‘ডার্ক পিরিয়ড’ আর বর্ণিল আকাশের দেশ
সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: সংগৃহীত
শান্তিপ্রিয় দেশ নওরয়ে। এই দেশের ফুটপাতে কোনো মানুষকে ঘুমাতে দেখা যায় না। প্রত্যেক মানুষের রয়েছে নিজস্ব ঘরবাড়ি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দেশটিতে এমন রাতও আসে যে বারোটার দিকে সূর্য অস্ত যায়। আবার ৪০ মিনিট পরেই সূর্যোদয় হয়। দেশটির রয়েছে সমৃদ্ধ রাজনৈতিক ইতিহাস।
বছরের দুই মাস এখানে সুর্যের দেখা পাওয়া যায় না। নভেম্বরের ২১ তারিখ থেকে জানুয়ারির ২১ তারিখ পর্যন্ত সময়টাতে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না বলে- ডার্ক পিরিয়ড বলা হয়। বছরে দুইমাস মে মাসের ২১ তারিখ থেকে জুলাইয়ের ২১ তারিখ পর্যন্ত সূর্যাস্ত হয় না বলা হয় ‘মিডনাইট সান’ এর সময়। এই সময়ে রাত দুইটার সময়ও ঝকঝকে আলো দেখা যায়। বিশেষ সৌন্দর্য হচ্ছে রাতের আকাশ জুড়ে বর্ণিল আলো দেখা যায়। যা ‘অরোরা বোরিয়ালিস’ বা নর্দাণ লাইটস নামে পরিচিত। এই আলোর খেলা মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাতে দেখা যায়। ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২০৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতে মোট জনসংখ্যা ৫৩ লাখের কিছু বেশি। ইউরোপের সর্বনিম্ন দ্বিতীয় জনঘনত্ব রাষ্ট্র এটি।
নরওয়ের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ভাইকিংদের নরওয়ে আক্রমণ। ৮০০ থেকে ১ হাজার ৮৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত নরওয়ে শাসন করেছে ভাইকিংরা। ঐতিহাসিকভাবে নরওয়েতে ভাইকিং যুগের সূচনা হয় ৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ যুদ্ধের মাধ্যমে এই শাসনামল শেষ হয়। রাজা হেরাল্ডের বাহিনী ভাইকিংদের পরাজিত করে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। দেশটিতে প্রায় ১ হাজার ১৪৫ বছরের বেশি সময় ধরে রাজতন্ত্র বিদ্যমান। দেশটির সংসদ একটি সংসদীয় গণতন্ত্রমূলক প্রতিনিধিত্বমূলক রাজতান্ত্রিক কাঠামোয় পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা পার্লামেন্ট, মন্ত্রীসভা এবং সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে বিভক্ত।
দেশটিতে নরওয়েজিয়ান এবং সামী ভাষা দুটি সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খ্রিষ্টধর্ম দেশটির প্রধান ধর্ম। দেশটিতে ইসলাম ধর্মের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ শতাংশ।
দেশটির সবচেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করে রাজধানী অসলোতে। এটি একটি প্রাচীন শহর। ১ হাজার ১৪৮ সালে শহরটির গোড়াপত্তন হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, অসলো শহরটি এক সময় জলদস্যুদের শহর হিসেবে কুখ্যাত ছিল। বর্তমানে শহরটি নরওয়ের ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প ও শিপিংয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। মে মাসের শেষে এই শহরটি সবুজে ছেঁয়ে যায়। অসলোর সবচেয়ে পর্যটন প্রিয় জায়গা হচেছ ভিজিল্যান্ড পার্ক।
নরওয়েতে একজন লেখকের বই প্রকাশ হলে দেশটির সরকার অন্তত হাজার কপি বই কিনে নেয়। এবং দেশটির লাইব্রেরিগুলোতে দিয়ে দেয়।
লিপি