ঢাকা     শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৬ ১৪৩১

দ্রাবিড় সৈকতের ‘তান্ত্রিক দেহাত্মবাদ’

ফাগুনের মলাট ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৭, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৩:১২, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
দ্রাবিড় সৈকতের ‘তান্ত্রিক দেহাত্মবাদ’

সংবেদ প্রকাশ করেছে দ্রাবিড় সৈকতের বই ‘ফ্রয়েডিয় লিবিডো তত্ত্ব এবং তান্ত্রিক দেহাত্মবাদ : সমীক্ষণ ও তুলনামূলক বিচার’। এটি প্রাচীন জ্ঞানকাণ্ডের সঙ্গে আধুনিক জ্ঞানজগতের তুলনামূলক ধারণা সম্পর্কীত বই।

ফ্ল্যাপে লেখা হয়েছে, সিগমুণ্ড ফ্রয়েডের মনোবিশ্লেষণী তত্ত্ব আধুনিক জ্ঞানকাণ্ডের এক বিরাট বিস্ময়! পক্ষান্তরে তান্ত্রিক মতাদর্শ সম্পর্কে আধুনিক মানুষের ধারণা অতিসামান্য, যতটুকু আছে সেটি কেবলি অবজ্ঞা। অতি আশ্চর্যের বিষয় হলো ফ্রয়েড এমন কোনো নতুন কথা বলেননি যা তান্ত্রিক মতাদর্শকে ছাড়িয়ে কোনো বিশেষ মনস্তাত্ত্বিক ঘটনার উন্মোচন বলে মনে করা যায়। বঙ্গীয় জ্ঞানকাণ্ডের এই অমূল্য সম্পদের প্রতি নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে তন্ত্র ও ফ্রয়েডের এই তুলনামূলক বিশ্লেষণ।

বঙ্গীয় অঞ্চলের দুর্ভাগ্য হলো তার তার জ্ঞান, মেধা, শ্রম, পরামর্শ, প্রসাধনী, প্রযুক্তির কোনো কিছুই এখন নিজেদের নয়; যা আছে তার সবকিছুই এখন ধার করা কিংবা বহির্বিশ্বের জন্য নিবেদিত। বিশেষ করে জ্ঞানের জগতে আমরা অসহায় ভাড়াটিয়া, বনিবনা না হলেই উচ্ছেদের নোটিশ আতঙ্ক নিয়ে অত্যন্ত অনুগত জীবনযাপন। এভাবে জীবন চলে যায় কিন্তু একটি দেশ একটি জাতি ক্রমাগত অপমান অপদস্থ ও নিগ্রহের শিকার হতে থাকে। তাই আমাদের নিজেদের দিকে তাকানোর বাইরে কোনো বিকল্প নেই। এই গ্রন্থ আমাদের প্রাচীন জ্ঞানকাণ্ডের সাথে আধুনিক জ্ঞানজগতের একটি তুলনামূলক ধারণা উপস্থাপন করবে। এমনকি সাম্প্রতিক উত্তরাধুনিক মৌলিক চিন্তার সাথে এর স্পষ্ট যোগসূত্র সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তন্ত্র, তনয়, তাঁত, বঙ্গ, বাঙলা এই শব্দগুলোর সম্পর্কসূত্রে রয়েছে অনেক গভীর ইশারা। বঙ্গীয় সংস্কৃতির বহুবিভক্তি এবং অনেক বেশি অবোধগম্যতার কারণ আধুনিকতার কুপ্ররোচনায় আমরা প্রাচীন মনন-মনীষার সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে উন্মূল হয়ে গেছি। শাখা-প্রশাখার আপাত বৃদ্ধি দেখে আপ্লুত হবার কিছু নেই; কেননা তার শেকড় মাটির গভীর থেকে রস আহরণ ভুলে গেছে, দৃঢ় চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকার সামর্থ্য তার নেই; যে কোনো সামান্য ঝড়েই তার পতন অনিবার্য। ‘আত্মানং বিদ্ধি’র অভ্যন্তরে প্রবেশের যে সূত্র ‘যা আছে ভাণ্ডে তাই আছে ব্রহ্মাণ্ডে’র চাবি আমরা অতীতের অতল গহ্বরে হারিয়ে ফেলেছি। বাস্তব দৈনন্দিন জীবন-জগতের সাথে মহাবিশ্বের সম্পর্কসূত্রে উত্থিত ‘অহিংসা’কে আমরা ভেবেছি নিতান্তই ক্লিশে এক জরাজীর্ণ প্রাচীন ধারণা; যুদ্ধ-হিংসা-লোভ-ক্ষমতা ও মাৎস্যন্যায়ে শঙ্কাকীর্ণ সময়ে ওসব বাতিল প্রকরণ। অথচ বর্তমান পৃথিবীকে বাঁচাবার প্রধানতম পথই হয়ে উঠবে এই তান্ত্রিক মতাদর্শ। 

আজকের আধুনিক পৃথিবী উত্তরাধুনিকতার নামে সেই দিকেই ক্রমাগত ঝুঁকে যাচ্ছে। ফ্রয়েডের মনোবিজ্ঞান যার কাছে একটি অধ্যায় কেবল। ‘ফ্রয়েডিয় লিবিডো তত্ত্ব এবং তান্ত্রিক দেহাত্মবাদ : সমীক্ষণ ও তুলনামূলক বিচার’ এই বিষয়গুলো নিয়ে যৌক্তিক কাঠামোর একটি সূচনাকালীন পর্যবেক্ষণ এবং পাঠকের জন্য অভিনব কিছু ধারণার বিস্তার।

বইটি প্রকাশ করেছে সংবেদ।  এটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় সংবেদের ৩৫২-৩৫৩ নম্বর স্টলে।

উল্লেখ্য, দ্রাবিড় সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে এমএফএ করেছেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের শিক্ষক। লিটল ম্যাগাজিন অর্বাক-এর সম্পাদক।

/লিপি

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়