কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘টাইটানিক’ তারকা কেট
একটি অনুষ্ঠানে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেট উইন্সলেট
শোবিজ অঙ্গনে বডি শেমিং বা শরীর নিয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য খুব সাধারণ বিষয়। কারণ হরহামেশাই এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান তারকারা। ২২ বছর বয়সে বডি শেমিংয়ের শিকার হয়েছিলেন ‘টাইটানিক’ তারকা কেট উইন্সলেট। সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি টক-শোয়ে অতিথি হিসেবে হাজির হন কেট উইন্সলেট। মূলত, তার অভিনীত লী মিলারের বায়োপিকের প্রচারের জন্য এ অনুষ্ঠানে হাজির হন। ‘টাইটানিক’ সিনেমার টিমের অংশ হিসেবে ১৯৯৮ সালে ‘গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস’-এ যোগ দেন কেট। এ অনুষ্ঠানে বডি শেমিংয়ের শিকার হন। সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ৪৯ বছর বয়সি এই অভিনেত্রী।
১৯৯৮ সালে অনুষ্ঠিত ‘গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস’-এর রেড কার্পেটে কেট-লিওনার্দো
‘৬০ মিনিটস’ শিরোনামের টক-শোয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করেন কেট। তাতে দেখা যায়, সাদা-কালো রঙের গাউন পরে রেড কার্পেটে হাঁটছেন কেট উইন্সলেট। তার পাশে রয়েছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। এরপর একজন সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী কেট উইন্সলেটকে বলেন, “এ পোশাকে শরীর গলে পড়ছে। আপনার আরো দুই সাইজ বড় পোশাক পড়া উচিত ছিল।”
“এটি খুবই ভয়ংকর ছিল”— এ কথা বলেই পুনরায় ভিডিও ফুটেজ দেখতে শুরু করেন কেট উইন্সলেট। তারপর বলেন, “তারা কোন প্রকৃতির মানুষ, যারা একজন তরুণ অভিনেত্রীর মাঝে এমন কিছু খুঁজেন?”
সেই সময়ে এ ধরনের ঘটনা নিত্যদিন তার সঙ্গে ঘটেছে। যদিও শরীর নিয়ে এমন লজ্জাজনক মন্তব্যগুলো কখনো প্রকাশ্যে আনেননি। এসব তথ্য উল্লেখ করে কেট উইন্সলেট বলেন, “আমি তাদের এসব করতে দিয়েছি। আমি বলেছিলাম, ‘আশা করি, এটি আপনার কাছে ঘুরেফিরেই আসবে।’ এটি দারুণ সময় ছিল। দারুণ সময় মানে— এটি কেবল আমার সঙ্গেই ঘটেনি। এটি সেই সমস্ত মানুষের জন্য, যারা এমন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এটি ভয়ংকর ছিল। এটি খুবই খারাপ ছিল।”
এই ধরনের ব্যক্তিগত সমালোচনা তার ক্যারিয়ারকে দীর্ঘায়িত করেছে। তার অভিনয়ের শিক্ষক কেটকে বলেছিলেন, “শোন কেট, তুমি যদি এমন লুকেই থাকো তবে তোমাকে ‘মোটা মেয়ে’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।” আমি বলেছিলাম, “আমি কখনো মোটা ছিলাম না। আমাকে মোটা ভাবতে বাধ্য করা হয়েছে। চুপচাপ আমি আপনাকে দেখাব।”
‘টাইটানিক’ সিনেমার দৃশ্য
হলিউডের বরেণ্য নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের সিনেমা মানেই অসাধারণ আর ব্লকবাস্টার। তার নির্মিত সবচেয়ে আলোচিত, বিখ্যাত আর নজরকাড়া সিনেমাগুলোর অন্যতম ‘টাইটানিক’। ব্যয়বহুল এ সিনেমা ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির মূল গল্প গড়ে উঠেছে বহুল আলোচিত টাইটানিক জাহাজকে কেন্দ্র করে।
টাইটানিক জাহাজটি প্রথম যাত্রায়ই আটলান্টিক সাগরের ঠান্ডা পানিতে ডুবে গিয়েছিল। এ দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। কারণ খুব কম মানুষেরই ভাগ্য হয়েছিল অন্ধকার আর শীতল ভয়ের সেই রাতটাকে পেরিয়ে পরের দিনের সূর্য দেখার। আর সেই কয়েকজন সৌভাগ্যবানের মধ্যে ছিলেন রোজ নামে একটি মেয়ে। জাহাজে খুঁজে পাওয়া নিজের ভালোবাসার মানুষ জ্যাকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বেঁচে ফিরেছিলেন তিনি। সিনেমাটিতে রোজ চরিত্রে অভিনয় করেন কেট উইন্সলেট আর জ্যাকের ভূমিকায় অভিনয় করেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ঢাকা/শান্ত