প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুকে সরিয়ে দিচ্ছেন পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দীর্ঘদিনের মিত্র সের্গেই শোইগুকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভের নাম প্রস্তাব করেছেন তিনি। রোববার (১২ মে) রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে পুতিন এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সোমবার (১৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সের্গেই শোইগুকে সরিয়ে দিতে চলেছেন বলে ঘোষণা করেছে ক্রেমলিন। ৬৮ বছর বয়সী শোইগু ২০১২ সাল থেকে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে রয়েছেন এবং তাকে এখন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিযুক্ত করা হবে।
রুশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ থেকে প্রকাশিত কাগজপত্রে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে শোইগুর স্থলাভিষিক্ত হবেন উপ প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসভ। টানা দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে এবং শোইগু সে যুদ্ধে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
রাশিয়ার সরকারি কাগজপত্রে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন চান নিকোলাই পাত্রুশেভের কাছ থেকে শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব নিক শোইগু। তবে পাত্রুশেভের নতুন পোস্ট কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত শোইগু। পুতিন যখন তার জন্মভূমি সাইবেরিয়ায় মাছ ধরতে যান, তখন প্রায়ই তার সঙ্গী হন শোইগু। সামরিক অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও পুতিন তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শোইগু ১৯৯০ সালে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
শোইগুর বদলে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে সম্ভাব্য ব্যক্তি হিসেবে প্রস্তাবিত বেলোসভ সামান্য সামরিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন অর্থনীতিবিদ। অনেকের কাছে এ পদের জন্য তার নাম সামনে আসা বেশ বিস্ময়কর। রাশিয়ার অর্থনীতিকে চলমান যুদ্ধের প্রচেষ্টার সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একতাবদ্ধ করতেই পুতিনের এই উদ্যোগ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। টানা দুই বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি এখন বেশ বেকায়দায় রয়েছে। যুদ্ধে অর্থায়নের জন্যও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পর্যাপ্ত বাজেট থাকা দরকার-এটাও একটা কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
চলতি বছরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের আসনে বসে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন পুতিন। ফলে আরও ছয় বছরের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। তবে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবারের মেয়াদে পুতিন আরও বেশি ক্ষমতাধর হয়ে উঠবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
/ফিরোজ/