ঢাকা     বুধবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৪ ১৪৩১

মাহির দুটো প্রেম-বিয়ে একই সুতায় গাঁথা

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ৩০ জুন ২০২৪   আপডেট: ২০:৪৪, ১ জুলাই ২০২৪

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। রুপালি পর্দায় তার শরীরি সৌন্দর্য আর সাবলীল অভিনয় দেখে প্রেমে পড়েছেন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী। ব্যক্তিগত জীবনে তিনিও একাধিক প্রেমে পড়েছেন। তার দুটো প্রেম বিয়েতে গড়িয়েছে। তার এই দুটো প্রেম-বিয়ের নেপথ্যের গল্প প্রায় একই। কেবল তাই নয়, তাদের বিচ্ছেদের গল্পও প্রায় একই সুতায় গাঁথা। বেস্ট ফ্রেন্ডের ফ্রেন্ডের প্রেমে মজেছিলেন এই নায়িকা। আবার বিচ্ছেদের কারণ বোঝাপড়া না হওয়া। দুই প্রেম-বিয়ে আর বিচ্ছেদের গল্প একই।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ভালোবেসে বিয়ে করেন সিলেটের ব্যবসায়ী অপুকে। ২০১৮ সালে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে তাদের প্রেম বিয়ের গল্প রাইজিংবিডিকে শুনিয়েছিলেন মাহিয়া মাহি।

প্রাক্তন স্বামী অপুর সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের ঘটনা বর্ণনা করে মাহি বলেছিলেন, ‘২০১২ সালের শেষের দিকে আমার প্রিয় বন্ধু আশ্রাবের সঙ্গে পরিকল্পনা করলাম কোথাও ঘুরতে যাব। আমার ইচ্ছা ছিল কক্সবাজার যাওয়ার। ও বলল সিলেট যাবে। আমরা ওর কথা মেনে সবাই সিলেট গেলাম। আশ্রাবের বেস্ট ফ্রেন্ড অপু। অপুদের বাড়িও সিলেটে। অপুর সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পর মনে হলো, হ্যাংলা-পাতলা আইনস্টাইন টাইপের একটা ছেলে। আমি একদমই যা অপছন্দ করি, ওর মধ্যে সেগুলো পেলাম। অনেক বেশি ফর্সা, চশমা পরে, চিকন- এসব আরকি! ওকে দেখার পর আশ্রাবকে খোঁচাচ্ছিলাম- তোর বন্ধু এমন কেন? আমি তো ভেবেছিলাম তোর বন্ধু অনেক সুন্দর হবে! যাই হোক, প্রথম দেখায় প্রেম- আমার ক্ষেত্রে এটা হয়নি।’

আরো পড়ুন:

অপুর প্রেমে পড়ার ঘটনা বর্ণনা করে মাহি বলেছিলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের ঘটনা। অপুদের চা-বাগান আছে, ফিশারি আছে। আশ্রাব বললো, চল একটু ঘুরে আসি। অপু ওদের গাড়ি নিয়ে এলো। ওর সঙ্গে আরো দুজন বন্ধু ছিল। আমি, আশ্রাব আরেকজন বন্ধু পেছনে বসলাম। অপু গাড়ি চালাচ্ছিল। আমি বরাবরই সিনেমাটিক। খুবই রোমান্টিক। গান শুনলে একটু আনমনা হয়ে যাই। তখন কল্পরাজ্যে বিচরণ করি। তো জাফলংয়ের রাস্তায় গাড়ি চলছিল। ‘ফাগুনের দিন শেষ হবে একদিন’ গানটি বাজছিল। অপুর সামনে লুকিং গ্লাস ছিল। আমার হঠাৎ করেই লুকিং গ্লাসে চোখ পড়ল। ওই প্রথম ওকে দেখেই কেন জানি ভালো লেগে গেল। বলা যায়, সেদিন লুকিং গ্লাসে দেখেই আমি অপুর প্রেমে পড়েছি। আমি বুদ্ধি করে আননোন নাম্বার থেকে অপুকে এসএমএস পাঠালাম। লেখা ছিল: ‘আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে’। এরপর আরো কিছু এসএমএস পাঠালাম। এভাবেই আমাদের প্রেম হয়।’

অপু-মাহির প্রেম পরিণয়ে রুপ নেয়। ২০২১ সালের ২৪ মে তাদের পঞ্চম বিবাহবার্ষিকীর আগমুহূর্তে মাহি জানান, একসঙ্গে আর তারা থাকছেন না। তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ের বোঝাপড়া না হওয়ায় তারা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন মাহিয়া।

প্রথম সংসার ভাঙার পর গাজীপুরের ছেলে রাকিবের প্রেমে পড়েন মাহি। রাকিব-মাহির প্রেমের গল্পও একই রকম। রাকিবের সঙ্গে পরিচয় পর্বের বিষয়ে মাহি বলেন, ‘রাকিব আর আমার মধ্যে শুধু বন্ধুত্ব ছিল। আমাদের ৮-৯ জনের একটা গ্রুপ আছে। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হচ্ছে রাকিবের ফ্রেন্ড। এ রকম আমাদের কমন বন্ধুদের একটা গ্রুপ ছিল। যেই গ্রুপটাতে ওর সঙ্গে আমার প্রায়ই দেখা হতো। যেকোনো গেট টুগেদারে। মজার উদ্দেশ্যে আমি- রাকিব ও গ্রুপের সবাই মিলে ছবি তুলে ফেসবুকে দিলাম। ওকে যারা পছন্দ করে, তাদের জেলাসের জন্য। কিন্তু ছবি দেখে রাকিব আর আমাকে নিয়ে নিউজ শুরু করে দেয় সবাই। যখন নিউজ শুরু হয়েছিল, তখন ওর ফ্যামিলিতে সমস্যা শুরু হয়েছিল।’

হঠাৎ বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন মাহি। তা স্মরণ করে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘যখন নিউজ শুরু হলো, তখন থেকেই চিন্তা করলাম, ও যেহেতু সিঙ্গেল, আমিও সিঙ্গেল। চলো, বিয়েটাও করে ফেলি। বিয়ের পরই আমাদের প্রেম শুরু হয়েছিল।’

দ্বিতীয় সংসারও টেকেনি মাহির। বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ভেঙে যায় এ সংসার। এ সংসারে মাহির একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বর্তমানে ছেলে ফারিশকে নিয়ে একা জীবনযাপন করছেন তিনি। রাকিবের সঙ্গে বোঝাপড়া না হওয়ার কারণে বিচ্ছেদ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহি।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়