ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

আজ কাউকে চিঠি লিখুন

মুজাহিদ বিল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৩:২২, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
আজ কাউকে চিঠি লিখুন

চিঠি! এ বিষয়টির সঙ্গে যেন জড়িয়ে আছে নানা স্মৃতি, নানা আবেগ। একসময় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল চিঠি। মোবাইল ফোন ও ই-মেইলের যুগ আসার আগে চিঠির কদর ছিল সর্বত্র। চিঠি লেখার আবেগ বর্তমানের ম্যাসেঞ্জারের টেক্সট কিংবা মেইলে পাওয়া যায় না। আগে একেকটি চিঠি যেন হয়ে উঠত একেকজনের জীবনে প্রাণের সঞ্চার। আজকাল দাপ্তরিক কাজ ছাড়া চিঠির ব্যবহার নেই বললেই চলে। খুব কম মানুষই এখন তার প্রিয় মানুষকে নিয়ে চিঠি লিখেন।

শুধু প্রেম নয়, সব ধরনের যোগাযোগ হতো চিঠির মাধ্যমে। কোনো এক বেকারের চাকরির খবর, বিদেশে থাকা ছেলের মায়ের কাছে চিঠি কিংবা দেশ হতে বিদেশে ছেলের জন্য মায়ের লেখা চিঠি। কোনো এক মৃত্যুর চিঠি আবার সারা পরিবারে বয়ে আনত স্থবিরতা। শুধু দূরে কিংবা অদেখা মানুষকেই মানুষ চিঠি লিখত না, যার সাথে প্রায়ই দেখা হয় কিংবা প্রতিদিন দেখা করা প্রেমিক প্রেমিকাও একে অপরকে চিঠি লিখত। কারণ, চিঠিতে যত সুন্দর ভাষায় মনের অনুভূতি গুছিয়ে প্রকাশ করা যায়, মুখে ততটা বলা হয়ে ওঠে না৷ শুভেচ্ছা বার্তা, খোঁজ-খবর নেওয়া, টাকা পাঠানো, চাকরির যোগদানপত্র সবই এক সময় আসত চিঠির মাধ্যমে। আগের মতো আর বাড়িগুলোর গেটে দেখা মেলে না চিঠির বাক্সের। প্রেয়সীর কাছে সুগন্ধী মেখে চিঠি লিখত প্রেমিক, এমন কথা অনেকেই হয়ত শুনেছেন। এসব বানোয়াট কোনো গল্প নয়, একেবারেই সত্যি।

মহাদেব সাহার কবিতার মতো করে কত প্রেমিকই তো তার প্রিয়তমার কাছে চিঠি চাইতেন।
‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও
আঙ্গুলের মিহিন সেলাই
ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।’

বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন যোগাযোগর অন্যতম ভরসা মোবাইল ফোন। ফেসবুক, টুইটার, মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে চিঠি হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেখানে মুহূর্তেই মনের কথা জানানো যাচ্ছে, তখন কে-বা আর চিঠির ব্যবহার করবে বলুন।

তবে, আজ চিঠি লিখতে পারেন। আজ ১ সেপ্টেম্বর, আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস। আজ লাল নীল পাতায় বাহারী রঙে মনের না বলা কথা জানিয়ে রঙিন খামে চিঠি লিখতে পারেন। যার শুরুতে স্নেহময় এবং শেষে থাকবে ইতি তোমারই। শুধু প্রেয়সী কিংবা প্রিয়তম একে অপরকে নয়; বাবাকে যে আপনি ভালোবাসেন, সে কথা হয়ত মুখে কখনো বলতেই পারেননি, চিঠিতে বাবাকে জানাতে পারেন সে কথা। মাকেও চিঠি লিখতে পারেন আজ। পুরনো কোনো এক বন্ধু, যে আপনার ছেলেবেলা জুড়ে আছে, এখন হয়তো যার সাথে বেশি যোগাযোগ নেই, তাকেও চিঠি লিখতে পারেন। সংসার জীবনের অনেকদিন পার করে যাদের ভেতরে খুব এখন আর রোমান্টিকতা নেই, তারাও আজ একে অপরকে মমতায় ভরা চিঠি লিখতে পারেন। তবে, আর দেরি নয়, প্রিয়জনকে জানিয়ে দিন মনের কথা। 

ঢাকা/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়