ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ৩০ ১৪৩১

নির্যাতন, হত্যার শিকার হচ্ছে লিবিয়ায় বন্দি অভিবাসীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ১১ জুন ২০২৪  
নির্যাতন, হত্যার শিকার হচ্ছে লিবিয়ায় বন্দি অভিবাসীরা

তিউনিসিয়ার সীমান্তরক্ষীরা সাগরপথে ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক অভিবাসীদের আটক করে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। এসব অভিবাসী লিবিয়ায় পৌঁছার পর বাধ্যতামূলক শ্রম, মুক্তিপণ, নির্যাতন এবং হত্যার শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার একটি গোপন ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে রয়টার্স।

চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারির ব্রিফিং অনুযায়ী, ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে উত্তর আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ ইউরোপে অভিবাসীদের প্রবাহ ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হচ্ছে লিবিয়া ও তিউনিসিয়া। গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তিউনিসিয়া ও লিবিয়ায় শত শত অভিবাসী আটক বহিষ্কার হয়। ১৮জন প্রাক্তন বন্দির সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি একটি আটক কেন্দ্রের ফটোগ্রাফিক এবং ভিডিও প্রমাণের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল প্রতিবেদনটি।

লিবিয়ার মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ তারেক লামলুম জানান, মে মাসের প্রথম দিকে এই ধরনের স্থানান্তর ঘটেছে। তিউনিসিয়ায় আটক প্রায় দুই হাজার অভিবাসী চলতি বছর লিবিয়ানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

তিনি  বলেন, ‘তিউনিসিয়া থেকে লিবিয়ায় সম্মিলিত বহিষ্কার ও অভিবাসীদের নির্বিচারে আটক মুক্তিপণ আদায়ের চক্র এবং নির্যাতনকারী চক্রকে ইন্ধন জোগাচ্ছে, যা ইতিমধ্যেই লিবিয়ায় ব্যাপক মানবাধিকারের সমস্যা।

ব্রিফিং অনুসারে, লিবিয়ার কর্মকর্তারা কিছু অভিবাসীকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে হাজার হাজার ডলার দাবি করেছিলেন।

এতে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি মানব পাচারকারীসহ যারা দুর্বলদের শিকার করে তাদের স্বার্থে কাজ করছে।’

লিবিয়া মিশনে জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র  জানিয়েছে, তারা কোনো মন্তব্য করতে পারবে না। 16 এপ্রিল লিবিয়ায় জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা আবদুলায়ে বাথিলি বলেন, তিনি ‘লিবিয়ায় অভিবাসী এবং শরণার্থীদের ভয়ানক পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, তারা অভিবাসন প্রক্রিয়াজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন সহ্য করছে।’

জাতিসংঘের সর্বশেষ ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, তিউনিসিয়ার সীমান্ত কর্মকর্তারা লিবিয়ার সীমান্তের ঠিক ওপারে অভিবাসীদের আল-আসা বা নালুত আটক কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। অভিবাসীদের ত্রিপোলির কাছাকাছি বীর আল-ঘানাম আটক কেন্দ্রে স্থানান্তর করার আগে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত আটক রাখা হয়। এই আটক কেন্দ্রগুলো লিবিয়ার ডিপার্টমেন্ট টু কমব্যাট ইলিগ্যাল মাইগ্রেশন এবং লিবিয়ান কোস্ট গার্ড পরিচালনা করে। আল-আসা এবং বীর আল-ঘানমের অবস্থা ‘ঘৃণ্য’ পর্যায়ের। শতাধিক বন্দিকে হ্যাঙ্গার ও সেলগুলোতে আটকে রাখা হয়। পুরো আটক কেন্দ্রে স্রেফ একটি টয়লেট রয়েছে এবং তাতে কোন স্যানিটেশন বা বায়ুচলাচল নেই।

বীর আল-ঘানার কর্মকর্তারা অভিবাসীদের জাতীয়তার উপর নির্ভর করে তাদের মুক্তির জন্য আড়াই হাজার থেকে চার হাজার মার্কিন ডলার জন্য পণ দাবি করে। আল-আসা কেন্দ্রে সীমান্ত রক্ষীরা একজন সুদানিকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে এবং অজানা কারণে অন্য একজন বন্দিকে গুলি করেছে।

এ ব্যাপারে তিউনিসিয়া ও লিবিয়া কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজী হয়নি।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়