সাগরে নিখোঁজ সাবমেরিন বা বিমান কীভাবে খোঁজা হয়?
মুজাহিদ বিল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম
সমুদ্রের আয়তনের কিংবা তলের পরিধি বিস্তৃত। গভীর সমুদ্রে নিমিষেই হারিয়ে যায় বড় বড় সাবমেরিন, জাহাজ কিংবা বিমান। বর্তমানে সারা বিশ্বে আলোচনায় রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া ডুবোযান টাইটান। সেই টাইটানের কেউই আর বেঁচে নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সমুদ্রে সাবমেরিন বা কোনো নৌযান হারিয়ে গেলে বেশ কয়েকটি উপায় অবলম্বন করে এসবের অনুসন্ধান করা হয়। নৌযান বা উড়োজাহাজ নিখোঁজ হলে প্রথমে সেটি নিখোঁজ হওয়ার স্থান খুঁজে বের করে উদ্ধারকারী দল। রাডার থেকে যেখানে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় সে স্থানকেই প্রথমত নিখোঁজ হওয়ার স্থান বলে ধরে নেয়। এর আশেপাশে এবং গভীর একটি এলাকা মার্ক করে সেই অংশে অভিযান চালানো হয়।
অনুসন্ধানের সময় পানির উপরিভাগেও নজর রাখা হয়। অনেক সময়ে হারিয়ে যাওয়া নৌযান বা উড়োজাহাজের কোনো যন্ত্র নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে সেই অংশ সমুদ্রে ভেসে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। এইজন্য আকাশ থেকে হেলিকপ্টারে করে বিশেষ নজর রাখা হয়।
বিশেষত সমুদ্রে ডুবে যাওয়া নৌযান বা উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে তিনটি সম্ভাব্য অবস্থান যাচাই করা হয়। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে এটি সমুদ্রপৃষ্ঠে ভেসে উঠতে পারে। আবার স্রোতের কারণে সমুদ্রের মাঝামাঝি যে কোনো জায়গায় থাকতে পারে। দুইটি ক্ষেত্রেই পানির ওপর নজর রাখা হয়। অনেক সময় সমুদ্রের তলদেশে অনুসন্ধানের সময় জটিলতা সৃষ্টি হয়। সাগরতলে প্রতিনিয়ত শব্দ সৃষ্টি করা হয় এবং শোনার যন্ত্র ব্যবহার করে দেখা হয় সমুদ্রের নিচে কোথাও নিখোঁজ বস্তু রয়েছে কিনা। শব্দের প্রতিধ্বনি শোনা গেলে সেখানেই বস্তুটির অবস্থান রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
বর্তমানে নিখোঁজ হওয়া টাইটানের ক্ষেত্রেও এই ধরনের উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড সহ একাধিক দল। সমুদ্রের অতলে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার অভিযান শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ছোট সাবমেরিনটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে নিখোঁজ হয়।
জানা যায়, টাইটানিক দেখতে যাওয়ার ওই যাত্রা ছিল আট দিনের। প্রতি টিকিটের দাম ছিল ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার বেশি। কানাডার নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জন’স থেকে টাইটান সাবমেরিনটি যাত্রা শুরু করে। সেখান থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
দীর্ঘ উদ্ধার অভিযান শেষে গতকাল খোঁজ মেলে সাবমেরিনটির। আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের পাশেই নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়া গেছে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের স্বীকার হয়েছিল সাবমেরিনটি। যাত্রীদের কেউই আর বেঁচে নেই।
/ফিরোজ/