একসঙ্গে দুই নায়িকার প্রেমে বুঁদ, নীরবতা ভাঙলেন শত্রুঘ্ন
আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম
রীনা রায় ও পুনম সিনহার সঙ্গে শত্রুঘ্ন সিনহা
বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। পাটনার ছেলেটি নিজ মেধা ও পরিশ্রম গুণে বলিউডে শক্ত জায়গা গড়েছেন, একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন সংসদ সদস্য। সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময়ে শত্রুঘ্ন সিনহা তার ক্যারিয়ারের শীর্ষে অবস্থান করেন। সেই সময়ে ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্কে জড়ান এই ‘খামোশ’ তারকা। অর্থাৎ একই সঙ্গে সহঅভিনেত্রী রীনা রায় ও পুনম সিনহার সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেন শত্রুঘ্ন।
দুজন নারীর সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও আশির দশকের শুরুতে অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ পুনম সিনহাকে বিয়ে করেন শত্রুঘ্ন। যার কারণে রীনা রায়কে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেননি তিনি। আবার পুনমকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তার বিশ্বাস ভঙ্গ করেন এই নায়ক। পাঁচ দশক আগের সেই সব ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন শত্রুঘ্ন সিনহা।
কয়েক দিন আগে লেহরেন রেট্রো-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব বিষয়ে কথা বলেন শত্রুঘ্ন। তিনি বলেন, “আমি কারো নাম উল্লেখ করছি না। যেসব নারী আমার জীবনের অংশ ছিলেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি তাদের কাউকে অবজ্ঞা করি না। আমাকে বেড়ে উঠতে, ভালো মানুষ হতে তারা প্রত্যেকে সাহায্য করেছেন।”
একসঙ্গে দুই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ালে একজন পুরুষ শারীরিক-মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। শত্রুঘ্ন সিনহার মতে, “ভালো মনের একজন পুরুষ যখন একই সঙ্গে দুটো সম্পর্কে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে, তখন সে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভোগেন। পাশাপাশি আপনি অপরাধবোধে ভুগবেন। আপনি যখন প্রেমিকার সঙ্গে বাইরে থাকেন, তখন বাড়িতে থাকা স্ত্রীর জন্য অপরাধবোধ হবে। আপনি যখন স্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন, তখন আপনার প্রেমিকার জন্য মন খারাপ করবেন।”
শত্রুঘ্ন সিনহা নিজের ভুল স্বীকার বলেন, “আমি আমার জীবনে অবশ্যই ভুল করেছি। পাটনা থেকে আসা ছেলেটি ইন্ডাস্ট্রির জাঁকজমক এবং গ্ল্যামারে হারিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ছিল। আমি জানতাম না কীভাবে তারকা খ্যাতি নিয়ে চলতে হয়। মানুষ এসব কিছুতেই হারিয়ে যায়। আমাকে দিক-নির্দেশনা দেওয়ার মতো কোনো অভিভাবক ছিল না।”
তবে স্ত্রী পুনম সিনহা তাকে একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন বলেও জানান এই অভিনেতা।
প্রাক্তন প্রেমিকা রীনা রায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শত্রুঘ্ন সিনহা। তার ভাষায়— “আমি তার নাম উল্লেখ করতে চাই না। কিন্তু তার সঙ্গে যাই ঘটে থাকুক, আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি তার কাছ থেকে প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি; আমার কোনো অভিযোগ নেই।”
ত্রিভুজ প্রেমে ছেলে-মেয়ে উভয়ই কষ্ট পেয়ে থাকেন। এ তথ্য উল্লেখ করে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, “এ কথা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ত্রিভুজ প্রেমে শুধু নারী নয়, পুরুষও সমান কষ্ট পায়।”
১৯৭৬ সালে ‘কালীচরণ’ সিনেমায় অভিনয় করতে অভিনেত্রী রীনা রায়ের সঙ্গে পরিচয় শত্রুঘ্ন সিনহার। তাদের রুপালি পর্দার রসায়ন দ্রুত বাস্তবে রূপ নেয়। ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন ট্রেনে পরিচয় হয় শত্রুঘ্ন-পুনম সিনহার। পরবর্তীতে তাদের সম্পর্ক প্রেমে রূপ নে। তবে ১৯৮০ সালে দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা পুনম সিনহাকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির জমজ পুত্রসন্তান ও একটি কন্যা রয়েছে। তারা হলেন— লাভ সিনহা, কুশ সিনহা ও সোনাক্ষী সিনহা।
তথ্যসূত্র: বলিউড হাঙ্গামা
ঢাকা/শান্ত