ঢাকা     মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

নাগিন ড্যান্স কীভাবে এলো ক্রিকেটে?

হৃদয় তালুকদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ৩০ জুন ২০২৪   আপডেট: ১৫:৫৭, ৩০ জুন ২০২৪
নাগিন ড্যান্স কীভাবে এলো ক্রিকেটে?

ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ক্রিকেট এক উন্মাদনার নাম। দেশে-দেশে, জাতিতে-জাতিতে সম্প্রীতি কিংবা বিরোধ তৈরি করতে পারে ক্রিকেট। প্রতিপক্ষকে হারাতে মরিয়া থাকে প্রতিটি দলই। জয় পেলে ক্রিকেটাররা মেতে ওঠেন নানা ধরনের উদযাপন বা সেলিব্রেশনে। এসব সেলিব্রেশনের মধ্যে সবারই পরিচিত নাগিন ড্যান্স। 

নাগিন ড্যান্স নিয়ে সবচেয়ে বেশি উত্তোজনা দেখা যায় বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার খেলায়। খেলোয়াড়, দর্শক, কোচিং স্টাফ সবাইকেই দেখা গিয়েছে নাগিন ড্যান্সের মাধ্যমে জয় উদযাপন করতে। আশির দশক থেকে শুরু করে নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে সাপ নির্ভর ছবিতে নাগিন ড্যান্স দেখা যেত। কিন্তু ক্রিকেটে এই ড্যান্সের জন্ম বাংলাদেশেই।

শুরুটা ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) খেলা থেকে। সেই আসরে রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ড্যারেন স্যামি। রাজশাহী কিংসে তার অধীনে খেলেছিলেন নাজমুল ইসলাম অপু। সে সময় স্যামি অপুকে বলেছিলেন স্নেক (সাপ)। এরপর থেকেই শুরু।

অপু উইকেট পেলেই দুই হাত উঁচু করে সাপের মতো ফনা তুলে শুরু করতেন নাগিন ড্যান্স। সেই থেকে নাজমুল ইসলাম অপুকেই নাগিন ড্যান্সের জনক হিসেবে ধরে নেওয়া যায়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পায় নাজমুল ইসলাম অপু। জাতীয় দলে উইকেট পাওয়ার পর অপুর এই ধরনের সেলিব্রেশন ছড়িয়ে যায় গোটা ক্রিকেট বিশ্বে। 

২০১৮ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয় নিদাহাস ট্রফি। সেই ট্রফিতে অংশ নেয় ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। গ্রুপ পর্যায়ে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টাইগারদের ২১৪ রানের টার্গেট দেয় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভালো সূচনা এনে দেয় তামিম-লিটন। তামিম ২৯ বলে ৪৭ রান করেছিলেন, লিটন করেছিলেন ১৯ বলে ৪৩ রান। সেই ম্যাচে জয় পেতে গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন মুশফিকুর রহিম। ৫ চার এবং ৪ ছয়ে ৩৫ বলে করেন ৭২ রান।

সেই ম্যাচ জয় পাওয়ার পর  মুশফিকুর রহিমও নাগিন ড্যান্সে উদযাপন করেছিলেন। ওই ম্যাচে ম্যান অফ দা ম্যাচ হয়েছিলেন মুশফিকুর। তার নাগিন ড্যান্স ছড়িয়ে পড়েছিলো গ্যালারি থেকে ড্রেসিংরুমে। বাংলাদেশের প্রায় সব ক্রিকেটার মেতেছিলেন নাগিন ড্যান্সে। অনেক ক্রিকেটার এটাকে মজা হিসেবে নিলেও কেউ কেউ করেছিলেন সমালোচনা।

নিহাদাস ট্রফির পরের ম্যাচেও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে যায় বাংলাদেশ। ফাইনালে বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হয় এবং জয় পায় ভারত। সেদিন শ্রীলঙ্কার সব দর্শকর ভারতের জয় উদযাপন করেছিলো  নাগিন ড্যান্স করে। এক সময়কার বাংলা সিনেমার নাগিন ড্যান্সকে ক্রিকেটে এনেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাজমুল ইসলাম অপু। তিনি জাতীয় ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৫ ওয়ানডেতে ৪৪.৮০ গড়ে রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ম্যাচে ৩৩.১২ গড়ে রান দিয়ে নিয়েছেন ৮ উইকেট।

/লিপি/বিজয়

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়