ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

দানের হাতকে প্রসারিত করুন

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২৪ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ০৯:৩৮, ২৪ মার্চ ২০২৪
দানের হাতকে প্রসারিত করুন

রমজান মাসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষভাবে একটি আমলের প্রতি বেশি উৎসাহিত করেছেন। সেই আমলটি তিনি নিজেও বেশি করেছেন। তিনি এই মাসে মানুষকে দুই হাত ভরে দান করতেন।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন দানের বেলায় উপমাহীন। তিনি মানুষকে দান করতেন দরিদ্রতার ভয় না করে। এক দিন একজন অসহায়কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম মাঠভর্তি ছাগল দান করেছিলেন। এত বড় দান পেয়ে লোকটি নিজ গোত্রের কাছে ফিরে বলেছিলেন, তোমরা মোহাম্মদের দ্বীনের ওপর ঈমান আনো। তিনি এমনভাবে দান করেন, যেন দরিদ্রতাকে ভয় পান না। (সহি মুসলিম: ২৩১২)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু নবীজীর দানের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল। তিনি রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি দান করতেন।’ (সহি বুখারি)

আরো পড়ুন:

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধন-সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সবার চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমজানে জিবরাইল (আ.) যখন তার সঙ্গে দেখা করতেন, তখন তিনি আরও অধিক দান করতেন। রমজানের প্রতি রাতেই জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে একবার সাক্ষাৎ করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কুরআন শোনাতেন। জিবরাইল (আ.) যখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি প্রবাহিত বাতাসের মতো দান–খয়রাত করতেন।’ (সহি বুখারি)

দানের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শত শত হাদিস রয়েছে। তিনি মানুষের চেয়ে সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। রমজান এলে তার দানের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি হতো।

ইবনে রজব হাম্বালি (র.) রমজান মাসে দানের অনেক ফায়দা লিখেছেন। তিনি লেখেন,‘রোজা রাখতে গিয়ে আমাদের কোন ত্রুটি বিচ্যুতি হলে দান-সদকা সেসব ত্রুটি বিচ্যুতির ক্ষতিকে পূরণ করে। এজন্যই রোজার শেষে ফিতরা ওয়াজিব করা হয়েছে রোজাদারকে অহেতুক অশ্লীল কাজের গুনাহ থেকে মুক্ত করার জন্য। (লা.মায়ারীফ,পৃ.২৩২)

অনেক মানুষই অর্থের অভাবে সাহারি-ইফতারে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না। মুসলিম হিসাবে এসব রোজাদার ব্যক্তিকে সহায়তা করা যেমন আবশ্যিক দায়িত্ব, আবার এটি অনেক বেশি পূণ্যেরও কাজ। আমাদের সমাজে অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে অন্যের কাছে চাইতে পারে না। আমাদের উচিত এসব ব্যক্তিদের কাছে সম্মানের সঙ্গে দান পৌঁছে দেওয়া। এর পাশপাশি দান পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি হকদার আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী। তাই রহমত-বরকতের এই মাসে আত্মীয়-স্বজনের খোঁজখবর নিন, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমিন।

/শাহেদ/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়