মানুষের বাড়িতে ঘুমালো বাঘ
একদিন রাতে যদি দেখতে পান বাড়ির পাঁচিলে বাঘ ঘুমাচ্ছে, তখন পরিস্থিতি কী হতে পারে! হয়তো মনে হতে পারে এটা সম্ভব না। কিন্তু ঘটনাটি সত্যিই ঘটেছে।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের পিলিভিটের বাসিন্দা জসবিন্দর সিং পেশায় দুধের ব্যবসায়ী। পিলিভিট ‘ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র’ থেকে আনুমানিক ১২ কিলোমিটার দূরের গ্রামে বসবাস করেন। তাই আসা যাওয়ার পথে দূর থেকে বাঘের দেখা মেলাটা তার কাছে খুব একটা আশ্চর্যের বিষয় নয়। কিন্তু বাস্তবে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। সেটা হলো, বাঘ নিজে এসে তার বাড়ির পাঁচিলে শুয়ে ছিল।
২৫ ডিসেম্বর রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। রাত সাড়ে ১২ বা ১টা হবে। ঘুমাচ্ছিলেন জসবিন্দর সিং। হঠাৎ একটি আওয়াজ শুনে বাড়ির পাঁচিলের কাছে এসে দেখেন বাঘ। অবশ্য পরে জেনেছেন সেটা বাঘিনী।
প্রায় ১২ ঘণ্টা ওই গ্রামেই ছিল বাঘিনীটি। আটকোনা গ্রামে আসা এই অতিথিকে দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় পিলিভিটের সেই ছবি। জনতার উৎসাহ ছিল ঘুমন্ত বাঘিনীকে ঘিরে।
বড়দিনের ঠিক আগের রাতে সান্তা ক্লজের পরিবর্তে বাঘকে একেবারেই আশা করেননি জসবিন্দর সিং।
রাতটা দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে তাদের। জসবিন্দর সিং বুঝতে পারছিলেন না কি করবেন। এদিকে বাড়িতে বয়স্ক মা, বাবা তাদের নিয়ে ভয়ে ছিলেন। বাঘ তাড়ানোর মতো কিছু না পেয়ে হাতের কাছে যা ছিল সেটা প্রথমে ছুঁড়ে মারতে শুরু করেন।
বাড়ির সামনে আগুন জ্বালানো হয়। লাঠি হাতে নিয়ে গ্রামের লোকজন রাত জেগে বাঘিনীকে পাহাড়া দেন। এরপর পুলিশ আসে।
ভয়কে জয় করে কেউ কেউ বাঘিনীকে ঘুমোতে দেখে মজাই পেয়েছেন। কে-ই বা চিড়িয়াখানা ছাড়া এইভাবে বাঘকে শান্ত হয়ে ঘুমোতে দেখেছে।
প্রায় ৫-৬ ঘণ্টার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত বাঘিনীকে বন্দি করা হয়। জাল দিয়ে ঘিরে, খাঁচায় নিয়ে আসা হয়। বন দপ্তরের কর্মী ছাড়াও পশু চিকিৎসকরাও উপস্থিত থেকে বন্দি করেন বাঘিনীকে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
/স্বরলিপি/