ভারতে হিটস্ট্রোকে মৃত্যু ৮৫
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৮৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে দেশটির ওড়িশা রাজ্যে। সেখানে সর্বোচ্চ ৪৬ জনের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড এর মধ্যে ভেঙেও যেতে পারে, এমন সম্ভাবনাও আছে। কারণ রাজধানীসহ ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং ওড়িশায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশটিতে একের পর এক মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র গরমে হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হচ্ছে।
স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক নীলকান্ত মিশ্র জানান, যদিও মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত পরীক্ষার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে, তবে প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে মৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই তীব্র তাপের সময় বাইরে কাজ করছিলেন। এতে ধারণা করা যায় হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশেও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত মৃত্যুর মিছিলে অন্তত ৯ নির্বাচন কর্মকর্তা-কর্মী রয়েছে। এছাড়াও মৃতদের মধ্যে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীও রয়েছেন। এছাড়া গরমজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন আরও অনেকে।
তাদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক আর বি কমল দেশটির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যখন তাদের হাসপাতালে আনা হয় তাদের মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেই ব্যাপক জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতাই এ জন্য দায়ী।
এদিকে, শুক্রবার রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) তথ্য অনুযায়ী, কয়েকটি উপকূলীয় অঞ্চলে আর্দ্রতার মাত্রা ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৩ জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহের এই অবস্থা অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে অবিভক্ত সম্বলপুর, সুন্দরগড়, বোলাঙ্গির, কালাহান্ডি এবং বৌধ জেলায় বসবাসকারীদের পিক আওয়ারে বাড়ির ভেতরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতেও গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও অসহনীয় গরম-তাপপ্রবাহের মানুষের পাশাপাশি কষ্টে আছে পশু-পাখিরাও। নয়াদিল্লি চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গরমের জেরে পাখি, বুনো বানর ও অন্যান্য প্রাণীরা অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। এই প্রাণীদের সুস্থ রাখতে খাঁচাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, বরফ ও পানিসমৃদ্ধ বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস
/ইমন/