আল্লু অর্জুনের স্ত্রীকে কতটা জানেন?
আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম
গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে গ্রেপ্তার করা হয় তেলেগু সিনেমার সুপারস্টার আল্লু অর্জুনকে। নানা জটিলতার পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান এই ‘পুষ্পা’ তারকা। কিন্তু কারামুক্ত হতে পারেননি। গত ১৪ ডিসেম্বর জেল থেকে ছাড়া পান আল্লু অর্জুন। বাড়ি ফেরার পরই স্বামীকে কাছে পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন আল্লু অর্জুনের স্ত্রী স্নেহা রেড্ডি।
এ মুহূর্তের একাধিক ভিডিও অন্তর্জালে ভাইরাল হয়। তারপর থেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন আল্লু অর্জুনের স্ত্রী স্নেহা রেড্ডি। আল্লু অর্জুন রুপালি জগতের মানুষ হলেও তার স্ত্রী এই অঙ্গনের কেউ নন। চলুন জেনে নিই, স্নেহা রেড্ডির পরিবার, তার শিক্ষা ও আল্লুর সঙ্গে প্রেম-বিয়ের আদ্যেপান্ত।
স্নেহার পরিবার ও শিক্ষা
১৯৮৫ সালে হায়দরাবাদের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন স্নেহা রেড্ডি। তার বাবার নাম কাঞ্চরলা চন্দ্রশেখর রেড্ডি। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। পাশাপাশি হায়দরাবাদের সায়েন্ট ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান। হায়দরাবাদে স্কুল-কলেজের পাঠ সম্পন্ন করেন স্নেহা। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ভারতে ফিরে বাবার সায়েন্ট ইনস্টিটিউটে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন।
স্নেহার মোট সম্পদ
ছোটবেলা থেকেই ছাত্রী হিসেবে তুখোড় স্নেহা রেড্ডি। তার মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে অর্থ আয়েও সাফল্য পেয়েছেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪২ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৮ কোটি ৯২ লাখ টাকার বেশি)। ভারতের অভিজাত উদ্যোক্তা এবং প্রভাবশালীদের একজন স্নেহা। কেবল ব্যবসা নয়, সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও অনেক অর্থ আয় করেছেন স্নেহা।
উদ্যোক্তা-সোশ্যাল মিডিয়া তারকা
২০১৬ সালে হায়দরাবাদে পেশাদার ফটোগ্রাফি স্টুডিও ‘স্টুডিও পিকাবু’ প্রতিষ্ঠা করেন স্নেহা রেড্ডি। বর আল্লু অর্জুনের সহায়তায়, তার এ ব্যবসা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। স্নেহা সোশ্যাল মিডিয়ার সেনসেশন। তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে অনুসারীর সংখ্যা ৯৩ লাখের বেশি। এ মাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবনের নানা মুহূর্ত শেয়ার করে থাকেন তিনি। ফ্যাশন সচেতন স্নেহার এসব মুহূর্তও লুফে নেন তার ভক্তরা।
আল্লু-স্নেহার প্রথম দেখা
বন্ধুর বিয়েতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন আল্লু অর্জুন। সেখানেই স্নেহা রেড্ডিকে প্রথম দেখেন এই অভিনেতা। আর প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েন। এক বন্ধুর মাধ্যমে স্নেহার সঙ্গে পরিচয় হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’জনের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। কিন্তু সেখানেই শেষ; পরবর্তীতে আর যোগাযোগ হয়নি।
প্রথম ডেট
স্নেহাকে যেন কিছুতেই ভুলতে পারছিলেন না আল্লু। বন্ধুরাও তাকে জোর করছিলেন মেসেজ পাঠাতে। পরে মুঠোফোনে মেসেজ পাঠালে তাতে সাড়া দেন স্নেহা এবং দু’জনের মধ্যে কথা শুরু হয়। এরপর পুনরায় দেখা করার পরিকল্পনা করেন তারা। প্রথম ডেটে একে অপরের সঙ্গ পছন্দ হয় তাদের। এরপর নিয়মিত দেখা করতে শুরু করেন। ফলে তাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো হতে থাকে। ধীরে ধীরে পরস্পরের প্রেমে পড়েন তারা। এক সময় বিয়ের পরিকল্পনা করেন। যদিও সবকিছু গোপনেই করছিলেন এই জুটি।
আল্লু-স্নেহার প্রেমেও কাঁটা
আল্লু-স্নেহার প্রেম কাহিনিতেও ছিল বাধা। তাদের প্রেমের কথা জানতে পারেন আল্লু অর্জুনের বাবা আল্লু অরবিন্দ। বাবার কাছে বিষয়টি স্বীকার করেন আল্লু অর্জুন। স্নেহাকে বিয়ে করতে চাওয়ার কথাও জানান তিনি। অন্যদিকে, স্নেহার বাবা কেসি শেখর রেড্ডি ছিলেন ব্যবসায়ী। দু’জনের পরিবারই তাদের বিয়ের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু আল্লু ও স্নেহা কোনোভাবেই পরস্পরকে ছাড়তে রাজি ছিলেন না। অনেকটা বাধ্য হয়েই দুই পরিবার একত্রিত হন এবং এই জুটির বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
বিয়ে ও সন্তান
২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর বাগদান সারেন আল্লু অর্জুন ও স্নেহা। এ সময় তাদের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। এর প্রায় তিন মাস পর ২০১১ সালের ৬ মার্চ বিয়ে করেন আল্লু ও স্নেহা। ২০১৪ সালে এ দম্পতির ঘর আলো করে আসে তাদের প্রথম সন্তান আল্লু আয়ান। এর দুই বছর পর তাদের মেয়ে আল্লু আরহার জন্ম হয়।
তথ্যসূত্র: সিয়াসাত ডটকম
ঢাকা/শান্ত