খাশোগি হত্যার চূড়ান্ত রায় ‘হাস্যকর’ ও ‘বিচারের নামে প্রহসন’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
সৌদি আরবের একটি উচ্চ আদালত সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) জামাল খাশোগি হত্যার চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদাণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কমিয়ে দিয়েছে। এই রায়কে ‘হাস্যকর’ বলেছেন দেশটির ভিন্ন মতাবলম্বী প্রয়াত সাংবাদিকের তুর্কি বাগদত্তা। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি একে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বাগদত্তা খাদিজা চেঙ্গিসকে বিয়ে করতে প্রয়োজনীয় কাগজ তোলার জন্য ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে যান খাশোগি। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কট্টর এই সমালোচক আর প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারেননি। তুর্কি সরকার খাশোগির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেও তার মৃতদেহ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ওই সময় বিভিন্ন দলিল-প্রমাণ উপস্থাপন করে তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, সৌদি যুবরাজের নির্দেশে খাশোগিকে হত্যা করা হয়।
ওই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গত ডিসেম্বরে মৃত্যুদণ্ড দেন সৌদির একটি নিম্ন আদালত, আরও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে খাশোগির ছেলেরা হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেওয়ার পর সোমবারের চূড়ান্ত রায়ে তাদের সাজা কমিয়ে ৭ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দোষীদের কারও পরিচয় প্রকাশ করেননি আদালত।
এই রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সোশ্যাল টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খাশোগির বাগদত্তা খাদিজা, ‘সৌদি আরবে আজকের চূড়ান্ত রায় হাস্যকর, আবারও বিচারের নামে সম্পূর্ণ উপহাস করা হলো। জামালের খুনের জন্য কে দায়ী, সেই সত্যিটা বিশ্বকে না জানিয়ে মামলা বন্ধ করে দিচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। কেই হত্যার পরিকল্পনা করেছিল, কে আদেশ দিয়েছিল, তার মৃতদেহ কোথায়? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্নগুলোর জবাব একেবারেই অজানা থেকে গেলো।’
সোমবার আদালতের রায় ঘোষিত হওয়ার পর জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, যে প্রক্রিয়ায় এ বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে তা ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার পরিপন্থি। খাশোগি নিহত হওয়ার পর এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। এই হত্যায় যুবরাজ মোহাম্মদ ও অন্য ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ পাওয়ার দাবি করে গত বছর জুনে প্রতিবেদন দেন ক্যালামার্ড।
সোমবার টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল না এবং এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতাও উল্লেখ করা হয়নি। এই রায় বিচারের নামে প্রহসন।’ ক্যালামার্ড আরও বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি এবং কী কারণে খাশোগির পরিবার তার হত্যাকারীদে ক্ষমা করে দিল তা স্পষ্ট নয়।
ঢাকা/ফাহিম