ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

প্রতিবেশী দেশগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৩, ৪ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ২২:১৪, ৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রতিবেশী দেশগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) প্রতিবেশী পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে। শুধু তা-ই নয়, সহিংসতার কাজ করেছে এমন নিষিদ্ধ গোষ্ঠীগুলির সাথেও সংস্থাটির জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত মাসে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ করেছিলেন, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টরা জুন মাসে ভ্যাঙ্কুভারের শহরতলিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদিপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে কানাডায় র-এর স্টেশন প্রধানকে বহিষ্কার করা হয়। ট্রুডোর এই মন্তব্যের পর বিশ্বব্যাপী আলোচনায় চলে আসে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ভারত ক্ষুব্ধভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এ ব্যাপারে কানাডার কাছে প্রমাণ দাবি করেছে। অটোয়া বলেছে, তারা মিত্রদের সাথে প্রমাণ ভাগ করেছে, তবে এসব প্রমাণ তারা প্রকাশ্যে হাজির করবে না।

রয়টার্স র-এর সাথে পরিচিত চারজন অবসরপ্রাপ্ত এবং দুজন ভারতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছে। তারা জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হওয়ার পর ‘র’ আরও দৃঢ়ভাবে আন্তর্জাতিক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছিল। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘র’ ২০০৮ সালের পর ধীরে ধীরে পশ্চিমা দেশগুলোতে তার আধিপত্য বিস্তার করেছে। 

একজন বর্তমান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মুম্বাই হামলায় জড়িত থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত একজন মার্কিন নাগরিকের প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করতে ভারতের ব্যর্থতা ছিল পশ্চিমা বিশ্বে ‘র’-এর প্রভাব বাড়ানোর মূল প্রেরণা।

গোয়েন্দা সংস্থাটির একজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যদিও প্রতিবেশী দেশগুলোতে র-এর উন্নত সংকেত ও প্রযুক্তিগত বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা রয়েছে, তবে পশ্চিমে সংস্থাটি তার কার্যক্রমের জন্য মানুষের বুদ্ধিমত্তার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সরঞ্জামের অন্যান্য অস্ত্রের মতো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছেন এবং একটি শক্তিশালী ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর কিংবা র-এর কোনও মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।

দক্ষিণ এশীয় গুপ্তচর সংস্থাগুলোর উপর একটি বইয়ের সহ-লেখক অ্যাড্রিয়ান লেভি বলেছেন, ‘র’-তার প্রতিবেশীদের এলাকায় ‘লক্ষ্যবস্তু হত্যা এবং গুমসহ...সরাসরি অ্যাকশনের সাথে দীর্ঘকাল ধরে জড়িত।’  এই ধরনের কর্মকাণ্ডগুলো আরেকজনের মাধ্যমে মাধ্যমে সাজানো হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।

র-এর এক জন কর্মকর্তা জানান, দিল্লি সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে গোপন অভিযানের প্রয়োজন দেখেনি। কারণ অনেক দেশের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বিধায় এই দেশগুলোতে ভারত  প্রত্যর্পণ এবং স্বার্থ রয়েছে এমন লোকেদের কাছে যাওয়ার মতো লক্ষ্যগুলো সুরক্ষিত করতে সক্ষম করে।

লেভি বলেন, এজেন্সি পশ্চিমে তার কার্যক্রম সম্পর্কে ‘অতি সতর্ক।’ অবশ্য এরপরও ‘র’ ইউরোপ থেকে অন্যান্য স্থানে নগদ অর্থ, অস্ত্র এবং কর্মী যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। সংস্থাটির ‘সরাসরি পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য সংরক্ষিত ছিল।’
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়