দক্ষিণ কোরিয়ায় যৌন উৎসব নিয়ে যা হলো
লি হি টাই তার যৌন উৎসবের জন্য অনেক বেশি আশাবাদী ছিলেন। এ ধরনের উৎসব দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘প্রথম ও বৃহত্তম’ পর্যায়ের হতে যাচ্ছে ভেবে তিনি গর্ব বোধ করছিলেন।
লি হি টাই কল্পনা করেছিলেন পাঁচ হাজার ভক্ত তাদের প্রিয় জাপানি পর্ন অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের দেখতে ভিড় জমাবেন। গত শনিবার এসব অভিনেতা ও অভিনেত্রী জাপান থেকে উড়ে এসেছিলেন। এই উৎসবে ফ্যাশন শো, সেক্স টয় প্রদর্শনী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের খেলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু উৎসবের ২৪ ঘণ্টা আগেই তা বাতিল করেছে সুওন শহরের কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ কোরিয়া যৌনতা এবং প্রাপ্তবয়স্কদের বিনোদনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি রক্ষণশীল। প্রকাশ্যে নগ্নতা এবং স্ট্রিপ শো দেশটিতে নিষিদ্ধ। এছাড়া এখানে হার্ডকোর পর্নগ্রাফি বিক্রি বা বিতরণ করা বেআইনি, তবে দেখা বেআইনি নয়।
আয়োজক লি বলেন, ‘ভার্চুয়ালি প্রত্যেক উন্নত দেশেই যৌন উৎসব হয়, কিন্তু এখানে দক্ষিণ কোরিয়ায় আমাদের প্রাপ্তবয়স্কদের বিনোদনের সংস্কৃতি নেই। আমি একটি তৈরির দিকে প্রথম পদক্ষেপ নিতে চাই।’
গত মাস সুওন শহরের নারী অধিকার গোষ্ঠীগুলো এই আয়োজনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। তারা এই উৎসবকে অভিযুক্ত করেছে লিঙ্গ সহিংসতা হিসাবে।
স্থানীয় মেয়র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এই উৎসবের আয়োজনের জন্য নিন্দা করেছেন। উৎসব অনুষ্ঠিত হলে তিনি ভেন্যুর লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় হতাশ লি ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে সেখানেও একই রকম ঘটনা ঘটে। নতুন কর্তৃপক্ষ উৎসবটিকে ‘যৌন সম্পর্কে একটি বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করার’ চেষ্টা বলে অভিযুক্ত করেছে এবং অনুষ্ঠানটি বাতিল করার জন্য জোর দিয়েছে। পরে লি সিউলের নদীতে একটি জাহাজে এই উৎসব আয়োজনের চেষ্টা করেন। কিন্তু, কাউন্সিলের চাপের কারণে নৌকার ইজারাদার লি এর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
শেষ পর্যন্ত লি রাজধানী সিউলের পাশের এলাকা গ্যাংনামের একটি ছোট আন্ডারগ্রাউন্ড বার খুঁজে পান। এবার তিনি ভেন্যুর তথ্য গোপন রাখলেন। তবে বিষয়টি কোনোভাবে জানতে পেরে গ্যাংনাম কাউন্সিল তাদের শতাধিক রেস্তোরাঁর প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দিয়ে জানায়, তারা উৎসবের আয়োজন করলে এটি ‘নৈতিকভাবে ক্ষতিকারক’ বলে অভিযুক্ত করে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু বার কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। আয়োজকদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে দুদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় আসেন জাপানি পর্ন তারকারা।
এবার গ্যাংনামের বাসিন্দারা আয়োজকদের হুমকি দেওয়া শুরু করে। অনুষ্ঠানে যেসব নারী অংশ নিতে যাচ্ছিলেন, তারা ছুরি হামলার আশঙ্কা করেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে হত্যার হুমকি পেয়েছেন লি। শেষ পর্যন্ত সোমবার উৎসব বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি।
ঢাকা/শাহেদ