রেল স্টেশনে প্রথম দেখা, লং ডিসটেন্স ঝড় তুলেছিল অলকার প্রেম জীবনে
বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

বলিউডের প্লেব্যাক গায়িকা অলকা ইয়াগনিক। তার গায়কির প্রেমে পড়েননি এমন শ্রোতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। মিষ্টি কণ্ঠের মতো তার ব্যবহারও মধুর। বাস্তব জীবনে এই সংগীতশিল্পীর সিনেমাটিক প্রেম কাহিনি রয়েছে। তারকা হয়েও সাধারণ একজন ব্যবসায়ী গলায় মালা পড়ান ‘বোলে চুড়িয়া’খ্যাত এই শিল্পী।
আশির দশকের শেষ লগ্নে ব্যবসায়ী নীরাজ কাপুরকে বিয়ে করেন অলকা। এ জুটির প্রথম দেখা রোমান্টিক সিনেমার গল্পের চেয়েও কম নয়। মূলত, নীরাজ অলকার মায়ের বন্ধুর আত্মীয়। এক সাক্ষাৎকারে অলকা জানান, একবার মায়ের সঙ্গে দিল্লি যান অলকা। রেল স্টেশনে তাদের নিতে এসেছিল নীরাজ। সেখানেই প্রথম দেখা তাদের। প্রথম দেখাতেই পরস্পরের প্রেমে পড়েন।
নীরাজ অলকার ব্যাপারে তেমন কিছু জানতেন না। ফলে নেতিবাচক ভাবনা নিয়েই রেল স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন; যা পরবর্তীতে অলকাকে জানিয়েছিলেন নীরাজ। এ বিষয়ে অলকা ইয়াগনিক বলেন, “নীরাজ পায়জামা পরে স্টেশনে এসেছিল। আমার ব্যাপারে প্রথম তার ধারণা ছিল, অত্যন্ত চটকদার একজন মহিলা যে, ট্রেন জার্নি করে ক্লঅন্ত হয়ে নামবে।”
যাহোক, প্রথম দেখায় পরস্পরকে ভালো লাগায় অল্প সময়ের মধ্যে তাদের বন্ধুত্ব হয়। সম্পূর্ণ ভিন্ন পেশায় থাকা সত্ত্বেও অলকা-নীরাজ ডেটিং শুরু করেন। দুই বছরের বেশি সময় প্রেম করার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা। ১৯৮৯ সালে বিয়ে করেন অলকা-নীরাজ। কিন্তু এ বিয়েতে সম্মতি ছিল না এই গায়িকার বাবা-মায়ের। তারা মনে করেছিলেন, লং ডিসট্যান্স এই বিয়েতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অলকাকে বিয়ে করার পর নীরাজ কাপুর মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান এবং সেখানে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু প্রচুর লোকসানের মুখে পড়েন। এ বিষয়ে অলকা ইয়াগনিক বলেন, “নীরাজ মুম্বাইয়ে একটি ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ছোট শহরের সিধেসাধা লোক, এখানে এসে বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রতারণার মুখে পড়ে। তাই আমি তাকে শিলংয়ে ফিরে গিয়ে ব্যবসা চালানোর পরামর্শ দিই।”
একদিকে অলকার নিজের ক্যারিয়ার, অন্যদিকে স্বামীর ব্যবসা। সর্বশেষ বরের ব্যবসার কথা মাথায় রেখে তাকে শিলং পাঠান অলকা। কিন্তু লং ডিসটেন্স দাম্পত্য জীবনে ‘প্রধান শত্রু’ হয়ে দাঁড়ায়। অর্থাৎ অলকা-নীরাজের বিয়েতে ফাটল দেখা দেয়। অলকার বাবা-মায়ের আশঙ্কাই বাস্তবে দেখা দেয়। এই সংকট এতটাই কঠিন দ্বন্দ্বে রূপ নেয় যে, দেখা তো দূরের কথা চার থেকে পাঁচ বছর কথাও বলেননি তারা।
কিন্তু ধীরে ধীরে অলকা-নীরাজ উপলদ্ধি করেন, তারা কেউ কাউকে ছাড়া বাঁচতে পারবেন না। এরপর আসা-যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এই দম্পতি। কখনো নীরাজ চলে আসেন, কখনো চলে যান অলকা। এভাবেই তাদের দাম্পত্য জীবনের ৩৬ বছর চলছে। এ দম্পতির সায়েশা নামে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
ঢাকা/শান্ত