ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

সুন্দরবনে উদযাপিত হলো ‘বর্ষা উৎসব’

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২০, ২২ জুন ২০২৪  
সুন্দরবনে উদযাপিত হলো ‘বর্ষা উৎসব’

“এমনও দিনে তারে বলা যায় এমনও ঘনঘোর বরিষায়” জলবতী মেঘের বাতাস নিয়ে বর্ষা এলো বাংলার সজল প্রকৃতিতে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বর্ষা ঋতুর বন্দনা করে লিখেছেন, ‘এসো শ্যামল সুন্দর, আনো তব তাপহরা তৃষাহরা সঙ্গসুধা। বিরহিণী চাহিয়া আছে আকাশে।’ 

সুন্দরবনে এই প্রথম এক অভিনব অনুষ্ঠান "বর্ষা উৎসব" আয়োজন করেছে পিয়ালি ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার। শুক্রবার (২১ জুন) সেই বিরহিণী আকাশকে ও সুন্দরবনের বন, নদী, মানুষকে কবিতায় মুগ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র নারী কবিগণ ও সাথে ছিলেন সুন্দরবনের ঐতিহ্য বনবিবির পটের গান, লোকসঙ্গীত, নাচ, বাঘের উপর জারি গান। 

উৎসবে ঢাকা থেকে আসা কবি দিলারা হাফিজ, জুনান নিশাত, আইরিন জামান, সাবেরা তাবাসসুম, শাকিরা পারভীন সুমা ও কবি আঁখি সিদ্দিকা তাদের স্বরচিত বর্ষার কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে বর্ষাকে আহ্বান জানান। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন বুড়ির ডাবুর এলাকার পটের গানের ‘বনফুল’ দলের সদস্য কৃষ্ণা সরকার, মিলি সরকার, প্রিয়া সরকার, সুচিত্রা সরকার, রিপু মণ্ডল, সঙ্গীতা ঢালী, নিত্যানন্দ রায়, তারক মণ্ডল ও অমর সুন্দরবনের ওপর পটের গান, বনবিবির গীত, বাঘের ওপর জারিগান ও সুন্দরবনের বৃক্ষ, বর্ষা বন্দনাসহ নৃত্য পরিবেশন করেন। 

এ সময় কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠ ও পটের গানে তুলে ধরা হয় আবহমান বাংলার ও সুন্দরবনের লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য! 

এদিকে এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষা বন্দনা করার যে আয়োজন হলো- তা তরুণদের, শহরের মানুষ ও গ্রামের মানুষের মেলবন্ধনসহ প্রকৃতিপ্রেমকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা তাদের। এই আয়োজনে নারীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, বর্ষা ঋতুকে স্বাগত জানানোর জন্য। কারণ প্রকৃতি ও নারী যেন একাত্ম ও পরিপূরক। 

অনুষ্ঠান শেষে বর্ষার সেই চিরচেনা খাবার চাল ভাজা, ছোলা ভাজা, কাঁঠালের বিচি ভাজার সাথে ছিলো বর্ষার ফল কাঁঠাল, আম, কাউফল। পুরো আয়োজনে বর্ষার কদমফুলের উপস্থিতি দেখা যায়। শিশুদের ও অতিথিদের কদম ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। 

পিয়ালি ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড কালচারাল সেন্টারের চেয়ারম্যান আঁখি সিদ্দিকা বলেন, পিয়ালি ইকো রিসোর্ট কেবল একটি রিসোর্ট নয়, একটি স্বপ্ন, সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রও। পিয়ালি বিশ্বাস করে বাংলার লোকজ সংস্কৃতি চর্চার এই উৎসব, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের উৎসব। অসাম্প্রদায়িক এই সব আয়োজনের মধ্য দিয়েই মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়বে। তরুণ প্রজন্মকে বাংলার ষড়ঋতু চেনানো, ঋতুভিত্তিক ফুল, ফল, জলবায়ুর পরিবর্তনে প্রভাব জানতে এই উৎসবকে খুবই গুরুত্ব রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাগ্রত রাখতে হলে এই সকল চর্চার বিকল্প নেই। 

এ সময় তিনি সবাইকে এই বর্ষায় অন্তত একটি করে গাছ লাগানোর অনুরোধ জানান।

‘বর্ষা উৎসব’ সঞ্চালনা করেন কবি আঁখি সিদ্দিকা।

/ইমন/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়