ঢাকা     শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৮ ১৪৩১

ঈদের দিনে করণীয়

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২২ এপ্রিল ২০২৩  
ঈদের দিনে করণীয়

ঈদ অর্থ আনন্দ। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে পুরস্কার হিসেবে এ আনন্দের দিনটি দিয়েছেন। বান্দা একটি মাস সিয়াম সাধনা করেছে, রাতে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে তারাবির নামাজ পড়েছে, কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ আদায় করেছে, শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে গিয়ে ইবাদত করেছে। শুধু তা-ই নয়, সারাটি মাস বান্দা কালামুল্লাহ শরিফ তিলাওয়াত করেছে, গুনাহমুক্ত জীবনযাপনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে এবং গুনাহ মাফ করানোর জন্য অঝোরে কেঁদেছে। বলতে গেলে সারাটা মাসই সে নিরস কাটিয়েছে। বান্দার মনে কেবল একটাই ব্যথা, একটাই আকুতি- আমার গুনাহ ক্ষমা করাতে পারলাম কিনা?

এতো সব ইবাদাত, চেষ্টা, মুজাহাদার পর আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন এ দিনটিতে। এ সু-সংবাদের ফলে সে স্বস্তি ফিরে পাবে। শরিয়তের গণ্ডির মধ্যে থেকে আনন্দ করবে। এটাই হলো ঈদ। প্রকৃত পক্ষে ঈদ হলো এ সকব নেককার, আল্লাহর প্রিয় মানুষদের জন্য। 

হযরত সাঈদ বিন আউস আল-আনসারী (রা.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন ঈদুল ফিতরের দিনটি আসে অর্থাৎ ঈদুল ফিতরে ফেরেশতারা বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে যান। আহবান করতে থাকে আর বলতে থাকে হে মুসলিম জাতি! তোমরা সকাল সকাল তোমাদের রবের দিকে বের হও (ঈদের জামাতের জন্য)। তিনি তোমাদেরকে উত্তম প্রতিদান দেবেন। অতপরঃ তাদেরকে ঢের পুরুস্কার প্রদান করা হয়। তারা বলতে থাকে তোমাদেরকে তারাবি ও কিয়ামুল লাইল পড়ার কথা বলা হয়েছে। তোমরা তা পড়েছ। রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, তোমরা তা আদায় করেছে। আজ তোমাদের রব তোমাদেরকে আপ্যায়ন করিয়েছেন (রোজা না রাখার অনুমতি দিয়েছেন)। তোমরা তোমাদের প্রতিদান গ্রহণ কর। ঈদের নামাজ যখন আদায় করা হয়ে যায়, তখন ফেরেশতারা ঘোষণা করতে থাকে: নিশ্চয়ই তোমাদের রব তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তোমরা তোমাদের বাড়ি-ঘরে হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে যাও। এটা তোমাদের (প্রাথমিক) প্রতিদান দিবস। আজকের দিনকে সপ্ত আকাশেও প্রতিদান দিবস বলে।’ (মুজামুল কুবরা, তাবরানি) 

আরো পড়ুন:

হযরত আনাস (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) যখন মদিনায় আসলেন; দেখলেন মদিনাবাসী নির্দিষ্ট দুই দিনে আনন্দ করে। নবী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি কোন দিবস? তারা বললো, আমরা জাহেলি যুগে এ দিবস দুটিতে খেলাধুলা ও আনন্দ ফুর্তি করতাম। অতপরঃ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের সেই দিবস দুটিকে আরো উত্তম দুটি দিবসের মাধ্যমে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। তা হলো; ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর।’ (আবু দাউদ)

ঈদুল ফিতরে আমাদের করণীয়:

১.    ঈদের দিন ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা।
২.    উত্তমরূপে গোসল করে উত্তম কাপড় পরিধান করা।
৩.    সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৪.    ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে কিছু মিষ্টান্ন খাওয়া। নবী (সা.) এমনটা করতেন।
৫.    ঈদের নামাজে যাওয়ার আগেই সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা।
৬.    ঈদের নামাযে এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ঘরে ফেরা।
৭.    ঈদুল ফিতরের জামাতে যাওয়ার সময় তাকবির মনে মনে বলা।
৮.    ঈদের নামাজের আগে-পরে আত্মীয় -জনের খোঁজ খবর নেওয়া। তাদের সঙ্গে দেখা করা।
৯.    অসহায় গরীবদের খোঁজ-খবর নেওয়া এবং সাধ্য মোতাবেক তাদের পাশে দাঁড়ানো।

এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই ঈদ আমাদের জীবনে হয়ে উঠুক আনন্দময় ও সুখকর। আমিন

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়