিল্পী হওয়ার জন্য সততা এবং নিজস্বতা বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন  ‘মহানগর’র নির্মাতা আশফাক নিপুণ। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে গ্রিন ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম যোগাযোগ বিভাগের সহযোগী সংগঠন জেএমসি মিডিয়া ক্লাব আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. অলিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও গ্রিন ইউনিভার্সিটির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা মননের সঞ্চালনায় তিনি বলেন, ‘ধরুন, আপনি একজন লেখক হবেন, গল্প লিখতে চান। কোন গল্প লিখলে পাঠকের কাছে বেশি পৌঁছাবে, সেটা নির্ভর করছে আপনি কতটা সৎভাবে গল্পটা লিখছেনে তার ওপরে। ঠিক একইভাবে, যারা নির্মাতা কিংবা অভিনয়শিল্পী হতে চান, তাদের ক্ষেত্রেও এই সততা ও নিজস্বতাকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অভিনয়শিল্পী হতে চাইলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানুষকে দেখা। কারণ প্রতিটা মানুষের চেহারায় গল্প আছে। ধরুন, আপনি বাসে করে কোথাও যাচ্ছেন। ওই বাসে আপনার আশেপাশে যারা বসে আছেন, দাঁড়িয়ে আছেন প্রত্যেকের মাঝেই একটি করে গল্প বিরাজমান। এই গল্পগুলোই যখন আপনি পর্দায় নিয়ে আসবেন, তখনই দর্শকরা বেশি কানেক্ট করতে পারবেন। কারণ এগুলো তাদেরই দৈনন্দিন জীবনের গল্প।’

মহানগর ওয়েব সিরিজের উদাহরণ টেনে এ নির্মাতা বলেন, ‘সমাজে পুলিশকে নিয়ে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। তাই আমার মনে হয়েছে, তাদেরকে কেন্দ্র করেই একটা গল্প নির্মাণ করা যায়। যদিও কাজটা সহজ ছিলো না। কারণ পুলিশকে নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। আমি সেই চ্যালেঞ্জটাই নিয়েছিলাম। এমনও হয়েছে, ‘মহানগর’ নিয়ে বেশকিছু ওটিটি প্লাটফর্ম গল্প শুনে আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু গল্পে কোনো ছাড় দিতে রাজি হইনি। কারণ আমার কাজ সম্পর্কে সৎ ছিলাম। এরপর ওয়েব সিরিজটি মুক্তি পাওয়ার প্রায় সবাই প্রশংসা করেছেন।’

অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে আশফাক বলেন, ‘প্রতিদিন বাসায় ফেরার সময় একটা চেকপোস্টে নিয়মিত দাঁড় করানো হতো এবং প্রতিবারই আমাকে সিএনজি থেকে নামিয়ে তল্লাশি করা হতো। ঘটনাটি আমার সঙ্গে টানা কয়েকদিন ঘটার পর সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলাম- ‘এই চেকপোস্টে তল্লাশি করে আপনারা কখনো কিছু পেয়েছেন?’ এই প্রশ্নের কোনো উত্তর না পেলেও, এরপর থেকে আমাকে সেই চেকপোস্টে থামালেও তল্লাশি না করেই দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। বলা যায়, এই ঘটনা থেকেই আমার মাথায় ‘মহানগর’ ওয়েব সিরিজ নির্মাণের চিন্তা তৈরি হয়।’

একজন নির্মাতার জন্য দর্শকের উত্তেজনার বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা খুব চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন আশফাক নিপুণ। তার ভাষায়, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই সময়ে দশ সেকেন্ডের রিলস ভিডিও বেশ জনপ্রিয়। মানুষ এখন বড় ভিডিও খুব একটা দেখতে চায় না। দর্শক উত্তেজনা চায়। যেটা একটা ড্রাগসের মতো। আমরা যখন কোনো কনটেন্ট নির্মাণ করি, তখন এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজ করতে হয়। প্রায় সবাই চেষ্টা করে- কোনো নাটক, ওয়েব সিরিজ কিংবা সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রথম তিন মিনিটেই এমন কিছু রাখা, যেটা দেখে দর্শক পুরো গল্পটা দেখতে আগ্রহ নিয়ে বসবে। আমি এটাই ভাঙতে চেয়েছি। ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’র ক্ষেত্রে উত্তেজনার থেকে নীরবতাটাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছি। কারণ নির্মাণের ক্ষেত্রে আমি সবসময়ই সততাকেই বেশি প্রাধান্য দেই।’

এদিন গ্রিন ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনিরা শরমিনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, গ্রিন ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান ড. আফজাল হোসাইন খান, সহকারী স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ সোলায়মান, গ্রিন ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক ফোরামের মডারেটর ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামিম মণ্ডল, সাংবাদিকতা বিভাগের ফ্যাকাল্টি শরিফ জাহান, ইব্রাহিম আজাদ, জেএমসি মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি তাহমিনা ইমু, সেক্রেটারি রবিউল হাসান প্রমুখ।

/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়