ঢাকা     শনিবার   ২৯ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১৬ ১৪৩১

মহাকাশ থেকে ফেরার পর যেসব কারণে হাঁটতে পারেননি সুনিতা ও বুচ

সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২১ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১১:২৪, ২১ মার্চ ২০২৫
মহাকাশ থেকে ফেরার পর যেসব কারণে হাঁটতে পারেননি সুনিতা ও বুচ

পৃথিবীতে ফেরার পর সহজে শারীরিক ভারসাম্য পান না নভোচারীরা। 

আট দিনের জন্য মহাকাশে গিয়ে যাত্রিক ত্রুটির জন্য মহাকাশে ৯ মাস আটকা পড়েছিলেন নাসার দুই নভোচারী। তাদের পৃথিবীতে ফেরার পরে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে এসে স্ট্রেচারে ওঠার মতো কাজও নভোচারীরা একা একা করতে পারছেন না। তাদের অন্যের সহযোগিতা নিতে হয়েছে। সুনিতা ও বুচ তাদের শারীরিক ক্ষমতা অনেক খানি হারিয়ে ফেলেছেন। হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য তাদের অনেক শরীরচর্চাসহ নানাবিধ নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।

মহাকাশে ৯ মাস থেকে পৃথিবীতে ফিরেছেন সুনিতা

আরো পড়ুন:

গবেষকরা বলছেন, মানুষের শরীর সাধারণত পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিতে কাজ করে অভ্যস্ত। কিন্তু নভোচারীদের মহাকাশে ভরহীন অবস্থায় সময় কাটাতে হয়। ফলে পৃথিবীতে ফেরার পরে শরীর খাপ খাওয়াতে অনেক সময় লেগে যায়। শুরুতে তারা ঝিমুনি ভাব অনুভব করতে পারেন। এ ছাড়া শরীরের ভারসাম্য আনা এবং স্বাভাবিকভাবে হাঁটার শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকদিন লেগে যেতে পারে।
 
সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবদেহ  গবেষক অধ্যাপক ডামিয়ান বেইলি বলেন, ‘‘মহাকাশে প্রবেশ করলে মানুষের শরীরে পরিবর্তন আসে। প্রাথমিকভাবে সে অনুভূতিকে অসাধারণ মনে হয়।’’

২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে গিয়েছিলেন নভোচারী টিম পিক। তিনি বলেন, ‘‘মহাকাশে হৃৎপিণ্ডকে ঢিলেঢালাভাবে কাজ করলেই হয়। আবার পেশি ও হাড়গুলোকে বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হয় না। অসাধারণ শূন্য-মাধ্যাকর্ষণের পরিবেশে মহাকাশকেন্দ্রের চারপাশে মানুষ ভেসে বেড়াতে পারে।’’

মহাকাশে মানুষের হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালিগুলোর তেমন কাজ থাকে না। ফলে এই অঙ্গগুলো অলস হয়ে পড়ে। কিন্তু পুরোনো হাড় ভেঙে নতুন হাড় গঠনে ভূমিকা রাখা কোষগুলোর মধ্যে ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করতে গিয়ে এগুলোর ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটে। হাড়গুলো দুর্বল ও বেশি ভঙ্গুর হয়ে যায়।শুধু পেশি আর হাড়ই নয়, মহাকাশে পুরো শরীরেই বদল আসতে পারে।

মহাকাশে থাকাকালে মানুষের শরীরে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়ার ধরন বদলে যায়। শরীরের তরল পদার্থগুলোতে পরিবর্তন আসে। মহাকাশে তরল পদার্থ বুক ও মুখের দিকে ওপরে উঠে যায়। এসব কারণে মহাকাশ থেকে ফেরার পর মানুষের শরীরে প্রথম যে পরিবর্তনটি চোখে পড়ে তা হলো, মুখ ফুলে যাওয়া। মহাকাশে থাকাকালে মস্তিষ্কেও পরিবর্তন আসতে পারে। অপটিক নার্ভ, রেটিনাসহ চোখে বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন আসতে পারে। এমনকি চোখের আকারও বদলে যেতে পারে।

শরীরে নানা পরিবর্তনের কারণে মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার পর সহজে শারীরিক ভারসাম্য পান না নভোচারীরা। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়