যুক্তরাজ্য ফ্রান্স আমেরিকার চোখে ইরানের নুর-১ উৎক্ষেপণ
বুধবার মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠায় আইআরজিসি
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) উৎক্ষেপণ করেছে দেশটির প্রথম সামরিক উপগ্রহ ‘নুর-১’।
বুধবার (২২ এপ্রিল) নুর-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষা শক্তির নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে পৃথিবীর কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনের মাধ্যমে তার দেশ প্রমাণ করেছে, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে সঠিক নীতি গ্রহণ করেছে ইরান।
হাসান রুহানি আইআরজিসির প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামির সঙ্গে এক টেলিফোন সংলাপে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে ইরান সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেছে। তিনি মহাকাশ গবেষণায় দ্রুত গতিতে আরো সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দেশের বিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আইআরজিসি সব সময় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করেছে এবং বিশ্বের স্বাধীনচেতা জাতিগুলো আইআরজিসির এ ভূমিকার ভূঁয়সী প্রশংসা করেছে।
এদিকে, আমেরিকা অভিযোগ করে বলেছে, ইরান ভূপৃষ্ঠের কক্ষপথে কৃত্রিম সামরিক উপগ্রহ স্থাপন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইরানের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানান।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সিবিএন নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাইক পম্পে বলেন, ইরান এ পদক্ষেপের মাধ্যমে কতটা বিপজ্জনক ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী কাজ করেছে তা ফ্রান্সও উপলব্ধি করেছে।
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স মহাকাশে ইরানের কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে। এ সম্পর্কে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) রাতে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ কাজে মহাকাশ গবেষণা ও কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করার অধিকার বিশ্বের প্রতিটি দেশের রয়েছে। কাজেই ইরানের এ পদক্ষেপের ব্যাপারে লন্ডন ও প্যারিসের প্রতিবাদ তাদের দ্বৈত নীতির প্রমাণ বহন করে।
মুসাভি বলেন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স এমন সময় মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যখন এসব দেশ মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বিপন্ন করে রেখেছে।
প্রসঙ্গত, ইরান ২০০৯ সালে প্রথম উমিদ বা আশা নামের কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায়। ইরানি বিজ্ঞানীরা নিজস্ব প্রযুক্তিতে এটি তৈরি করেন। এরপর ২০১০ সালে ইরান মানুষ বহনোপযোগী মহাকাশযানও পাঠায়। কাভেশগার বা অভিযাত্রী-৩ নামের রকেট এ মহাকাশযানকে বহন করেছিল। এছাড়া ২০১৫ সালে ফজর বা উষা নামে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে ইরান। নুর-১ পাঠাতে গিয়ে গত বছর দুইবার ব্যর্থ হয়েছ ইরান। এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেও একবার ব্যর্থ হয় ইরান।
তথ্যসূত্র: তেহরান টাইমস, পার্সটুডে, আল জাজিরা
/সাইফ/
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন