ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২১ ১৪৩১

হামাসের কতটুকু ক্ষতি করতে পেরেছে ইসরায়েল?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৭, ৬ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ২১:২৯, ৬ এপ্রিল ২০২৪
হামাসের কতটুকু ক্ষতি করতে পেরেছে ইসরায়েল?

গাজায় ইসরায়েলের হামলার ছয় মাস পূর্তি হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই যুদ্ধে ইসরায়েলের হাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেসামরিক নাগরিকরা। ছিটমহলে মৃতের সংখ্যা যতই বাড়ছে ততই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে, কীভাবে যুদ্ধ শেষ করা যায় বা পরবর্তী কী হবে সে বিষয়ে ইসরায়েলের কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নেই। এসব দেখে ইসরায়েলের মিত্রদের ধৈর্য্যও ফুরিয়ে আসছে। শনিবার বিশেষ প্রতিবেদনে সিএনএন ও বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময়, ইসরায়েলি সরকার জানিয়েছিল, এই অভিযানের দুটি লক্ষ্য: হামাসকে নির্মূল করা এবং গাজায় হামাসের হাত থেকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা। তবে ছয় মাস সংঘর্ষের পরও কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি ইসরায়েল। একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। এমনকি দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও এখন প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ইসরায়েলে অস্ত্রের চালান বন্ধ করার আহ্বান বাড়ছে।

ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হাজার হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং গাজার তলদেশে হামাসের সুড়ঙ্গের বিশাল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করেছে। বিবিসি ইসরায়েলি বাহিনীর এই দাবি যাচাই করে দেখেছে, আদতে তা সত্য নয়।

৭ অক্টোবরের আগে গাজায় হামাসের প্রায় ৩০ হাজার যোদ্ধা ছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল। হামাসের অনেক ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যেমন- ইসমাইল হানিয়াহর মতো শীর্ষনেতারা বিদেশে থাকেন। তবে এর অনেক সামরিক নেতৃত্ব গাজার অভ্যন্তরে রয়েছেন বলে মনে করা হয়।

সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৩ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। অবশ্য তারা এই সংখ্যাটি কীভাবে গণনা করেছে তা জানায়নি। হামাস নেতাদের মধ্যে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের নাম প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। গত বছরের অক্টোবর থেকে মোট ১১৩ জন হামাস নেতার নামকরণ জানা গেছে, যাদের অধিকাংশই যুদ্ধের প্রথম তিন মাসে নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত গাজায় হামাসের কোনো সিনিয়র নেতা নিহত হওয়ার খবর জানায়নি।

হামাস নেতা দাবি করে ইসরায়েল এমন ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেছে যে, আদাতে তারা হামাসের সদস্য কিনা তা যাচাই করা যায়নি। এদের মধ্যে এক জন ছিলেনএই গোষ্ঠীর সদস্য কিনা তা যাচাই করা সম্ভব নয়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মুস্তাফা থুরায়া, যিনি দক্ষিণ গাজায় একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছিলেন। তালিকায় এমন নাম পাওয়া গেছে যাদের একাধিকবার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

জেরুজালেমভিত্তিক আরব-ইসরায়েল সংঘাতের বিশেষজ্ঞ নাথান থ্রাল বলেন,‘ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার তার নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না, কারণ হামাস পশ্চিম তীর ও গাজায় ফিলিস্তিনি সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। গত কয়েক মাসে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল উত্তরে হামাসকে পরাজিত করার ঘোষণা দেওয়ার পর, আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে প্রতি সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনারা উত্তরে মারা যাচ্ছে। তাই এটা স্পষ্ট যে, এই যুদ্ধের পরেও হামাসের অস্তিত্ব বজায় থাকবে। ইসরায়েল রাফাহ আক্রমণ করুক বা রাফাহ আক্রমণ না করুক হামাস মাটিতে একটি বড় শক্তি এবং এই যুদ্ধের শেষেও তাই থাকবে।’

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়