ঢাকা     সোমবার   ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৫ ১৪৩১

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

ইরানের গ্যাস পাইপলাইনে হামলার নেপথ্যে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৫:০১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ইরানের গ্যাস পাইপলাইনে হামলার নেপথ্যে ইসরায়েল

ইরানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস পাইপলাইনে গত সপ্তাহে হামলা হয়। এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এই হামলার পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস।

ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির কৌশলবিদ ও পশ্চিমা বিশ্বের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গতকাল শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দুই পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পসের সঙ্গে যুক্ত একজন সামরিক কৌশলবিদের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরানের দুটি বড় গ্যাস পাইপলাইনে হামলা ইসরায়েল চালিয়েছে। ওই দুটি পাইপলাইন দিয়ে ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী শহর তেহরান ও অন্যান্য প্রধান শহরগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। 

জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হামলার জেরে ইরানের দৈনিক প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ১৫ শতাংশ কমে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্যাস পাইপলাইনে হামলার ফলে ইরানের ফারস এবং চাহার মহল বখতিয়ারি-সহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে লাখ লাখ মানুষের তাপ ও রান্নার গ্যাসের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। একই সঙ্গে এই প্রদেশগুলোতে শিল্প উৎপাদনেও স্থবিরতা এসেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইসরায়েল এর আগেও ইরানের পারমাণবিক এবং একাধিক সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এছাড়া দেশে ও দেশের বাইরে বসবাসকারী ইরানি কমান্ডার এবং বিজ্ঞানীদের হত্যারও অভিযোগও রয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।

কিন্তু জ্বালানি স্থাপনা- যার ওপর শিল্প, কারখানা ও লক্ষাধিক বেসামরিক নাগরিক নির্ভরশীল; সেখানে হামলার ঘটনা ছায়া যুদ্ধের বৃদ্ধিকে ইঙ্গিত করছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েল নতুন একটি হামলার ক্ষেত্র খুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ইরানের জ্বালানি স্থাপনায় ইসরায়েলের এই হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সাইবার আক্রমণ, স্থল, আকাশ বা সমুদ্রের বিভিন্ন ফ্রন্টে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে।

ইরানের তেলমন্ত্রী জাভেদ ওজি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই হামলা পরিকল্পিত। শত্রুর পরিকল্পনা ছিল শীতকালে আমাদের দেশের বেশ কয়েকটি প্রধান শহর ও প্রদেশে গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত করা।’ তবে তিনি হামলাকারী হিসেবে ইসরায়েলের নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি।

আইআরজিসির কৌশলবিদ ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলা থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইহুদি জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রটি ইরানের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোর বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখে। এবং একই সঙ্গে দুটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর বিষয়টি খুবই কঠিন ছিল কারণ এর সমন্বয় সাধন খুবই কষ্টসাধ্য। পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলেছেন, এই হামলায় খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। ইরান সহজেই ক্ষতি মেরামত করতে পারবে।

তবে তারা বলেছেন, এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল হয়তো ইরানকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছে যে, তারা চাইলে এ ধরনের ক্ষতি করতে সক্ষম।

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়