টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ, চ্যাম্পিয়ন ইতালি
আবারও টাইব্রেকারে স্বপ্নভঙ্গ ইংল্যান্ডের। তাদের ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় ইউরো শিরোপা জিতলো ইতালি।
ইংল্যান্ড (০): সাকাকে রুখে দেন দোনারুম্মা।
ইতালি (০): জর্জিনহোর বিরুদ্ধে পিকফোর্ড দুর্দান্ত সেভ করেন ডানপাশে ঝাঁপিয়ে।
ইংল্যান্ড (০): সানচোকে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন দোনারুম্মা।
ইতালি (১): বের্নার্ডেশচি মাঝামাঝি শটে জালে বল পাঠান।
ইংল্যান্ড (০): র্যাশফোর্ড বাঁ দিকের পোস্টে আঘাত করলেন।
ইতালি (১): বোনুচ্চি গোল করে ইতালির আশা জাগিয়ে রাখলেন।
ইংল্যান্ড (১): ম্যাগুইরেও সফল হলেন।
ইতালি (০): বেলোত্তিকে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান পিকফোর্ড।
ইংল্যান্ড (১): হ্যারি কেইন ডান পায়ের শটে বাঁ দিক দিয়ে জাল কাঁপান।
ইতালি (১): বেরার্দি বাঁ পায়ের বাঁ দিকের শটে পিকফোর্ডকে পরাস্ত করেন।
নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। অতিরিক্ত সময়েও স্কোর একই থাকে। তাতে টাইব্রেকারে গড়ালো ম্যাচ।
ফাইনাল অতিরিক্ত সময়ে গড়ালো
১০৭ মিনিট- বের্নার্ডেশচির ফ্রি কিক মাঝ বরাবর ইংলিশ রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে সোজা গোলমুখে। পিকফোর্ড ওই শট ফিরিয়ে দেওয়ার পরপরই বল গ্লাভসবন্দি করেন।
১০৩ মিনিট- ইনসিগনের বাঁকানো ক্রস কাছের পোস্টে বের্নার্ডেশচি পাওয়ার আগেই পিকফোর্ড সেভ করেন।
৯৭ মিনিট- লুক শর কর্নার বিপদমুক্ত হলেও কেভিন ফিলিপসের সামনে পড়ে। বক্সের বাইরে থেকে তার ডান পায়ের শট গোলবারের পাশ দিয়ে যায়।
লিওনার্দো বোনুচ্চি এক গোল শোধ দেন ইংল্যান্ডকে। তাতে ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে। স্কোর এখনও ১-১।
ইংল্যান্ডকে চমকে দিয়ে সমতা ফেরালো ইতালি
৭৩ মিনিট- ইতালির দারুণ সুযোগ। ভেরাত্তির পাস ধরে বেরার্দির ভলি। পিকফোর্ড এগিয়ে এসে রুখে দেন তাকে।.
৬৭ মিনিট (গোল, ইতালি)- ইনসিগনের কর্নার কিক ইংলিশদের বক্সে ফ্লি করে মার্কো ভেরাত্তির কাছে। তার হেড পিকফোর্ড দারুণ সেভে ফেরত পাঠালেও লিওনার্দো বোনুচ্চি ছিলেন সামনেই। গোলকিপারের নিচ দিয়ে বল ঠেলে জালে জড়ান তিনি। স্কোর ১-১।
৬৪ মিনিট- ইংল্যান্ডের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ। মাউন্ট ম্যাসনের কর্নার কিক জায়গামতো বল পেয়েছিলেন স্টোনস। তার হেড ছিল গোলমুখে, কিন্তু দোনারম্মা তা ক্রসবারের ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠান।
৬২ মিনিট- ইংল্যান্ডের তিন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে চিয়েসা নিচু শট নেন লক্ষ্যে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ সেভ করেন পিকফোর্ড।
৫৭ মিনিট- বাঁ দিক থেকে চিয়েসার নিচু ক্রস ট্রিপিয়ারের পায়ে লেগে বক্সে থাকা ইনসিগনর কাছে। বল ধরে কিছুটা এগিয়ে আড়াআড়ি শট নেন ইতালির ফরোয়ার্ড। সেখানে ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড বাধা হয়ে দাঁড়ান।
