গায়কের পর চলে গেলেন ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানের স্রষ্টা
অরুণ কুমার চক্রবর্তী
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানের গায়ক সুভাষ চক্রবর্তী। এ গায়কের চলে যাওয়ার প্রায় দুই বছর পর গানটির স্রষ্টা কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তী মারা গেলেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়া ফার্ম সাইড রোডে অবস্থিত বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
কবির পরিবারে রয়েছেন তার স্ত্রী, দুই ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতিরা। অরুণ কুমার চক্রবর্তীর পুত্রবধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী ভারতীয় গণমাধ্যমে জানান, সেদিন রাতে কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গল মহল উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। একটু ঠান্ডা লেগেছিল। করোনার পর থেকে ফুসফুসে সমস্যাও ছিল। তবে একেবারেই অসুস্থ ছিলেন না।
১৯৪৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার বাগবাজারে জন্মগ্রহণ করেন অরুণ কুমার চক্রবর্তী। ১৯৯০ সাল থেকে চুঁচুড়ায় থাকতেন তিনি। শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাস করে হিন্দুস্তান মোটরে চাকরি নেন অরুণ চক্রবর্তী। তবে লেখালিখি ছিল তার জীবনের অন্যতম প্যাসন।
মন ছুঁয়ে যাওয়া অসংখ্য কবিতা রয়েছে তার অরুণ কুমার চক্রবর্তীর ঝুলিতে। তবে ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ তাকে আলাদা পরিচিতি এনে দেয়। পরবর্তীতে গানের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে পরিচিতি পান তিনি। এ কবিতা সুর করে কণ্ঠে তুলেন সুভাষ চক্রবর্তী। যা তাকে রাতারাতি খ্যাতি এনে দেয়।
গায়ক সুভাষ চক্রবর্তী মারা যাওয়ার পর কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তী বলেছিলেন, ‘‘প্রচলিত সুরে সুভাষ আমার ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটা গাওয়ার পরেই তাকে রেকর্ডিং কোম্পানিতে নিয়ে যাই। পূজার গান হিসেবে হেমন্ত, মান্না, আরতিদের পাশে নতুন মুখ হিসেবে সুভাষ উঠে এসেছিলেন।”
এক সাক্ষাৎকারে অরুণ কুমার চক্রবর্তী বলেছিলেন, “গানটি একটা গাছের চারা নিয়ে কবিতা হিসেবে লেখা। ১৯৭২ সালে লেখা হয় কবিতাটি, শ্রীরামপুরে। স্টেশনের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎই মহুয়া ফুলের গন্ধ। দেখলাম ফুলভর্তি একটা মহুয়াগাছ। দৃশ্যটা আমাকে কেন জানি অবাক করেছিল। মনে হলো, আচ্ছা গাছটি এখানে কেন? এ তো জঙ্গলে থাকার কথা। এটা হবে জঙ্গলের রানি।”
ঢাকা/শান্ত