ঢাকা     রোববার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১ ১৪৩১

সকালে উঠেই ভীষণভাবে অপমানিত হলাম: আফজাল হোসেন

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫০, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৬:২৮, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
সকালে উঠেই ভীষণভাবে অপমানিত হলাম: আফজাল হোসেন

আফজাল হোসেন

অনলাইনে কেনাকাটা করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বরেণ্য অভিনেতা আফজাল হোসেন। এ ঘটনায় দারুণভাবে মর্মাহত হয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই শিল্পী।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আফজাল হোসেন। লেখার শুরুতে তিনি বলেন, “সকালে উঠেই ভীষণভাবে অপমানিত হলাম। ভীষণভাবে বললাম তার কারণ, আপনি যদি কারো সঙ্গে কখনো প্রতারণা না করে থাকেন, যদি কাউকে কখনো অপমান না করে থাকেন— নিজে কারো দ্বারা অপমানিত, প্রতারিত হলে খুব গায়ে লাগে। দেয়া এবং নেয়ায় অভ্যস্ত না হলে যা হবার তাই হয়। সহজে মেনে নেওয়া যায় না। এই যেমন ঘণ্টা দুয়েক হয়ে গেছে খারাপ লাগা কমছেই না। অনুমান করি, দিনভর এই খারাপ লাগা ভোগাতে থাকবে!”

অনলাইন ব্যবসার ইতিবাচক দিক উল্লেখ করে আফজাল হোসেন বলেন, “আজকাল সুবিধার জন্য মানুষ অনলাইনে খুব কেনকাটা করে থাকেন। দেখেছি এই অনলাইনের সুবিধা এসে অনেক মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সাহস, স্বনির্ভর হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। অনেকেই এই সুবিধা থাকার কারণে নিজের ভিতরে যে সৃজনশীলতা আছে, তার চর্চায় নিবেদিত হওয়ার প্রেরণা পেয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠার পথেও এগিয়ে চলেছেন।”

আরো পড়ুন:

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদিত হচ্ছে রকমারি পণ্য। তা স্মরণ করে আফজাল হোসেন বলেন, “আমাদের দেশের শিল্পীদের তৈরি শাড়ি, চুড়ি, কানের গলার গহনা, হাতব্যাগ, গায়ের চাদর, বিছানার চাদর, কাঁথা, টেবিল ক্লথ, মেয়েদের স্যান্ডেল ইত্যাদির শোভা, সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হতে হয়। বহুরকমের খাদ্যদ্রব্য, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত বিখ্যাত পণ্যসমূহ অনলাইনে ঘরে বসেই কেনাকাটা করার সুযোগ হয়েছে বলেই মানুষ বহু নতুন এবং অচেনা পণ্যদ্রব্যে আগ্রহী হন, কেনাকাটা করে থাকেন।”

অনলাইন ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছে বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করছেন। সে কথা স্মরণ করে আফজাল হোসেন বলেন, “ভেবে দেখুন, সবাই কিন্তু গুরুত্ব দিয়ে পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের চেষ্টা করে থাকেন। সবাই জানেন এবং মানেন বিশ্বাসী করে না তুলতে পারলে ক্রেতা অনলাইনে কেনাকাটা করতে চাইবেন না। দুনিয়া টিকে আছে ভালো মানুষ ও মানুষের ভালো গুণপনার কারণে। কিন্তু কি ভালো আর কি মন্দ তা বুঝতে বা আলো কত দরকারি তা বুঝতে জগতে অন্ধকারও দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। তার বিচিত্র উদাহরণ প্রায়ই দেখা যায়, চোখে পড়ে।”

অনলাইন কেনাকাটার সুযোগে ক্রেতা ঠকানো যাবে— এমনটাও ভেবে থাকে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী। তাদের লক্ষ্যই মানুষ ঠকানো। তারা তো নিজের পায়ে কুড়াল মারেই- অন্য ভালোদের প্রতিও অবিশ্বাস জাগিয়ে তোলে বলে মনে করেন আফজাল হোসেন।

অনলাইনে কেনাকাটা করে তিনবার ঠকেছেন আফজাল হোসেন। সেসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “আজ নিয়ে অনলাইন কেনাকাটায় আমি তিনবার দারুণভাবে ঠকেছি। প্রথমবার একটা ছোট্ট বেডসাইড টেবিল কিনে একদিনও ব্যবহার করতে পারিনি। দ্বিতীয়বার ঠকেছি মোবাইল ফোনের চার্জার ক্যাবল কিনে। তা একবারও ব্যবহার করা যায়নি। যোগাযোগ করলে তারা বদলে দেবে বলেছিল, শেষ পর্যন্ত দেয়নি এবং পরে আর যোগাযোগও করা যায়নি। কিছুদিন পরে লক্ষ্য করেছি, এরা দু’তিনটি পেজ খুলে একই পণ্য বিক্রি করে থাকে। তার মানে তারা আগে থেকেই জানে একবার পণ্যটি কেউ কিনলে পরবর্তীতে একই ঠিকানা থেকে খারাপ পণ্যটি কিনবে না। এরকম মনোভাব থাকা মানে অসাধুতা। এত অসততা দিয়ে তো ব্যবসায়ে উন্নতি হওয়া মোটেও সম্ভব নয়। তাহলে এসব কাণ্ড কেন করে থাকে মানুষ!”

ভীষণ মর্মাহত আফজাল হোসেন বলেন, “আজ সকালে মনে হলো, কেউ আমার কান মলে দিয়েছে। মনে হলো, অকারণেই দু’তিনটে থাপ্পড় খেলাম। আমি ছবি আঁকি। রঙের টিউব, কৌটা রাখার জন্য চাকা লাগানো ট্রলি র‌্যাক কেনা হয়েছিল দোকান থেকে। দুটো ছিল আর একটা হলে ভালো হতো মনে করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে ফেলি। কাল সেটা বাসায় আসে। আজ সকালে বাক্সটা খুলি। খুলেই হা হয়ে যাই। এত খারাপ মানের সেটা, মনে হচ্ছে ব্যবহার না করে ফেলে দিতে পারলেই ভালো।”

অসৎ মানুষের কার্যকলাপে বিস্মিত আফজাল হোসেন। প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এই অভিনেতা বলেন, “মানুষ এতটা অন্যায় করে কিভাবে? এটা তো একশতভাগ প্রতারণা। ক্রেতা পয়সা দিয়ে জিনিস কিনবে কিন্তু বিক্রেতা ভালো করেই জানে, জিনিসটা কিনে কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ফেসবুকে ভালোদের সাথে খুব খুব খুব খারাপ বিক্রেতা ব্যবসায়ীরাও আছে। যারা ছবিতে যা দেখায় তেমন পণ্য সরবরাহ করে না। এরা অতিমাত্রায় অসৎ, অবিবেচক— এদের কাছ থেকে পণ্য কেনার সময় ভেবে চিন্তে, দেখে বুঝে, সাবধানে কেনাই উচিত।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়