৫১- লরেঞ্জো ইনসিগনের ফ্রি কিক। ইতালি এবারও পারলো না সমতা ফেরাতে। শট চলে গেল গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে।
৪৬- দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেছে ইংল্যান্ড ও ইতালি। প্রথমার্ধে ৬২ শতাংশ সময় বল ছিল ইতালির পায়ে, গোল করার জন্য শট নিয়েছিল ৬টি। যেখানে ইংল্যান্ডের শট মাত্র একটি, যা ছিল জালে।
ফাইনালে এগিয়ে থেকে বিরতিতে ইংল্যান্ড
শেষ হলো ইউরো ফাইনালের প্রথমার্ধ। মাত্র ২ মিনিটের মধ্যে লিড নেয় ইংল্যান্ড। কিয়েরন ট্রিপিয়ারের ক্রস ধরে দূরের পোস্টে দাঁড়ানো লুক শ ইউরো ফাইনালের দ্রুততম গোল করেন। ইতালির আক্রমণে ধার ছিল না। প্রথমার্ধের শেষ দিকে চিয়েসার শট পোস্টের বাইরে যায়, আর সিরো ইম্মোবিলের ভলি ব্লক করে ইতালিকে হতাশ করেন স্টোনস।
৪৫+৪- লিওনার্দো বোনুচ্চির বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ডান পায়ের শট ক্রসবার থেকে অনেক উঁচুতে ছিল। ইতালির আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ।
৪৫+১- জিওভান্নি ডি লরেঞ্জোর পাসে সিরো ইম্মোবিলের ভলি, স্টোনসের ব্লকে আবারও হতাশ ইতালি।
৩৫ মিনিট- চিয়েসা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আক্রমণে যান। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন। তা লক্ষ্যে ছিল না। তার নিচু ড্রাইভ ডানদিকের পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
২৮ মিনিট- ইংলিশ রক্ষণের বাধায় কোনও পথ খোলা ছিল না ইনসিগনের। ৩০ গজ দূর থেকে লক্ষ্যে শট নেওয়ার চেষ্টা। বাঁ পোস্টের বাইরে দিয়ে বল মাঠের বাইরে।
১৮ মিনিট- ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ইতালি। কিছু পাসে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা। যদিও ইংল্যান্ডকে তা দুশ্চিন্তায় রাখছে না।
৮ মিনিট- বক্সের বাইরে থেকে লরেঞ্জো ইনসিগনের ফ্রি কিক। তার ডান পায়ের শট ইংলিশ রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে গেল ঠিকই, কিন্তু তারপর ক্রসবারের ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে।
২ মিনিট (গোল, ইংল্যান্ড)- ঘড়ির কাটায় ম্যাচের সময় ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। লিড নিলো ইংল্যান্ড। ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোলটি করলেন লুক শ। ডান দিক থেকে হ্যারি কেইনের বাড়ানো বলে কিয়েরান ট্রিপিয়ারের লম্বা ক্রস ধরে বক্সের সেন্টার থেকে গোল করেন। সোমবার তার ২৬তম জন্মদিন।
০ মিনিট- ইউরো ফাইনালের বাঁশি বেজেছে। মুখোমুখি ইতালি ও ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে ইংলিশদের উৎসাহ দিতে উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক।
ইউরো সমাপনী অনুষ্ঠান
ছোট পরিসরে হয়ে গেলো ইউরোর সমাপনী অনুষ্ঠান। ইউরোর হেনরি ডিলোনি কাপকে ঘিরে হয়ে গেলো ফোক নৃত্য। আর ভিডিওতে প্রদর্শন করা হলো গত ইউরোর ফাইনালে করা পর্তুগালের এডারের গোলের দৃশ্য। পর্তুগিজদের রাজত্ব শেষ। এবার কি ইংল্যান্ড নাকি ইতালি?
