ঢাকা     শনিবার   ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৫ ১৪৩১

কাশ্মিরিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ভারতীয় পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৯, ১৭ নভেম্বর ২০২১  
কাশ্মিরিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ভারতীয় পুলিশ

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের নিরাপত্তা বাহিনী গত সোমবার দাবি করেছিল, দুই সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী ও তাদের সহযোগীরা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। নিহতদের অন্তত তিন জনের পরিবারের সদস্যরা এর এক দিন পর অভিযোগ করেন, এরা ছিল সবাই বেসামরিক নাগরিক এবং তাদেরকে ‘ঠান্ডা মাথায় খুন’ করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাজ্যের প্রধান শহর শ্রীনগরের হায়দারপোরা এলাকার একটি শপিংসেন্টারে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতির খবর তারা গোপন সূত্রে পায়। সেখানে অভিযান চালালে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। দুই ঘণ্টার লড়াইয়ে দুই সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী, ব্যবসায়ী আলতাফ আহমাদ ভাট এবং দন্তচিকিৎসক মুদাসির গুল নিহত হয়।

কাশ্মির পুলিশের মহাপরিদর্শক বিজয় কুমার বলেন, ‘ওই শপিং সেন্টারে ভাটের একটি সিমেন্টের দোকান ছিল এবং তিনি গুলকে তিনটি কক্ষ ভাড়া দিয়েছিলেন। গুল সেখানে অননুমোদিত কলসেন্টার চালাতো, সে ছিল সন্ত্রাসীদের শীর্ষ সহযোগী। সন্ত্রাসীরা ভাটের ভবনটি ব্যবহার করতো এবং আমরা একে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থলও বলতে পারি।

আরো পড়ুন:

তবে নিহত অন্তত তিন জনের পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বন্দুকযুদ্ধের সময় গুল ও মুদাসিরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ভবনটিতে অভিযানের সময় গুল ও ভাটকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল ভারতীয় বাহিনী। পুলিশ আমাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করেছিল এবং আমাদের ফোন নিয়ে যায়। ভাটকে তিনবার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। দুবার তাকে ফিরে আসতে দেওয়া হয়। তৃতীয়বার আর সে ফিরে আসেনি। গুলকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাই।’

তথাকথিত এই বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের লাশও স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই মৃতদেহগুলো পাকিস্তান সীমান্তের কাছে কুপয়ারা জেলার একটি কবরস্থানে কর্তৃপক্ষ দাফন করেছে বলে জানিয়েছে। মৃতদেহ নিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ কিংবা জমায়েত এড়াতে সম্প্রতি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের দেহ দূরের অজ্ঞাত কবরস্থানে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নিহত গুলের কন্যা নোহা বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের বাবাকে সম্মানজনকভাবে দাফন করতে চাই। তার কবরটি আমরা বাড়ির কাছে চাই। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচারও  চাইছি না।’

তিনি বলেন, ‘এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেছিলাম, চাচা আমার বাবার মৃতদেহটি আমাকে দিন। সে নির্লজ্জের হাসি হেসেছিল। আমি জমে গিয়েছিলাম এবং এর জবাব কী দেব বুঝতে পারছিলাম না।’
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়