ঢাকা     শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৮ ১৪৩১

জেন-জি প্রজন্ম কারা? 

হৃদয় তালুকদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ৯ আগস্ট ২০২৪  
জেন-জি প্রজন্ম কারা? 

জেন জি। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জেন-জি’ শব্দটি খুব বেশি ব্যবহার হচ্ছে। ‘জেন জি’ এর পূর্ণ রূপ হলো জেনারেশন জেড’ (Generation z)। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বেড়ে ওঠা তরুণ প্রজন্মকে জেন-জি বলা হয়ে থাকে। জেনারেশন জেডকে Gen z, iGeneration, Gen Tech, Gen Wii, Homeland Generation, Net Gen, Digital Natives, Plurals এবং Zoomers নামেও ডাকা হয়।

ব্রিটানিকার তথ্য, ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে এবং ২০০০-এর দশকের প্রথম দিকে জন্ম নেওয়া প্রজন্মকে ‘জেনারেশন জেড’ বলা হয়। মূলত, ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করা প্রজন্মই জেন-জি। আমেরিকার নানা প্রজন্মকে জি টার্ম ব্যবহার করে বুঝানো হয়ে থাকে বর্তমানে যা ছড়িয়ে পড়েছে দুনিয়াব্যপী।

জেন-জি প্রজন্ম বড় হয়েছে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে। হাতের মুঠোয় মোবাইল ও ইন্টারনেট থাকায় সারা দুনিয়া যাদের হাতের মুঠোয়। এই প্রজন্ম ইন্টারনেট ছাড়া তাদের দুনিয়া ভাবতে পারে না। করোনা মহামারীসহ নানা সংকট কাছ থেকে দেখায় জীবনাযাত্রার ব্যয় সংকট দেখেছে যা প্রভাব ফেলেছে তাদের ব্যক্তিত্ব ও মূল্যবোধে।

জেন-জি প্রজন্ম অর্থ সাশ্রয় করা শিখছে, তারা ভ্রমণ করতে ভালোবাসে, গেম খেলতে পছন্দ করে, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করতে চায়, নিজেদের নানান কাজ জানান দিতে চায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সারাদিন হাতে ফোন থাকলেও নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে যারা সবসময় সচেতন থাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে অনেকেই অর্থ আয় করছে এবং খারাপ সময়ে পাশে দাঁড়াচ্ছে দেশের মানুষের।

এই প্রজন্ম পছন্দ করে নতুন দক্ষতা অর্জন করতে। ফোর্বসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেন-জি প্রজন্মের ৩৮ শতাংশ দেশ-বিদেশে ঘোরার সুযোগ খোঁজে। এই প্রজন্মের ৭৫ শতাংশ অনলাইনে গেম খেলতে পছন্দ করে। করোনা মহামারী সংকটের কারণে ২৯ শতাংশ ভোগেন দুশ্চিন্তায়।

জেন-জি প্রজন্মকে অনেকেই সচেতন ও পরিবেশবাদী হিসেবে চিনে থাকেন, পরিবেশের নানান বিরূপ প্রভাব নিয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতন। এই প্রজন্ম অন্যান্য প্রজন্মের চেয়ে আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের বেশিরভাগ কাজই তারা আত্মবিশ্বাস নিয়ে করে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, জেন-জি জেনারেশন বড় হওয়ার শুরুর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু সামাজিক পরিবর্তন ঘটে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসেন বারাক ওবামা।নানা ধরনের সামাজিক রীতিনীতিও বদলে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রজন্ম বৈচিত্র্যময় কারণ তাদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ নৃতাত্ত্বিক ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন হিস্পানিক। প্রজন্মেও রয়েছে নানা ধরনের মিশ্রতা। এই প্রজন্মের অনেকের বাবা মা বিদেশি বংশোদ্ভূত।

অন্য পরিসংখ্যান হলো, জেন-জিরা বেড়ে উঠেছে শহর এলাকায়। এদের মাত্র ১৩ শতাংশ গ্রামীণ এলাকায় বেড়ে উঠছে। ২০১৮ সালের এক গবেষণার বরাতে ব্রিটানিকা জানিয়েছে, জেনারেল জেড-এর সবচেয়ে বয়স্ক সদস্যরা বিয়ের ক্ষেত্রে দেরি করেছেন। এদের মাত্র ৪ শতাংশ ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করছেন। 

বিভিন্ন জেনারেশনের সময়কাল;

গ্রেটেস্ট জেনারেশন:  আনুমানিক ১৯০১ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়া সকলেই গ্রেটেস্ট জেনারেশন।

সাইলেন্ট জেনারেশন :  আনুমানিক ১৯২৮ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়া সকলেই সাইলেন্ট জেনারেশন।

বেবি বুমার্স জেনারেশন: আনুমানিক ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত জম্ম নেওয়া সকলেই বেবি বুমার্স জেনারেশন।

জেনারেশন এক্স: আনুমানিক ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত জম্ম নেওয়া সকলেই জেনারেশন এক্স।

জেনারেশন ওয়াই বা মিলেনিয়ালস প্রজন্ম:  আনুমানিক ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জম্ম নেওয়া সকলেই জেনারেশন ওয়াই। এদের মধ্যে যাদের জন্ম ১৯৯০ সালের ভিতরে তাদের বলা হয় নাইন্টিজ কিডস।

জেনারেশন জেড বা জেন-জি : ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয় প্রজন্মই জেন-জি। এদের বয়স ১২-২৭ বছর।

জেনারেশন আলফা: আনুমানিক ২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়া সকলেই জেনারেশন আলফা। এই প্রজন্মই বর্তমানে চলমান রয়েছে।

/লিপি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়