ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বড়দিন : পাবনার খ্রীস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ

শাহীন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বড়দিন : পাবনার খ্রীস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ

পাবনা প্রতিনিধি: ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপনে পাবনার ৩০টি গ্রামের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের মাঝে এখন উৎসবের আমেজ।

আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর তাদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব উদযাপনে গীর্জা ও বাড়িগুলো এখন আলোকসজ্জায় ঝলমল। গীর্জা বা উপাসনালয়গুলো সাজানো হয়েছে নানা রং বেরং এর সাজে। আল্পনায় আল্পনায় গীর্জা ও বাড়ির আঙিনা সেজেছে নতুন সাজে।

তৈরি করা হয়েছে গোশালা। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। স্বজনদের সাথে বড়দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন এখানকার কর্মজীবি মানুষ। অতিথিদের আপ্যায়ন করতে বাড়ির গৃহিনীরা বাড়িঘরে আলোকসজ্জা আর পিঠাপুলির আয়োজন করেছেন।

তথ্য মতে, দুই হাজার বছর আগে বর্তমানের ফিলিস্তিনের বেথেলহেমের এক গোশালায় মাতা মেরির গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন যিশু খ্রিস্ট। তিনি মানুষকে দেখিয়েছিলেন মুক্তি ও কল্যাণের পথ। সেই যিশু খ্রিস্টের জন্মতিথি ‘বড়দিন’ উদযাপনে পাবনার খ্রিস্টান পল্লী এখন উৎসবমুখর।
 


পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ও ভাদড়া গ্রামের মালতী কস্তা, প্রীতি কস্তা, রিনা রোজারিও, রবিতা গোমেজ, মার্টিন গোমেজ এরা জানালেন, বড়দিন উপলক্ষ্যে তারা সাধ্যমতো নিজ নিজ বাড়িতে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জা করেছেন। আল্পনা আঁকা হয়েছে বাড়ির আঙিনা, দেয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রভু যিশু খ্রিস্ট বেথেলহামের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে প্রত্যেক বাড়িতে গোশালা স্থাপন ও সেটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

পাবনা শহরের দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকার গৃহিনী রীনা বর্মন বলেন, ‘বড়দিনের আনন্দ ভাগ করে নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে এসেছেন। আমরা ঘর সাজিয়েছি, ক্রিস্টমাস ট্রি সাজিয়েছি, গোশালা তৈরী করেছি। অতিথিদের জন্য পিঠাপুলি, পায়েশসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করেছি।’

পাবনা ব্যপ্টিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক স্টিফেন সরকার বলেন, ‘বড়দিন ঘিরে আমরা সপ্তাহব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছি। এসব আয়োজনের মধ্যে নগর কীর্তন, বড়দিনের উপাসনা, কেক কাটা, পিঠা পর্ব, প্রীতিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। আমরা আশা করি প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা এবারের বড়দিনের উৎসব উদযাপন করতে পারবো।’
 


চাটমোহরের মথুরাপুর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার দিলীপ এস কস্তা বলেন, ‘আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং অন্তরের অন্ধকার দূর করে আলোর পথ দেখানোর বাণী নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন যিশু খ্রিস্ট। জগতে শান্তি-ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং সবার মাঝে ভাতৃত্ব মিলন বজায় রাখার আহবানে পালিত হবে এবারের বড়দিন।’

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম পিপিএম জানান, বড়দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে বড়দিন উদযাপন করতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সকল চার্চে, গীর্জায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকি পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।

জেলা পুলিশের তথ্য মতে, পাবনায় এবার ২১টি গীর্জায় বড়দিনের প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

 

রাইজিংবিডি/পাবনা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৮/শাহীন রহমান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়