বড়লোক খাদ্যের অপচয় কমালে গরীবের কী লাভ?
সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: প্রতীকী
যেকোন অনুষ্ঠানে খাবার টেবিলের দিকে তাকালে মনে হয় মানুষ খাদ্য নষ্টের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসেছেন। এ যেন তাদের অধিকার। অথচ পৃথিবীতে এখনও ১০০ জনের মধ্যে ১৩ জন মানুষ ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যায়। আপনি জানেন? বিশ্বে প্রতিদিন উৎপাদিত খাদ্যের তিন ভাগের এক ভাগ নষ্ট বা অপচয় হয়ে যাচ্ছে।
খাদ্যের দাম বাড়ার ওপর যার সরাসরি প্রভাব আছে। দাম বৃদ্ধির কারণে প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে পারেন না নিম্ন আয়ের মানুষ। পৃথিবীতে উৎপাদিত খাদ্যের তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষ খায়। অথচ সারাবিশ্বে কোটি কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে। একদিকে নষ্ট হওয়া খাবার অন্যদিকে ক্ষুধার্ত মানুষ— এই হচ্ছে পৃথিবীর প্রকৃত দৃশ্য।
অথচ জাতিসংঘ বলছে, মানুষ যে পরিমাণ খাবার নষ্ট করে তার অর্ধেকও যদি নষ্ট করে সেই খাবারে ১৫ কোটি ৩০ লাখ ক্ষুধার্ত মানুষ পেট ভরে খেতে পারতো। তার অর্থ দাঁড়ায় যে পরিমাণ খাবার নষ্ট হয় সেই পরিমাণ খাবার বাংলাদেশের মতো একটি দেশের মানুষ খাওয়ার পরেও বেঁচে যাবে।
খাদ্যের অপচয় পরিবেশেরও ক্ষতি করছে। এর ফলে পরিবেশে যুক্ত হচ্ছে বাড়তি কার্বণ। খাদ্যের অপচয় কমানো গেলে পৃথিবীতে খাদ্যের দাম অনেক কমে আসবে। ফরে নিম্ন আয়ের মানুষ আরও ভালো খেতে পারবে। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে খাদ্য খাওয়ার পরিমাণ অন্তত আরও ১০ শতাংশ বাড়বে এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত দেশে ৬ শতাংশ বাড়বে। উচ্চ মধ্যবিত্ত দেশগুলোতে খাদ্য খাওয়ার পরিমাণ বাড়বে ৪ শতাংশ।
আপনি খাদ্য অপচয় বন্ধ করে দিলে সেই লক্ষ্য আরেকটু এগিয়ে যেতে পারে।
অনেকে বলতে পারেন— ‘যে খাবার পায় না আমি খাবার নষ্ট না করলেও সে পাবে না।’ এই কথা ভুল। তার কারণ হচ্ছে আপনি বা আপনার মতো অন্যরাও যখন খাবার নষ্ট করবেন না তখন বাজারে খাদ্যপণ্যের চাহিদা কমবে। এর দামও কমবে। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে।
যিনি পরিমিত খান তিনি আসলে বিশ্ব বাজারে খাদ্য পণ্যের ভারসাম্য রাক্ষায় অবদান রেখে চলেছেন।