ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

মৌমাছিদের ক্লাসরুম, যেখানে দেওয়া হয় সামরিক প্রশিক্ষণ

মুজাহিদ বিল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০০, ২৩ জুলাই ২০২৩   আপডেট: ০৯:১৮, ২৩ জুলাই ২০২৩
মৌমাছিদের ক্লাসরুম, যেখানে দেওয়া হয় সামরিক প্রশিক্ষণ

মৌমাছি সাধারণের কাছে এক আতঙ্কের নাম। কামড়ে দিলেই শুরু হয় যন্ত্রণা। পুলিশ কিংবা অবৈধ তল্লাশির নানান কাজে কুকুর কিংবা অন্য প্রাণীর কথা শোনা গেলেও মৌমাছিদের কথা শোনা যায়নি কখনো। তবে বিশেষ সামরিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৌমাছিকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া হবে বিশেষ এক ধরনের কাজ। যেই বিশেষ কাজ করা সম্ভব নয় কোনো  মানুষের পক্ষে। কোনো যন্ত্রও পারবে না এমন নিঁখুতভাবে কাজ করতে।

অবৈধ জিনিস, কিংবা মাটির নিচে লুকানো কোনো সাবমেরিন বা বোমা খোঁজার কাজটি কুকুরের চেয়েও বেশ ভালো পারে মৌমাছি।

ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা। নানা সময়ে সংগঠিত বিভিন্ন যুদ্ধের ফলে সেখানে মাটির নিচে এখনো রয়েছে বিভিন্ন বোমা ও মাইন যেসব এখনো রয়েছে সুপ্ত অবস্থায়। সেসব বোমা মানুষের পক্ষে খুঁজে বের করা যেমন সময় সাপেক্ষ তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ। এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি খুব সহজেই করে ফেলতে পারে মৌমাছি।

বিজ্ঞানীরা মৌমাছিকে স্ক্যানার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য গবেষণা চালাচ্ছেন। একটি ভ্যাকুয়াম মেশিনের সাহায্যে প্রথমে সংগ্রহ করা হয় মৌমাছি এরপর এদের নেওয়া হয় ল্যাবে। এই উড়নচণ্ডী প্রাণীটিকে ফ্রিজে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রেখে শান্ত করা হয়। যখন মৌমাছিগুলো শান্ত হয়ে যায় অর্থাৎ আর উড়াউড়ি করে কাউকে কামড়ায় না তখন প্রত্যেকটি মৌমাছিকে একটি হারনেসের ভেতর ডুকানো হয় এবং মুখমণ্ডল ও মাথা রাখা হয় বাইরের দিকে।

এরপর ৩০ মিনিট এভাবে রাখার পর শুরু হয় ট্রেনিং। মৌমাছির প্রাণশক্তি অত্যন্ত প্রবল। মৌমাছি যা খাবার হিসেবে গ্রহণ করে সেই খাবারের গন্ধ ও স্বাদের প্রতি অল্প সময়েই অভ্যস্ত হয়ে যায়। হারনেসগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর ঘুরতে থাকে এবং কটন বার্ডের মতো একটি বিশেষ বস্তুর মাধ্যমে করে মৌমাছির সামনে চলে আসে নির্দিষ্ট খাবার। ট্রেনিংয়ে মৌমাছিকে খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। এক ধরনের মিষ্টি খাবারে মেশানো থাকে নারকোটিকস এবং বিস্ফোরক ও বোমার গুড়ো।

খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মৌমাছিগুলো এই গন্ধে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মও এই গন্ধে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। এরপর ট্রেনিং শেষে এদের জঙ্গল বা জনশূন্য জায়গায় তাদের ব্যবহার করা হয়। মৌমাছির সাথে থাকা সেন্সর সর্বত্র বার্তা পাঠায় বিজ্ঞানীদের। কখনো কোন বোম বা রাসায়নিক বিস্ফোরক পেলে সাথে সাথেই সেখানে পৌঁছে যায় বিজ্ঞানীরা। এ আই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখানে বেশ ভালো ফলাফল পাচ্ছে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার বিজ্ঞানীরা।
 

/এসবি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়