বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস: সচেতনতা সভা ও স্ক্রিনিং ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে ১৫তম বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবস।
দিনটি উপলক্ষে কিউর এসএমএ বাংলাদেশ, সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি) এবং বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের (বিওটিএ) আয়োজনে একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং স্ক্রিনিং ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকার মিরপুরের সিআরপির সম্মেলন কক্ষে এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে চলে দুপুর পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে আগত এসএমএ রোগী এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা কেক কেটে দিবসটি উদযাপনের কর্মসূচি শুরু করেন।
দুটি পর্বে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। প্রথম পর্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন মিরপুর সিআরপির অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রাকিব হোসাইন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের (বিওটিএ) সহ-সভাপতি অনিমা দাস নুপুর, মিরপুর সিআরপির ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোর্শেদুল কাদের, কিউর এসএমএ বাংলাদেশের সভাপতি শাহাদাত হোসেন, সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর ফারুক, জুনিয়র কনসালটেন্ট অকুপেশনাল থেরাপিস্ট এসএম ফারহান বিন হোসাইন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট মনীষা চক্রবর্তী।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিরল এসএমএ রোগে আক্রান্ত রোগীদের পাশাপাশি সিআরপি, কিউর এসএমএ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ অকুপেশনাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা ও নেতারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অকুপেশনাল থেরাপি হলো এমন একটি চিকিৎসা ও সেবা, যার মাধ্যমে একজন শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে অসুস্থ বা প্রতিবন্ধীকেও স্বাবলম্বী করে তোলা যায়।
তারা বলেন, অকুপেশনাল থেরাপিস্টরা প্রতিবন্ধী শিশুদের যেমন- অটিজম, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার-অ্যাকটিভ ডিস-অর্ডার বা এডিএইচডি, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি, স্পাইনা বাইফিডা, বাঁকানো পা বা ক্ল্যাব ফিট, গুলেন বারি সিনড্রোম বা জিবিএস, মেনিনজাইটিস, এনসেফালাইটিসের চিকিৎসাসেবা দেওয়া থাকেন।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি বা এসএমএ একটি বিরল রোগ। পেশির সঞ্চালনকে নিয়ন্ত্রণ করে যে মোটর নিউরোন, তা নষ্ট হওয়াই জিনঘটিত এই রোগের কারণ। ওষুধের পাশাপাশি থেরাপি এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ উপকারে আসে। তাই এসএমএ এর সঙ্গে অকুপেশনাল থেরাপি বিষয়টিও জড়িত। আগামী দিনে সিআরপি এবং কিউর এসএমএ বাংলাদেশ এসএমএ রোগীদের কল্যাণে সমন্বিতভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দেশের বিভিন্ অঞ্চল থেকে আসা এসএসএ রোগীদের অকুপেশনাল থেরাপি সর্ম্পকে ব্যবহারিক জ্ঞান প্রদান করা হয় এবং স্ক্রিনিং ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়।
বিশ্বের ১১১টি দেশেই এই অক্টোবর মাসে অকুপেশনাল থেরাপি সপ্তাহ কিংবা মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। দিবসটি অকুপেশনাল থেরাপিস্ট এবং সমাজের সর্ব শ্রেণি পেশার জনসাধারণের জন্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। এ বছর বিশ্ব অকুপেশনাল থেরাপি দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য অকুপেশনাল থেরাপি’।
আয়োজকরা জানাচ্ছেন, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি বা এসএমএ একটি দুরারোগ্য বিরল রোগ। পৃথিবীর অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে এই রোগে আক্রান্তদের একটি বড় অংশ টেস্ট এবং চিকিৎসায় আওতায় আসছে না। ফলে চিকিৎসার অভাবেই অসংখ্য শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। দেশে এসএমএ রোগীদের কল্যাণে কাজ করা একমাত্র সংগঠন 'কিউর এসএমএ বাংলাদেশ’ এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও রোগীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা/হাসান/আরপি