এই ভবন থেকে চলে বিশ্ব নজরদারি!
২৯ তলা ভবন। অথচ একটি জানালাও নেই। ভেতরে নাকি ঘুটঘুটে অন্ধকার। কেবল মাত্র একটি ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা আছে। ভবনের সামনে রয়েছে একটি দরজা। মনে করা হয়, আমেরিকার সামরিক বাহিনীর গুপ্ত ডেরা ওই ভবন।
ভবনটির নাম ‘লং লাইনস বিল্ডিং’। এটি আমেরিকার ম্যানহাটনে অবস্থিত। নিউ ইয়র্ক শহরের লোয়ার ম্যানহাটনের ট্রিবেকা অঞ্চলে টমাস স্ট্রিট এবং ওয়ার্থ স্ট্রিটের মধ্যবর্তী চার্চ স্ট্রিটের পূর্ব দিকে হওয়ায় এর আরেক নাম ৩৩ টমাস স্ট্রিট।
২৯ তলার এই বহুতলটির উচ্চতা প্রায় ১৭০ মিটার। এটি নির্মাণ করা হয় ১৯৭৪ সালে। জন কার্ল ওয়ারনেক নামে এক স্থপতি পঞ্চাশের দশকে ব্রিটেনে যে ধাঁচের আবাসন তৈরি হত সে ধাঁচেই তৈরি করেন লং লাইনস বিল্ডিং।
এই ভবনে টেলিফোন এক্সচেঞ্জের দপ্তর ছাড়াও আছে তিনটি ৪ইএসএস (ইলেকট্রনিক সুইচিং সিস্টেম)। আরও আছে ইন্টারএক্সচেঞ্জ এবং লোকাল এক্সচেঞ্জ কেরিয়ার ব্যবস্থা। জানলাহীন এই ভবনে বাতাস চলাচলের জন্য ২৯ তলায় ‘ভেন্টিলেশন’ সিস্টেম রয়েছে।
বলা হয়, এই ভবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে সঞ্চয় রাখা হয়।
১৯৯১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় সমগ্র উত্তরপূর্ব আমেরিকা জুড়ে ৫০ লক্ষ কল ব্লক হয়ে যায়।
ত্রুটির ফলে ফেডেরাল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর পক্ষে ব্যক্তিগত লাইনেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
সে সময় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিগন্যাল পৌঁছায়নি বলে উত্তরপূর্ব আমেরিকার ৩৯৮টি বিমানবন্দরেও সমস্যা হয়েছিল। পরে অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এই ভবনের প্রতিটি তলার গড় উচ্চতা সাড়ে পাঁচ মিটার। প্রতি বর্গমিটারে প্রায় ৯০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার ওজন বহন করতে পারে ।
লং লাইনস বিল্ডিংয়ের এক কর্মী এই বহুতলের নিয়মকানুন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। ‘দ্য ডেইলি মেল’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই কর্মী জানিয়েছিলেন, বহুতলের ভেতরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রচুর কড়াকড়ি রয়েছে। এমন অনেক ঘর রয়েছে যেগুলোতে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ঘরগুলোর ভেতরে যে কী রয়েছে সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই।
এমনকি লং লাইনস বিল্ডিংয়ের যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানোও যেত না বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘আমাদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হত যে বহুতলের কোন কোন ঘরে আমরা প্রবেশ করতে পারব না।’’
অ্যারিয়েল ভিয়েরা নামে এক স্থানীয় ইউটিউবার দাবি করেন, লং লাইনস বিল্ডিং আদতে সামরিক বাহিনীর আস্তানা। এখান থেকে অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
২৯ তলার ভেতরে লোকজনের যাতায়াত খুব কম বলেও দাবি করেন অ্যারিয়েল। রাত হলেই বহুতলের ভেতর ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যায় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যদিও এই মন্তব্য শতভাগ সত্য বলে মেনে নেওয়ার উপায় নেই। জানালাহীন এই রহস্যময় ভবনে কি হয়, তা সবার অজানা।
/স্বরলিপি/