খেলার মাঠ থেকে রুপালি পর্দায় প্রবীর মিত্র
প্রবীর মিত্র
রুপালি পর্দার নবাব, কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র। গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। জীবদ্দশায় অভিনয়ের বাইরে কিছু ভাবতেন না। কিন্তু অভিনয়ে পা রাখার আগে পুরোদস্তুর ক্রিকেটার ছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে নন্দিত এই অভিনেতা এসব তথ্য জানিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবীর মিত্র জানান, ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশনে ক্রিকেট খেলতেন তিনি। ক্যাপ্টেন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এমনকি হকিও খেলেছেন একসময়। অভিনেতা হবেন তা কখনো ভাবেননি। খেলতে খেলতে জীবন পার করতে চেয়েছিলেন। হঠাৎ অভিনয়টা চুম্বকের মতো টেনে ধরে তাকে।
পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ১৯৬৯ সালে ‘জলছবি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান প্রবীর মিত্র। মূলত, বন্ধু এটিএম শামসুজ্জামানের সহায়তায় সিনেমায় অভিষেক হয় তার। সিনেমাটি ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি মুক্তি পায়। এই সিনেমা দিয়েই নায়ক ফারুকেরও বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছিল। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে নায়ক হিসেবেই অভিনয় করতেন প্রবীর মিত্র। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমাটি তার ক্যারিয়ারের মাইলফলক। এই সিনেমা তাকে পরিচিতি এনে দেয়। এরপর বেশ কিছু সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। গত শতকের আশির দশকে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।
প্রবীর মিত্র অভিনীত শেষ সিনেমা ‘শঙ্খচিল’ মুক্তি পায় ২০১৬ সালে। এটি পরিচালনা করেন ভারতের প্রখ্যাত নির্মাতা গৌতম ঘোষ। এ সিনেমায় কলকাতার অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন প্রধান অভিনেতা। তার বিপরীতে ছিলেন ঢাকার কুসুম শিকদার। এ সিনেমার পর অসুস্থতার কারণে আর সিনেমায় অভিনয়ে করা হয়নি প্রবীর মিত্রের। সুস্থ হয়ে অভিনয়ে ফেরার ইচ্ছে ছিল এই অভিনেতার।
দীর্ঘদিন অর্থারইটিজ, বিশেষ করে হাঁটুর তীব্র ব্যাথায় দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে প্রবীর মিত্রকে। যাপন করতে হয়েছে প্রায় নিঃসঙ্গ জীবন। পরে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই রোগে প্রবীর মিত্রের হাড়ে ক্ষয় ধরেছিল।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত