ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন

কেন দলকে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে পারলেন না মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ৫ জুন ২০২৪   আপডেট: ১১:০৯, ৫ জুন ২০২৪
কেন দলকে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে পারলেন না মোদি

নরেন্দ্র মোদি। ছবি: ইন্টারনেট

শুরু সেই ২০০২ থেকে। গুজরাটে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বারবার জিতিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনেও তার নেতৃত্বে বিপুলভাবে বিজেপি জিতেছে এবং একার ক্ষমতায় সরকার গঠনের জায়গায় পৌঁছে গেছে। এবারই ব্যতিক্রম হলো। ২২ বছরের মধ্যে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে এই প্রথমবার পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে পারলেন না নরেন্দ্র মোদি।

গত দুইবারের মতো এবারও দলের প্রচার ছিল মোদিকেন্দ্রিক। তিনি দুইশটির বেশি জনসভা ও রোড শো করেছেন। একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে কলকাতায় দুই দিন কাটিয়েছেন। উত্তর কলকাতায় বিশাল রোড শো করেছেন। দেশের প্রায় সব প্রান্তে গেছেন। চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি মোদি। তা সত্ত্বেও এবার তিনি পারেননি।

আরো পড়ুন:

পড়ুন: চূড়ান্ত ফল ঘোষণা: বিজেপি ২৪০, কংগ্রেস ৯৯

বারাণসীতে এবার জিতেছেন মোদি, কিন্তু ব্যবধান ও ভোটপ্রাপ্তির হার কমেছে। গতবারের তুলনায় নয় দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট কম পেয়েছেন। গতবার তিনি জিতেছিলেন ৪ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি ভোটে। এবার জিতেছেন এক লাখ ৫২ হাজারের বেশি ভোটে। বারাণসীতে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী অজয় রাইয়ের ভোট বেড়েছে ২৬ শতাংশের বেশি। তিনি ৪ লাখ ৬০ হাজার ভোট পেয়েছেন।

এবার লোকসভার আসনসংখ্যার নিরিখে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে মোদি-ম্যাজিক কাজ করেনি। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি পেয়েছে ৩৭টি আসন এবং কংগ্রেস ৬টি। বিজেপি ৩৩ ও তাদের জোটসঙ্গী আরএলডি ২টি আসন পেয়েছে।

মোদি ও যোগী আদিত্যনাথ প্রচার করা সত্ত্বেও কেন এমন হলো
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা মনে করেন, অনগ্রসর ভোট এবার ইন্ডিয়া জোটের দলগুলিতে ফিরেছে। বিজেপির কিছু নেতা ৪০০ আসন পেলে সংবিধান বদল করার কথা বলেছিল। সেটাকেই প্রচারের হাতিয়ার করেছিল ইন্ডিয়া জোট। সেই প্রচার কাজ করেছে।

প্রথমেই যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেবেন। তার ওই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল এমনকি দীর্ঘদিন পর নিজের রাজ্য গুজরাটেও সবগুলি লোকসভা আসন জিততে পারেননি মোদি। গত দুইবার পেরেছিলেন। এটাও তার একটা ধাক্কা।

জোটকে নেতৃত্ব দেওয়া
তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলে নরেন্দ্র মোদিকে জোট সরকরের নেতৃত্ব দিতে হবে। সেক্ষেত্রে এতদিন তিনি যেভাবে সরকার চালিয়েছেন, সেভাবে কী পারবেন? গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে কী জোটের শরিকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে?

প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির জোট চালানোর কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তাকে কাজের ধরন বদলাতে হবে। বাজপেয়ী মডেলে ফিরতে হবে। আর বিজেপির কোর এজেন্ডা, যেমন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, সংবিধান সংশোধন এসব করা সম্ভব হবে না।

নরেন্দ্র মোদি। ছবি: ইন্টারনেট

কেন ধাক্কা
শুভাশিসের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদি চারশ পারের ডাক দিয়েছিলেন। অনেক কম পেয়েছেন। তার দায় তিনি না নিলেও মানুষ মনে করবে, তিনি পারেননি। আরেকটা কথা এই নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, মানুষের সমস্যা, জিনিসের দাম বাড়া, চাকরি না পাওয়ার বিকল্প হিন্দুত্ব হতে পারে না। কিছুদিনের জন্য তা হতে পারে, কিন্তু বেশিদিন এই প্রশ্নগুলো হিন্দুত্ব দিয়ে চেপে রাখা যায় না।

শুভাশিস মনে করেন, বাজপেয়ী-আদভানির আমলে বিজেপি নিজের মতো করে একটা মূল্যবোধের রাজনীতি করতো। এভাবে কাউকে প্রথমে চোর বলে, তারপর তাকে দলে নিতো না। মোদির আমলে অন্য দলের সঙ্গে বিজেপির যাবতীয় বিভেদ মুছে গেছে। তাদের মহারাষ্ট্রে দল ভেঙে সরকারে আসাও বুমেরাং হয়েছে। মহারাষ্ট্র তাকে বিশাল ধাক্কা দিয়েছে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

পড়ুন: সরকার গঠনে কাজ শুরু মোদির, আজ মন্ত্রিসভার বৈঠক

/এসবি/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়