ঢাকা     রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৭ ১৪৩১

মেলায় খালিদ মারুফের গল্পগ্রন্থ ‘সুখী অ্যাসপারাগাস’

ফাগুনের মলাট ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৩:০৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
মেলায় খালিদ মারুফের গল্পগ্রন্থ ‘সুখী অ্যাসপারাগাস’

সময়ের রাজনীতি ও সমাজ সচেতন গল্পকার খালিদ মারুফ। তার গল্পে পরিসরের স্বল্পতার মধ্যেই এক প্রকার নাটকীয় চুম্বকত্ব তৈরি হয়। এই গল্পকারের গল্পগ্রন্থ ‘সুখী অ্যাসপারাগাস’ প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। বইমেলায় এটি পাওয়া যাবে প্যাভিলিয়ন ২৬-এ। বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০টাকা। সুখী অ্যাসপারাগাসের প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী।

সুখী অ্যাসপারাগাস পাণ্ডুলিপি থেকে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো, ‘ তিনি, অর্থাৎ আমার বড়ো ফুপু ঐ বুড়ো আর দুঃখী ভূতটার সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, বলা যায় আমার কাঁধে তুলে দিয়েছিলেন, অজ্ঞাতে-অজান্তে। ভূতটা একসময় মানুষকে ভয় দেখনোর কৌশল ভুলে যায়, এই অপরাধ কিংবা অযোগ্যতার কারণে ভূতের সমাজ ওকে পরিত্যাগ করে। 

মন্বন্তরের বছরগুলোতে ভূতটা পা ছড়িয়ে একটা নবীন বটগাছে বসে থাকতো, শেওড়া গাছের দখল সে আগেই হারিয়েছে। পাঠশালা ফেরত বালক-বালিকাদের সঙ্গে ওটার ভাব জমে গিয়েছিল একসময়। হাটফেরত লোকদের ভয় দেখিয়ে মাছ সংগ্রহের কৌশল যেহেতু ও ভুলে গেছে, তাই, নাকি সুরে হাটফেরতদের কাছে মাছ ভিক্ষা চাইতো। কেউ ওর আবেদনে সাড়া দিত না, বিনিময়ে বাড়িয়ে দেওয়া শীর্ণ হাতে দিয়ে দিত বিড়ির অগ্রভাগে ফুটে থাকা জোনাকির মতো, অথচ নিষ্ঠুর আগুনের ছেঁকা। হু হু শব্দে কেবল কাঁদত সে। 

আমি ওটাকে দেখিনি কোনোদিন, ঐ একই বটগাছ, মন্বন্তর আর যুদ্ধ পেরিয়েও দাঁড়িয়ে ছিল, সজীব। যখন আমি ঐ একইপথ দিয়ে একই পাঠশালায় গেছি, তখন, আমি ওটাকে দেখবার জন্য দৃষ্টি দিয়েছি যৌবনবয়েসি বটগাছটার শাখায়, পাতার ফাঁকে। কোনোদিন দেখিনি। হয়তো ও আর ছিল না, কিংবা মুক্তি পেয়ে মরে গিয়েছিল। 

আমি অজস্রবার ওটাকে ভুলে থাকতে চেয়েছি। ভুলে থাকিও, তবু এমনসব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অপদার্থটা আমার মাথায় এসে জায়গা করে নেয়। আমি ওর বুড়ো কণ্ঠের নাকি কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই ।’

খালিদ মারুফের গল্প প্রবণতা কৃত্রিম প্রচেষ্টার অঙ্গীভূত নয়, বাহ্যিক আরোপণের জৌলুস মাত্রও নয়, বরং সেটি তার স্বাভাবিক তৎপরতায় বিশিষ্ট। কাহিনির যিনি কেন্দ্রীয় ভাষ্যকার, তার আস্থার অবিচলতা, রুচিবোধের প্রমিতি এবং ঘটমানতার সঙ্গে তার নির্মোহ অটলতা এক-রকম স্টোয়িক রুদ্ধশ্বাসে পাঠকমনকে আবিষ্ট করতে সক্ষম। যাত্রা-শুরুতে, তার ভাষিক তৎপরতা ক্ল্যাসিক অকাট্যতায় ছিল অকপট, কিন্তু সুখী অ্যাসপারাগাসে এসে ভাষার আনুষ্ঠানিক প্রবৃত্তি প্রশমিত হয়ে জনব্যবহারমুখী অবস্থানে স্থিত হতে দেখা যাবে। 

খালিদ মারুফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। বাংলা একাডেমিতে কর্মরত। প্রকাশিত অন্যান্য বই- ইসরাফিলের প্রস্থান ২০১৬, রেইলক্রসিং ২০১৭, বুনোকুলির রক্তবীজ ২০১৮, সাপ ও শাপ সংক্রান্ত গল্পাবলি ২০১৯।

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়