৩০ না পেরুতেই তারা শত কোটির মালিক
সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
ক্লেমেন্তে দেল ভেক্কিও, লিভিয়া ভয়েট, কিম জং-ইউন
কারও বয়স তিরিশের বেশি নয় কিন্তু তারা কেউ শতকোটি বা তারও বেশি ডলারের মালিক। বলে রাখা ভালো, এক ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১৯ টাকা। অর্থাৎ ১ কোটি ডলার সমান ১১৯ কোটি টাকা। অল্প বয়সেই যারা শতকোটি ডলারের মালিক হয়েছেন এমন শীর্ষ ১০ তরুণ ধনীর নাম প্রকাশ করেছে ফোর্বস সাময়িকী। চলুন তাদের সম্পর্কে জানা যাক।
লিভিয়া ভয়েট: তার নাম লিভিয়া ভয়েট। ২০ বছর বয়সী লিভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। এই বয়সেই শীর্ষ তরুণ ধনীর নামের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। লাতিন আমেরিকার সর্ববৃহৎ বৈদ্যুতিক মোটর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডব্লিউইজি। এটি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি শেয়ার যাদের নামে, তাদের একজন ব্রাজিলের লিভিয়া ভয়েট। এই প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন লিভিয়ার দাদা ডব্লিউইজি। ফোবর্স জানাচ্ছে, লিভিয়ার সম্পদের আর্থিক মূল্য ১৩০ কোটি ডলার। সবচেয়ে বেশি শেয়ারমালিকদের একজন হলেও ২০ বছরের এ তরুণী এখনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের আসনে বসেননি। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের লেখাপড়া নিয়েই ব্যস্ত তিনি।
ক্লেমেন্তে দেল ভেক্কিও: ক্লেমেন্তে দেল ভেক্কিও ২০ বছর বয়সী তরুণ। তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিষয়ে আগ্রহী। ক্যারিয়ার গড়তে চান প্রযুক্তি খাতে। ইতালির প্রয়াত ধনকুবের লিওনার্দো দেল ভেক্কিওর ছেলে ক্লেমেন্তে। ২০২২ সালে তার পিতার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এসিলর লুক্সঅত্তিকার চেয়ারম্যান ছিলেন। মিলান শহরের বাসিন্দা ক্লেমেন্তে বাবার মৃত্যুর পর দেশে-বিদেশে পারিবারিক বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের মালিক হন। ক্লেমেন্তের বর্তমান সম্পদের আর্থিক মূল্য ৫২০ কোটি মার্কিন ডলার।
কিম জং-ইউন: কিম জং-ইউন দক্ষিণ কোরিয়ান ২০ বছর বয়সী তরুণ। তিনি সর্ববৃহৎ অনলাইন গেমিং প্রতিষ্ঠান নেক্সনের শেয়ারের একটি বড় অংশের মালিক। শেয়ারের বেশির ভাগই তার প্রয়াত বাবা কিম জং-জুর উত্তরসূরি হিসেবে পেয়েছেন। কিম জং-জু ১৯৯৪ সালে নেক্সন প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০২২ সালে ৫৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান। এরপর কোম্পানিতে তার শেয়ারের একটি বড় অংশ তার দুই মেয়ের নামে চলে যায়। কিম জং-ইউন ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের মালিক।
কেভিন ডেভিড লেম্যান
কেভিন ডেভিড লেম্যান: জার্মানিজুড়ে খ্যাতি রয়েছে ডিএম-এর। ডিএম–এর ৩ হাজার ৭০০–এর বেশি শোরুম রয়েছে দেশটিতে। ওষুধ ও প্রসাধনীর এই চেইন শপের ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ২২ বছর বয়সী জার্মান তরুণ কেভিন ডেভিড লেম্যান। এই তরুণের সম্পদের আর্থিক মূল্য ৩১০ কোটি মার্কিন ডলার। ডিএম প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরের বছর কেভিনের বাবা প্রতিষ্ঠানটিতে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেন। ২০১৭ সালে কেভিন ডেভিড-এর কাছে নিজের সব শেয়ার হস্তান্তর করেন তিনি।
কিম জং-মিন: কিম জং-ইউনের বড় বোন কিম জং-মিন উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার বিশাল সম্পত্তি পেয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার এই বাসিন্দার বয়স ২২ বছর। তিনি ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের মালিক। তবে দুই বোনই সাধারণ জীবন যাপন করেন।
লুকা দেল ভেক্কিও: লুকা দেল ভেক্কিও ইতালির প্রয়াত ধনকুবের লিওনার্দো দেল ভেক্কিওর ছয় সন্তানের একজন। ২০২২ সালে পিতার মৃত্যুর পর পিতার সম্পত্তিতে নিজ মালিকানা লাভ করেন।
রেমি দাঁসো: প্যারিসের বাসিন্দা ২৩ বছরের রেমি দাঁসো পারিবারিক সূত্রে ২১০ কোটি ডলারের মালিক। তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে ধনী হয়েছেন। ফ্রান্সের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা দাসো এভিয়েশন গড়ে তুলেছিলেন তার দাদা মাহসেল দাঁসো। রেমি দাঁসোর বাবা অলিভিয়ের দাঁসো ছিলেন ফ্রান্সের জাতীয় পরিষদের একজন প্রভাবশালী নেতা। তিনি ২০২১ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান।
জাহান মিস্ত্রি: জাহান মিস্ত্রি হচ্ছেন টাটা সন্সের সাবেক চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রির ছেলে। ২০২২ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় সাইরাস মিস্ত্রির মৃত্যুর পর জাহান টাটা সন্সের প্রায় সাড়ে ১৮ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা লাভ করেন। তিনি ভারতের মুম্বাই শহরের বাসিন্দা। মাত্র ২৫ বছর বয়সী জাহান পারিবারিক আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মালিক। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৯০ কোটি মার্কিন ডলার। জাহান মিস্ত্রি আয়ারল্যান্ডের নাগরিক।
ডোরা ভয়েট
ডোরা ভয়েট: শীষ তরুণ ধনীর তালিকায় সবচেয়ে কম বয়সী তরুণী লেভিয়া ভয়েটের বড় বোন ডোরা ভয়েট। তিনি ব্রাজিলের ফ্লোরিয়ান এলাকার বাসিন্দা। ২৬ বছর বয়সী এই তরুণী ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের মালিক। ডোরা ভয়েট ২০২০ সালে প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তবে তিনিও ছোট বোনের মতো ডব্লিউইজির কোনো পদে নেই।
ফিরোজ মিস্ত্রি: জাহান মিস্ত্রির বড় ভাই ফিরোজ মিস্ত্রি। তিনিও বাবা সাইরাস মিস্ত্রির মৃত্যুর পর টাটা সন্সের প্রায় সাড়ে ১৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক হন। ফিরোজ মিস্ত্রি মুম্বাইয়ের বাসিন্দা। ২৭ বছর বয়সী এই তরুণের সম্পদের আর্থিক মূল্য ৪৯০ কোটি মার্কিন ডলার। তিনি ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছেন। একজন দক্ষ উদ্যোক্তা ও দূরদর্শী ব্যবসায়ী হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন ফিরোজ মিস্ত্রি।
ঢাকা/লিপি