যেভাবে বিয়ে হয়েছিল মিতু ও বাবুলের
রেজাউল || রাইজিংবিডি.কম
রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু (৩২) হত্যাকাণ্ড এখন সর্বত্রই আলোচিত। ঘুরেফিরেই আসছে বাবুল আক্তারের পেশাদারত্ব, সততা, নিষ্ঠা আর জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নানা কথা। আসছে পারিবারিক জীবনের কথা। সোমবার পারিবারিক বলয়েই জানা যায় কেমন করে দুই পুলিশ পরিবার বাঁধা পড়েছিল আত্মীয়তার বন্ধনে।
বাবুল আক্তার যখন মিতুকে বিয়ে করেন তখন তিনি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন না। বাবুল আক্তার এবং মিতুর পিতা দুজনই ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। তারা দীর্ঘদিন রাঙামাটি, কাউখালীসহ কয়েকটি থানায় একই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রায় ১৫ বছর আগে একই জেলায় পুলিশে চাকরি করতেন বাবুল আক্তারের পিতা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওয়াদুদ ও মিতুর পিতা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোশাররফ হোসেন। সেই সুবাদেই সহকর্মী ওয়াদুদের ছেলে বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় মিতুর বাবার।
বাবুল আক্তারের মেধা, আচার-আচরণে মুগ্ধ হয়েছিলেন মিতুর বাবা তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ মোশাররফ। তিনি সিদ্ধান্ত নেন বড় মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুর সঙ্গে তার বিয়ে দেবেন। ঊর্ধ্বতন সহকর্মীর মনোভাব শুনে খুশি হন বাবুল আক্তারের বাবা ওয়াদুদও। এর পরই দুই পরিবারের সম্মতিতে বাবুল আক্তারের সঙ্গে মিতুর আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পরই বাবুল আক্তার বিসিএস দিয়ে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন।
মিতুর বাবা রাঙামাটির কাউখালী থানায় উপপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ওই সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পরিবারের সঙ্গেও ছিল পারিবারিক সুসম্পর্ক। কথা হয় সেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কন্যা শবনম সিনথিয়ার সঙ্গে।
শৈশবে রাঙামাটি জেলার কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বাসায় একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিতু। (নীল জামা পরিহিত)
সিনথিয়া বলেন, ‘মিতু ছিলেন চমৎকার মনের অধিকারী, আবার ধার্মিকও। প্রায় ২৬ বছর আগে থেকে মিতুর সঙ্গে পরিচয় আমাদের। কিন্তু চমৎকার মনের, গুণী, ধার্মিক নারীটি এভাবে ঘাতকদের টার্গেটে পরিণত হবে, আমরা কখনো ভাবতেই পারিনি।’
মিতুর বড় খালা মমতাজ বলেন, ‘মিতুর বাবা মোশাররফ ঝালকাঠিতে কর্মরত অবস্থায় এসআই ওয়াদুদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। ওয়াদুদের অনেক গল্প আমরা শুনেছিলাম। সেই থেকে বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। ওয়াদুদের ছেলে বাবুলকে দেখে মোশাররফের খুব পছন্দ হয়। এর পরই বড় মেয়ে মিতুর সঙ্গে বিয়ের কথা ভাবেন। সহকর্মীর সঙ্গে কথাটা শেয়ার করার পর তিনিও মত দেওয়ায় পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় বাবুল ও মিতুর।’
তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘অদৃষ্টে কী ছিল আল্লাহ ভালো জানেন, এমন মেয়েকে মানুষ মারতে পারে, ভাবা যায় না। কোনো দিন উঁচু স্বরে কথা বলত না মেয়েটা। কখনো শুনিনি জামাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদের কথা। পর্দায় থেকে নামাজ পড়ত। সেই মেয়েকে মানুষ খুন করে কেমনে?’
রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/৬ জুন ২০১৬/রেজাউল/টিপু/এএন
রাইজিংবিডি.কম