গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় শঙ্কিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচার বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি একের পর এক হাসপাতালেও বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী।
সর্বশেষ উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে (রুমাহ সাকিত ইন্দোনেশিয়া) বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। এ হামলায় শঙ্কিত হওয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সোমবার রাতে জাতিসংঘের সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে সর্বশেষ হামলার ঘটনায় আমরা শঙ্কিত। রোগীসহ কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হামলায় কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। স্বাস্থ্যকর্মী ও বেসামরিক নাগরিকদের কখনোই এ ধরনের ভয়াবহতার মুখে পড়া উচিত নয় এবং বিশেষ করে হাসপাতালের ভিতরে থাকাকালীন।’
বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও বলেছে, ‘সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালটি এখনও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেখানে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছে না। যারাই সেখান থেকে বের হতে চেয়েছে, তাদের দিকে গুলি চালানোর খবর পাওয়া গেছে। উত্তর গাজা ও গাজা শহরের অন্যান্য হাসপাতালগুলোর মতো এই হাসপাতালটিও কয়েক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ, পানি ও প্রয়োজনীয় ওষুধের তীব্র ঘাটতিতে রয়েছে। হাসপাতালটি কেবল মৌলিক পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম। এ অবস্থায় অবরুদ্ধ পরিস্থিতি গুরুতর আহতদের জীবন এবং অন্যান্য চিকিৎসা জরুরি অবস্থাকে তাৎক্ষণিক ঝুঁকিতে ফেলছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গত ছয় সপ্তাহ ধরে গাজার স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোতে ক্রমাগতভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। এর ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী ও আশ্রয় নেওয়া মানুষকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।’
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটি বলেছে, ‘৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ দফা হামলার শিকার হয়েছে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল। হামলায় ইতোমধ্যে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটি। এমন দৃশ্য দেখে বিশ্ব নীরব থাকতে পারে না। এই হাসপাতালগুলো নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়া উচিত। কিন্তু, তা এখন মৃত্যু, ধ্বংস ও হতাশার দৃশ্যে রূপান্তরিত হয়েছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরের স্বাস্থ্য পরিষেবায় ৩৩৫টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার উত্তরাঞ্চলে বড় হাসপাতালগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গত রোববার (১৯ নভেম্বর) কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা না দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাংক নিয়ে হাসপাতালটি ঘিরে ফেলে এবং হামলা চালায়। এতে ১২ জন নিহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসক ও রোগী আছেন। ইসরায়েলি ট্যাংক এখনো হাসপাতালের চারপাশ ঘিরে রেখেছে।
/ফিরোজ/