ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিশ্বের সর্বাধিক পঠিত পত্রিকায় বাংলাদেশি প্রতিবন্ধীর সাফল‌্য

সাজেদ রোমেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বের সর্বাধিক পঠিত পত্রিকায় বাংলাদেশি প্রতিবন্ধীর সাফল‌্য

জাপানের একটি হাইস্কুলের ছাত্র বাংলাদেশি রাহাত মো. মাজিদুল হোসেন। হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেও সে ভিডিও গেমসে অসাধারণ পারদর্শী হয়ে উঠায় দেশটির একটি নামকরা কোম্পানি তাকে শিগগিরই নিয়োগ দিতে যাচ্ছে।

বিশ্বের সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা জাপানের আসাহি সিম্বুন রোববার ১৮ বছর বয়সী এই বাংলাদেশির সাফল‌্যকে প্রধান শিরোনাম করেছে।  পত্রিকাটি জানায়, শারীরিক প্রতিবন্ধীতাকে মোকাবিলার পাশাপাশি জাপানি ভাষার প্রতিবন্ধীকতা কাটিয়ে দক্ষতা অর্জন করায় রাহাত ‘ই-স্পোর্টস প‌্যারাথলিট’ পদে যোগ দিবে।

আসাহি সিম্বুন জানাচ্ছে, রাহাত বাংলাদেশে ৩ বছর বয়সে একটি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে হুইল চেয়ারে চলাফেরা করছে। কোনো স্কুলে ভর্তি হতে না পারায় দেশে রাহাত গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা চালায়। ১০ বছর আগে তার বাবা-মা চাকরিসূত্রে জাপান গেলে তাদের সঙ্গে রাহাতও যায়। সেখানে প্রথমবারের মত স্কুলে ভর্তি হয়। যদিও জাপানি ভাষা না জানায় পড়াশোনা শুরু হয় বেসিক ইংরেজিতে।

জাপানি ভিডিও গেমস পাজল ও ড্রাগনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর খেলা শুরু করে বাবার স্মার্টফোনে। তারপর পায়ে অপারেশনের সময় দুই মাস হাসপাতালে থাকায় মায়ের কিনে দেয়া ভিডিও গেমস খেলতে খেলতে এ জগতে দক্ষ হয়ে উঠে। এর মধ‌্যে তার শারীরিক পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে হুইল চেয়ারে বাস্কেট বল খেলতে শুরু করে। তবে পরে মূল দলে স্থান না পাওয়া সে এক বন্ধুর বাসায় ভিডিও গেমসেই বেশি সময় দিতে থাকে।

দুই বছর আগে সে ২০১৭ সালে হাইস্কুলে ঢুকে। এ সময়ই যোগ দেয় অনলাইন ভিডিও গেমস ক্লাবে। জনপ্রিয় ভিডিও গেমস লিগ অব লিজেন্ড যেটাতে পাঁচজনে একসঙ্গে খেলে একজন আরেকজন সহায়তা করে শত্রুর ভূখণ্ড দখলে। এই অনলাইন গেমসে দক্ষ হয়ে উঠে রাহাত। সেইসঙ্গে জাপানি ভাষা সাবলিলভাবে বলতে দক্ষ হয়ে উঠে। এর মধ‌্যে সে খণ্ডকালীন চাকরিও পায় টেলিমার্কেটার হিসেবে।

অনলাইন গেমস ক্লাবের মালিক থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে রাহাতের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। রাহাত এত প্রিয় সবার যে, ক্লাসে বা ক্লাবে চলাফেরার সময় গেসম খেলার সাথীরা বা সহপাঠিরা সিঁড়িতে হুইল চেয়ারটি উঠানামা করে।

গেল অক্টোবরে নাগোইয়া একটি কোম্পানি থেকে তার চাকরির প্রস্তাব আসে, যেটি অনলাইন গেমস বিক্রি ও উন্নয়ন করে থাকে। মূলত এই কোম্পানি আয়োজিত ই-স্পোর্টসে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নেয়াই হবে রাহাতের চাকরি।

জাপানের পত্রিকাটিকে রাহাত বলেছে, ‘আমার গেমস খেলার সাথীরা সহযোগিতা করেছে বলেই আমি এত দূর এগিয়ে আসতে পেরেছি। ই-স্পোর্টস এমন একটি জায়গা যেখানে আমি আমার দক্ষতা দেখাতে পারব। আমি আশাবাদী ভবিষ‌্যতে আমি আরো বেশি জনপিয় হব।’

তবে সর্বাধিক পঠিত এই পত্রিকাটি রাহাতের বাবা-মার বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

 

ঢাকা/সাজেদ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়