ঢাকা     সোমবার   ০৮ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৪ ১৪৩১

ডেঙ্গু: মৃতের ১৯ শতাংশ শিশু-কিশোর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
ডেঙ্গু: মৃতের ১৯ শতাংশ শিশু-কিশোর

দেশের ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই রেহাই পাচ্ছে না ডেঙ্গুর হাত থেকে। ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩৪ জন। যার মধ্যে ১১৯ জনই শিশু-কিশোর। যা ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট মৃত্যুর প্রায় ১৯ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি কন্ট্রোল রুম এবং ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম শাখার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর ডেঙ্গুতে শূন্য থেকে ২০ বছর বয়সি ১১৯ শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মেয়ে শিশু ও কিশোরের মৃত্যু ছেলেদের তুলনায় বেশি। মেয়ে ৬২ জন আর ছেলে শিশু-কিশোরের সংখ্যা ৫৭। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সিরা। এই বয়সসীমার ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মেয়ে ২০, ছেলে ২৪ জন। এছাড়া শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সি শিশুর মধ্যে মেয়ে শিশু ১৪, ছেলে শিশু ৯, ৬ থেকে ১০ বছর বয়সি মেয়ে শিশু ১৮, ছেলে ১৪, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সি মেয়ে শিশু ১০, ছেলে শিশু ১০।

রাজধানীর শিশু হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ডেঙ্গু ওয়ার্ডগুলোতে ফাঁকা নেই কোনো সিট। নবজাতক থেকে ১৮ বছরের শিশুরা এখানে ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে। শিশু হাসপাতালের তথ্য অনু্যায়ী, ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১০৫ জন শিশু। এই হাসপাতালটিতে এ পর্যন্ত ১৪ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শিশু হাসপাতালের ডেঙ্গু বিভাগের ইনচার্জ ডা. ফারহানা আহমেদ জানান, এ বছর অন্যান্য বারের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী বেশি। যার কারণে দ্বিগুণ করতে হয়েছে হাসপাতালের বেড। যেসব শিশুর অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা রয়েছে, তাদের নিয়ে ঝুঁকিটা অনেক বেশি।

শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডেঙ্গুসহ যে কোনো অসুখে শিশুরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। বিশেষ করে এক বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের ডেঙ্গু হলে তাদের পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে পারে। ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করতে না পারলে মালটি-অরগান ফেইল্যুর হয়ে শিশু মারা যেতে পারে।

ডেঙ্গু রোগের বিপজ্জনক লক্ষণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা জানান, শিশুদের জ্বর আসলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর যখন বিপজ্জনক পরিস্থিতি, যেমন-পেটব্যথা, অনবরত বমি, শরীরে পানি জমা, নাক, মাড়ি থেকে রক্তপাত, অতিরিক্ত দুর্বলতা, অস্থিরতা, লিভার স্ফীতি দুই সেন্টিমিটারের বেশি, ল্যাব পরীক্ষায় রক্তে হিমাটোক্রিটের মান বৃদ্ধি, অণুচক্রিকা দ্রুত কমতে থাকা; এরকম কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, ডেঙ্গু জ্বরের পাঁচ থেকে সাত দিন সময়কালে ‘মারাত্মক ডেঙ্গুর’ লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন ডেঙ্গু শক সিনড্রোম (যা ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়), শরীরে পানি জমা, নাড়ি দুর্বল, শীতল শরীর (তাপমাত্রা ৯৬.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কম), রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমা, অতিরিক্ত রক্তপাত, লিভার এএসটি বা এএলটির মান ১০০০ বা বেশি, অচৈতন্য অবস্থা, হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গে রোগের লক্ষণ প্রভৃতি। এসব লক্ষণের যে কোনটা দেখা গেলে শিশুকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

/মেয়া/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়