ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১০ ১৪৩১

একজন সফল উদ্যোক্তা আফতাব

উদ্যোক্ত ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ৫ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১৩:০৩, ৬ জুলাই ২০২২
একজন সফল উদ্যোক্তা আফতাব

মো. আফতাব উদ্দিন

বর্তমানে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে ঘরে বসেই নানা দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। সম্ভাবনাময় এ খাতে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে ‘কোটর্ড লিমিটেড’। অনলাইনভিত্তিক এ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সফল উদ্যোক্তার নাম মো. আফতাব উদ্দিন।

আফতাব উদ্দিনের শৈশব কেটেছে বগুড়ার ভবানীপুর নামে ছোট্ট একটি গ্রামে। শেরপুরে স্কুলজীবন শেষ করেন। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিলো ‘হ্যাকার’ এবং ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। আর হ্যাকিংয়ের জন্য আগে প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। অনলাইনে বা সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে যতটুকু সুযোগ পেতেন, চেষ্টা করতেন।

মাধ্যমিক শেষ করে ঢাকায় এসে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার বিজ্ঞানে ভর্তি হন। তখন প্রোগ্রামিং নিয়ে আগ্রহ দেখে তাকে প্রশিক্ষক হিসেবে যুক্ত করা হয়। সেখানে তিনি সি প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্টের ওপর ক্লাস নেন। এভাবেই ছোটবেলা থেকে এই সেক্টর নিয়ে একধরনের ক্ষুধা জন্ম নেয়। পরে হয়ে গেলেন একজন সফল উদ্যোক্তা।

আরো পড়ুন:

আফতাব উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আমার নিজের কোম্পানির নাম কোটর্ড লিমিটেড শুরু করি, যার চারটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নাম কোটর্ড আইটি, কোটর্ড সফটওয়্যার, নাজেরিক ডিজিটাল এবং আফতাব ডিজিটাল মিডিয়া। তখন আমার প্রবণতা আসে মোবাইল অ্যাপ নিয়ে। আমি বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় যোগ দিতাম। দেশ-বিদেশে অনেক ক্লায়েন্ট যুক্ত হয়। নাজেরিক ডিজিটাল, যা বাংলাদেশি নেটিজেনদের বাঁচিয়েছে। হয়রানি প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে বেশ কিছু উদ্যোগ রয়েছে, যা মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

তিনি বলেন, কোটর্ড লিমিটেড নামে আমার একটি কোম্পানি সেন্টার ছিলো। কিন্তু করোনার সময় সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে ভাবছিলাম কী করা যায়? যেহেতু ছোটবেলা থেকেই প্রশিক্ষক ছিলাম। আমি শেখাতে পছন্দ করি। এ কারণেই আমি লকডাউনের সময় ‘নাজেরিক ডিজিটাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করি, যা মাত্র তিন মাস আগে চালু হওয়া ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ওপর ফোকাস করে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এখন আরও বেশি লোক রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, ছাত্ররা আমাকে জাদুকর উপাধি দিয়েছে। আমি কোর্স ফি শুধু নামেই রেখেছি, যাতে নিম্নআয়ের মানুষও এ কোর্সগুলো করে তাদের দক্ষতা বিকাশ করতে পারে। ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমেও এটি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়। আমার স্বপ্ন কোটর্ড লিমিটেড এবং নাজেরিক ডিজিটালের লোকজন তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াবে, কারও ওপর নির্ভর না করে নিজের যোগ্যতায় কিছু করবে–এ স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।

‘আমার মনে হয় যে কাউকে অনুসরণ করা সাফল্যের চাবিকাঠি নয়। আমি গতকালের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি কি না, আগের প্রজেক্টের থেকে একটু ভালো করতে পেরেছি কি না–এটাই আমার কাছে মুখ্য বিষয়। বিশেষ করে মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনে কোনো অবদান রেখেছি কি না, সেদিকে নজর দিয়েছি। মানুষের জীবনমানের কোনো পরিবর্তনের জন্য আমি কোনো অবদান রাখলাম কি না, আমি সেটাতেই ফোকাস করি,’ যোগ করেন তিনি।

আফতাব উদ্দিন জানান, সম্প্রতি কোটর্ড লিমিটেড ছাড়াও আরও চারটি উদ্যোগ রয়েছে। এর মধ্যে ‘কোটর্ড আইটি’ সেবার জন্য জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। আর একটি ‘কোটর্ড সফটওয়্যার, আফতাব ডিজিটাল মিডিয়া ও নাজেরিক ডিজিটাল’ সবই কোটর্ড লিমিটেডের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে এটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ কোম্পানি বিশ্বের সব ভাষা বুঝতে পারে।

এ উদ্যোক্তা বলেন, সবার আগে সেবার দিকে নজর দেওয়া জরুরি। যাতে কোনো প্রশিক্ষণ পর্যাপ্ত হয়, যাতে মানুষ উপকৃত হয়। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে মানুষ যাতে সেবা নিয়ে দ্বিধা না করে। ই-লার্নিংয়ে পাইরেসি মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ই-লার্নিং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি খুব বড় শিল্প হতে যাচ্ছে। কিন্তু পাইরেসি নিয়ে ঠিকমতো কাজ হচ্ছে না। জলদস্যুতা রোধে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে। সম্ভাবনাময় এ খাতে টিকে থাকতে চাইলে এর কোনো বিকল্প নেই।

/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়