ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি রাশিয়ার

অধিকৃত ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপলে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে রাশিয়া। প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে মস্কো বলেছে, ওয়াশিংটনকে এর ‘পরিণাম ভোগ করতে হবে’।
সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল রোববার ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপলে ইউক্রেনের হামলায় দুই শিশুজন চারজন বেসামরিক নিহত হয়েছে। এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ কাছাকাছি একটি সৈকতে পড়ায় আরও প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এই হামলায় ইউক্রেন যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ব্যবহার করেছে সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অ্যাটাকমস ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। মস্কোর দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মার্কিন বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রোগ্রাম করা হয়েছিল।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই হামলাকে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ‘রাশিয়ান শিশুদের হত্যা’ করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। পুতিন সম্প্রতি ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মস্কো জানিয়েছে, রোববার নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে যাওয়ার কারণে। ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা চালানো ক্লাস্টার ওয়ারহেড বোঝাই পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনের হামলা চালানো অ্যাটাকমস ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রোগ্রাম করা হয়েছে এবং মার্কিন স্যাটেলাইট দিয়ে পরিচালিত।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভ সোমবার মস্কোতে সাংবাদিকদের জানান, রাশিয়ান বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত। তাই এর পরিণাম অবশ্যই ভোগ করতে হবে।
তার দাবি, রুশ প্রতিক্রিয়া কী হবে তা সময়ই বলে দেবে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মস্কোতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন ট্রেসিকে সোমবার তলব করেছে। এ সময় তাকে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ চালাচ্ছে এবং প্রকৃতপক্ষে সংঘাতের একটি পক্ষ হয়ে উঠেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রেসিকে আরও বলেছে, এই হামলার ঘটনায় অবশ্যই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গত মাসে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনকে পশ্চিমা দেশগুলোর দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহের সমালোচনা করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর জন্য যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দেওয়া হয়, তাহলে পশ্চিমা দেশগুলোতে হামলা চালাতে অন্যান্য দেশকে অস্ত্র দেওয়ার অধিকার রাখে রাশিয়া।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। উপদ্বীপটিকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে মস্কো।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রিই ইয়ারমাক বলেছেন, ক্রিমিয়া মানে ইউক্রেন। রাশিয়াকে অবশ্যই উপদ্বীপটি ছেড়ে যেতে হবে। সেখান থেকে তাদের সেনাবাহিনী ও সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে হবে।
জেলেনস্কির শীর্ষ এক উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন, ক্রিমিয়ার সামরিক স্থাপনায় হামলা করার সম্পূর্ণ অধিকার রাখে ইউক্রেন।
/ফিরোজ/