ওয়েম্বলিতে উৎসবের অপেক্ষা
ঘরে ফিরছে ট্রফি নাকি যাবে রোমে? আশায় বুক বেঁধেছে ইংল্যান্ড। ৫৫ বছরে প্রথম কোনও ট্রফি জেতার মিশন তাদের। ইউরোতে কেবল একটি গোল হজম করা থ্রি লায়নরা প্রস্তুত ইতালিকে রুখে দিতে। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে তা দেখতে হাজারে হাজারে দর্শক ভিড় করেছে। যারা স্টেডিয়ামে আসতে পারেননি, তারাও তৈরি হয়ে আছে উৎসবের অপেক্ষায়। জিতলে সোমবার গোটা দিন জমকালো আয়োজনে পার করবে ইংরেজরা। কিন্তু তাদের এই উৎসব মাটি করে দিতে পারে ৩৩ ম্যাচ ধরে অজেয় ইতালি। এখন দেখার অপেক্ষা শেষ হাসি কে হাসে- ইংল্যান্ড নাকি ইতালি? রাত ১টায় শুরু হচ্ছে ফাইনালের মহারণ।
ইতালি ও ইংল্যান্ডের দল
ইতালি একাদশ: দোনারুম্মা, ডি লরেঞ্জো, বোনুচ্চি, কিয়েল্লিনি, এমারসন, বারেল্লা, জর্জিনহো, ভেরাত্তি, চিয়েসা, ইম্মোবিলে, ইনসিগনে।
সাব: সিরিগু, লোকাতেল্লি, বেলোত্তি, বেরার্দি, পেসিনা, আকারবি, ক্রিস্তান্তে, বের্নার্ডেশচি, বাস্তোনি, ফ্লোরেহ্জি, তোলোই, মেরেত।
ইংল্যান্ড একাদশ: পিকফোর্ড, ওয়াকার, স্টোনস, ম্যাগুইরে, ট্রিপিয়ের, ফিলিপস, রিচি, শ, মাউন্ট, স্টারলিং, কেইন।
সাব: গ্রিলিশ, হেন্ডারসন, র্যাশফোর্ড, রামসডেল, মিঙ্গস, কোয়াডি, সানচো, কালভার্ট-লেভিন, জনস্টোন, জেমস, সাকা, বেলিংহ্যাম।
এগিয়ে ইতালি নাকি ইংল্যান্ড?
৫৩ বছরে প্রথম ইউরোপিয়ান শিরোপার দাবিদার ইতালি। ২০০০ ও ২০১২ সালের পরাজিত ফাইনালিস্ট ১৯৬৮ সালে রোমে যুগোস্লাভিয়াকে হারিয়ে শেষ ইউরো জিতেছিল। আর ইংল্যান্ড এই টুর্নামেন্টে কখনও সেমিফাইনালের বাধা পেরোতে পারেনি। ১৯৬৬ সালের পর প্রথম কোনও বড় ট্রফির হাতছোঁয়া দূরত্বে থ্রি লায়নরা। ৫৫ বছর আগে বিশ্বকাপ জয়ই ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাদের একমাত্র সাফল্য।
রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ইতালি পৌঁছায় ফাইনালে। আর ইংল্যান্ড হ্যারি কেইনের অতিরিক্ত সময়ের গোলে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে ডেনমার্কের বিপক্ষে। শিরোপার লড়াইয়ে ইংলিশদের কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে। ইতালি যে টানা ৩৪ ম্যাচ ধরে অপরাজিত।
তাছাড়া দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানও কথা বলছে ইতালির পক্ষে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইতালির সঙ্গে ১৪ বারের দেখায় কেবল দুইবার জিতেছে ইংল্যান্ড। ১৯৯৭ সালের জুনে ২-০ গোলে, আর ২০১৩ সালের আগস্টে ২-১ গোলে- দুটিই ছিল প্রীতি ম্যাচ।
বড় টুর্নামেন্টে ইতালি কখনও ইংল্যান্ডের কাছে হারেনি। ১৯৮০ সালের ইউরোতে ১-০ গোলে জিতেছিল। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে তাদের জয় ২-১ গোলে। মাঝে ২০১২ সালের ইউরোতে গোলশূন্য স্কোর শেষে পেনাল্টিতে জিতেছিল আজ্জুরিরা।
ঢাকা/ফাহিম