সিআরপিতে এসএমএ সচেতনতা নিয়ে স্ক্রিনিং ক্যাম্প রোববার
আগামীকাল ২৭ অক্টোবর ‘সবার জন্য অকুপেশনাল থেরাপি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও উদযাপিত হতে যাচ্ছে ১৫তম বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস। দিনটি উপলক্ষে কিউর এসএমএ বাংলাদেশ, সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্য প্যারালাইজ্ড (সিআরপি) এবং বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের (বিওটিএ) আয়োজনে একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে মিরপুরের সিআরপির সম্মেলন কক্ষে এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে চলবে দুপুর পর্যন্ত।
বিশ্বের ১১১টি দেশেই এই অক্টোবর মাসে অকুপেশনাল থেরাপি সপ্তাহ কিংবা মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। দিবসটি অকুপেশনাল থেরাপিস্ট এবং সমাজের সব শ্রেণি-পেশার জনসাধারণের জন্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।
অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি স্বীকৃত বিভাগ এবং একটি আধুনিক স্বাস্থ্য সেবামূলক পেশা। যেখানে শারীরিক বা মানসিকভাবে অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দৈনন্দিন কাজে যথাসম্ভব সর্বাধিক স্বাবলম্বী বা স্বনির্ভর করার উদ্দেশ্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি বা এসএমএ একটি দুরারোগ্য বিরল রোগ। পৃথিবীর অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে এই রোগে আক্রান্তদের একটি বড় অংশ টেস্ট এবং চিকিৎসায় আওতায় আসছে না। ফলে চিকিৎসার অভাবেই অসংখ্য শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। দেশে এসএমএ রোগীদের কল্যাণে কাজ করা একমাত্র সংগঠন ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ’ এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও রোগীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এই সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিরল এসএমএ রোগে আক্রান্ত রোগীদের পাশাপাশি সিআরপি, কিউর এসএমএ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা ও নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
আয়োজক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পক্ষাঘাতগ্রস্ত সব রোগীদের জন্য অকুপেশনাল থেরাপি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেক্ষেত্রে এই ক্যাম্প থেকে এসএমএ রোগীরা বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারবেন।
যেসব ক্ষেত্রে অকুপেশনাল থেরাপিস্ট কাজ করে থাকেন তা হলো- স্ট্রোক বা শরীরের এক পাশ অবশ, মাথায় প্রাপ্ত আঘাত হতে শারীরিক সমস্যা, যেকোনো আঘাত বা রোগ থেকে সৃষ্ট হাতের সমস্যা বা হাত ব্যবহার করতে না পারা, বিশেষ কোনো রোগের পরে মনে রাখতে বা কোনো জিনিস সঠিকভাবে চিনতে সমস্যা, অটিজম বা শিশুর বিকাশজনিত সমস্যা, নিরাপদ কর্মস্থল বা অর্গোনোমিক ডিজাইনের মাধ্যমে কোমর, হাত বা ঘাড়ে ব্যথা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এসব কারণে ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজকর্মে (নিজস্ব পরিচর্চামূলক কাজ যেমন: ব্রাশ করা, খাওয়া, গোসল করা, উৎপাদনমূলক কাজ, বিনোদনমূলক কাজ ইত্যাদি) অংশগ্রহণ বাধাপ্রাপ্ত হলে অকুপেশনাল থেরাপিস্ট চিকিৎসার মাধ্যমে বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ, সহায়ক উপকরণ, স্প্লিন্ট প্রদান, পরিবেশের কাঠামোগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে থাকেন।
অকুপেশনাল থেরাপিস্টরা বিভিন্ন উদ্দেশ্যমূলক কাজ, শারীরিক ব্যয়াম, বিশেষ সহায়ক সামগ্রীর ব্যবহার, কর্মদক্ষতার প্রশিক্ষণ, রোগীর পারিপার্শ্বিক অবস্থার উন্নয়ন এবং বিকল্প কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীকে দৈনন্দিন কাজে সর্বাধিক স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করে থাকেন।
/হাসান/সাইফ/