ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

ইসরায়েলের উচিত জাতিসংঘের কর্মকর্তাকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া: যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২০ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৩:৪১, ২০ মার্চ ২০২৪
ইসরায়েলের উচিত জাতিসংঘের কর্মকর্তাকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া: যুক্তরাষ্ট্র

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিন শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধানকে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির। 

গত সোমবার (১৮) মার্চ মিশরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল তাকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে।

এ ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ভিড্যান্ট প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস ইউএনআরডব্লিওএকে গাজাসহ তার সকল কর্মক্ষেত্র পরিদর্শনের সুযোগ দেয়া উচিত এবং আমরা জাতিসংঘ ও এনজিও কর্মীদের সকল ভিসা আবেদন দ্রুত অনুমোদনের জন্যে ইসরায়েলি সরকারের সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করতে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি মিস্টার (ফিলিপ) লাজারিনি এবং তার কর্মীদের তাদের অপারেশনগুলো তত্ত্বাবধান করতে দেয়া হওয়া উচিত এবং তাই আমরা ইসরায়েল সরকার এবং অন্যান্য উপযুক্ত কথোপকথনকারীদের সাথে এটি করার জন্য চাপ দেওয়ার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

লাজারিনি গত সোমবার কায়রোতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহর পরিদর্শন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইসরায়েল তাকে জানিয়েছে যে, তার প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ইউএনআরডব্লিউএ প্রধানের এই অভিযোগ সমর্থন করেন মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি।

গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ প্রধানের প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ায় ইসরায়েলের নিন্দা করেছেন ফিলিস্তিন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ‘এক্স’-এ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “তেল আবিব ‘গণহত্যার’ সাক্ষীর বিবরণকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।”

নিজেদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় ১৯৪৯ সালে জাতিংসংঘের সাধারণ পরিষদ  ইউএনআরডব্লিউএ গঠন করেছিল। সংস্থাটি গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের সহায়তায় কাজ করে থাকে।

ইসরায়েলের অভিযোগ, জাতিসংঘের এই সংস্থা হামাসের একটি ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএর কয়েকজন কর্মীর জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে তেল আবিব।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউএনআরডব্লিওএকে অর্থ দেয়া বন্ধ করে দেয়। একই সাথে বিষয়টি খতিয়ে দেখারও আহ্বান জানায়। তবে সংস্থার কাজকে ওয়াশিংটন মূল্যবান বলে বর্ণনা করেছে।

আনাদোলু  এজেন্সি জানিয়েছে, হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলা চলমান এই হামলায় ইতিমধ্যে ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

ইসরায়েলের বর্বর এই আগ্রাসন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিকে কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছে এবং প্রায় সমস্ত বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। এছাড়া নির্বিচার এই আক্রমণ গাজায় বিশাল ক্ষুধা ও মানবিক সংকটের সূত্রপাত করেছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়