দুই বান্ধবীর ‘ওলো সই’
রাশিদা খাতুন || রাইজিংবিডি.কম
ফাহমিদা আখতার, কাকলী তানভীর
দুই বান্ধবী আলাদা আলাদা পণ্য নিয়ে ই-প্ল্যাটফর্মে কাজ করছিলেন। একজন ফাহমিদা আখতার, আরেকজন কাকলী তানভীর। যে যার মতো সাফল্যও পেয়েছেন। একসময় তারা সিদ্ধান্ত নেন দুইজনের পণ্য একসঙ্গে, এক নামে ব্রান্ডিং করবেন এবং একটি আউটলেট গড়ে তুলবেন। সেই স্বপ্ন পূরণে ২০২৩ এর ১ নভেম্বর ‘ওলো সই’ এর যাত্রা শুরু হয়।
ফাহমিদা আর কাকলীর যৌথ পরিশ্রমে অল্প দিনেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘ওলো সই’। অর্জন করে নিয়েছে ক্রেতাদের আস্থা। তারা রাইজিংবিডিকে জানালেন, ১২ লাখ টাকা মূলধন নিয়ে শুরু হয়েছিল তাদের যৌথ উদ্যোগ, যা বর্তমানে ৩০ লাখ টাকা মূলধনের ব্যবসায়ে রূপ নিয়েছে।
কথায় কথায় জানা গেলো তাদের সাফল্যযাত্রার গল্প। শুরু থেকেই কাকলী কাজ করছিলেন শাড়ি, কুর্তি, ব্যাগ ও গয়না নিয়ে। টানা সাত বছর ই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্যের প্রচারণা ও বিক্রির কাজ করেছেন কাকলী। এই সময়ের মধ্যে যে অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছেন, তাই পরে তাকে অফলাইনে কাজ করার প্রেরণা জুগিয়েছে।
ফাহমিদা আখতার বলেন, ‘আমি গাছ নিয়ে কাজ করছি ২ বছরের বেশি সময় ধরে।এক পর্যায়ে মনে হলো অফলাইনে আসতে পারলে ক্রেতাদের সুবিধা হবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়বে। আরো বেশি আস্থার সম্পর্ক তৈরি হবে। ক্রেতাদের গঙ্গে হৃদ্যতা বাড়বে। সে চিন্তা থেকে ‘ওলো সই’ এর যাত্রা শুরু।’
দুই বান্ধবী চেয়েছেন, তাদের পণ্যের মূল ক্রেতা নারীদের জন্য এমন একটি সুযোগ তৈরি করা, যাতে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে এসে নিজেরা নিজেরা আড্ডা, গল্পেও মেতে উঠতে পারেন। ওলো সইতে আসা নারী ক্রেতাদের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি করা, আন্তরিকতা বাড়ানোও এই দুই উদ্যোক্তার উদ্দেশ্য। তাদের থিম হচ্ছে ‘সিস্টার হুড’।
এজন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়াকেই বড় চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছিল তাদের জন্য। অবশেষে তারা দুইজনে মিলে লালমাটিয়ার ডি ব্লকের ৩/২ বাড়িতে তাদের আউটলেট গড়ে তোলেন।
ওলো সইয়ের থিম হচ্ছে সিস্টারহুড
ওলো সইতে দেশি, বিদেশি— শাড়ি, কুর্তি, হাতব্যাগ, গয়না, ইনডোর ও আউটডোর গাছের পাশাপাশি রয়েছে গাছ পরিচর্যার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, সার ও পট। দুই বান্ধবীর পছন্দে মিল রয়েছে, রয়েছে মনের মিল । তাই সব কাজ এগিয়ে নিতে পারছেন আনন্দের সঙ্গে।
কাকলী জানিয়েছেন, তাদের দুই বান্ধবীর পছন্দের পণ্য ক্রেতারা সাদরে গ্রহণ করেন। তারা নিজেরা যে শাড়ি, ব্লাউজ পরেন; অনেক সময় ক্রেতারা সেই ধরণের শাড়ি, ব্লাউজের অর্ডার করে থাকেন।
ফাহমিদা আখতার জানিয়েছেন, ওলো সইয়ের আউটলেটে আসা ক্রেতারা অনেক সময় তার কাছ থেকে গাছ পরিচর্যার পরামর্শও গ্রহণ করেন। আর এই বিষয়টি বেশ উপভোগ করেন তিনি।
ওলো সইয়ের পণ্য ডিজাইন করেন দুই বান্ধবী মিলে। পণ্য প্রসারে কোন নিয়মে কাজ করেন?—প্রশ্নের জবাবে ফাহমিদা আখতার বলেন, ‘অনলাইনকেই প্রাধান্য দিই। পণ্যের ভিডিও করে বা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করি। সেখানে দেখে কেউ কেউ অর্ডার করেন। আবার যিনি পণ্য হাতে ধরে পরখ করে কিনতে চান তাদেরকে আমরা ‘ওলো সই’ তে চলে আসার আমন্ত্রণ দিই। বিভিন্ন উৎসব বা উপলক্ষ সামনে রেখে আমরা ডিসকাউন্ট দিই।– সাধারণত উৎসবে বেশি বিক্রি হয়।’
ওলো সইয়ের বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে মিডিয়াম রেঞ্জের শাড়ি আর আর ইনডোর প্লান্ট বেশি জনপ্রিয়।
দুই বান্ধবীর স্বপ্ন, আগামীতে বড় সেন্টার গড়ে তুলবেন। যেখানে শাড়ি, গয়না, গাছের পাশাপাশি একটি ক্যাফে থাকবে, বই পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। যাতে নারীরা এসে ইচ্ছামতো সময় কাটাতে পারেন।
ঢাকা/লিপি