ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাবরি মসজিদের জন্য আলাদা জমি দেয়ার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৯ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাবরি মসজিদের জন্য আলাদা জমি দেয়ার নির্দেশ

অবশেষে ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মুসলমানদের জন্য নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে আলাদা জমি বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

এনডিটিভি জানিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে ভারতীয় রাজনীতির অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ মামলার রায় ঘোষণা করেছেন।

রায়ে বলা হয়েছে, বাবরি মসজিদের বিতর্কিত ওই জমি পাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাদের জন্য একটি মন্দির নির্মাণে উক্ত ২ দশমিক ৭৭ একর জমি সরকারি ট্রাস্টকে প্রদান করতে হবে। সরকারকে তিন মাসের মধ্যে এই ট্রাস্ট গঠন করতে হবে।

অন্যদিকে অযোধ্যা শহরেই উপযুক্ত ও সুপরিচিত কোনো স্থানে মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ করতে হবে পাঁচ একরের প্লট। এখানে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। জমির স্থান নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকার। এরপর জমি বরাদ্দ করবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।

এদিকে এ রায়ে মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড সন্তষ্ট নয় বলে জানিয়েছে। রায় ঘোষণার পর বোর্ডের জাফারিয়াব জিলানি সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে তারা একটি বৈঠক করবেন। সেখানে তারা ঠিক করবেন রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন কি না।

এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট হঠাৎ করে জানান এই, মামলার রায় শনিবার ঘোষণা করা হবে।

এরপর মামলার রায়কে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি আশপাশের রাজ্যগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। এছাড়া উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছ রাজ্য সরকার এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

রায়কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন ধরনের কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বিজেপির নেতা ও মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তার আগে গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা জমি নিয়ে মামলার শুনানি শেষ হয়। তবে তখন কোনো রায় দেননি আদালত।

প্রধান বিচারপতি গগৈ শুক্রবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তর প্রদেশের মুখ্যসচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর রাতে গগৈ অন্য চার বিচারকের সঙ্গে আলোচনা করে অযোধ্যা মামলায় রায় দেয়ার দিনক্ষণ ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তার আগে শনিবার তিনি ঐতিহাসিক এ মামলার রায় ঘোষণা করলেন।
অযোধ্যায় রাম মন্দির ও বাবরি মসজিদের বিষয়টি নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছিল। ৮০’র দশকে অন্যতম রাজনৈতিক ইস্যু ছিল এটি। ষোড়শ শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদটি ১৯৯২ সালে গুঁড়িয়ে দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, তাদের দেবতা রামের জন্মভূমিতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু মুসলিমরা বলছেন, বাবরি মসজিদের স্থানে রামের জন্মের কোনো আলামত নেই।

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়ে দেশটির কট্টরপন্থী হিন্দুরা অযোদ্ধায় মন্দির নির্মাণ করতে গেলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। তখন এ মসজিদ ভাঙা নিয়ে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতায় ভারতজুড়ে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

 

 

ঢাকা/এনএ

 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়