ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: দুই প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০১, ২৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ১২:০৫, ২৯ জুন ২০২৪
ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: দুই প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী- কট্টরপন্থী ও সংস্কারপন্থী দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে উদ্ধৃত করে শনিবার সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্সে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত এক কোটি তিন লাখ ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ, জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা কট্টরপন্থী প্রার্থী সাইদ জালিলি পেয়েছেন ৪২ লাখ ৬০ হাজার ভোট। সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত অপর প্রতিদ্বন্দ্বী আইনপ্রণেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ৪২ লাখ ৪০ হাজার ভোট।

এছাড়া, কট্টরপন্থি প্রার্থী ও পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ পেয়েছেন ১৩ লাখ ৮০ হাজার ভোট। আরেক কট্টরপন্থি মোস্তফা পুরমোহাম্মদি পেয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি ভোট।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য  খামেনির নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ছয়জনকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিল। পরে দুই কট্টরপন্থী নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে লড়াই করেছেন চার প্রার্থী। এর মধ্যে তিনজন কট্টরপন্থী এবং একজন তুলনামূলক সংস্কারপন্থী।

ভোট গণনার সর্বশেষ তথ্য বলছে, এবারের নির্বাচনে জালিলি এবং একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে মূল লড়াই হচ্ছে। নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তবে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে।

ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের প্রতিবেদনে আভাস দেয়া হয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে। যা রানঅফ নামে পরিচিত। এই রানঅফে লড়বেন নির্বাচনের প্রথম ধাপে সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রার্থীরা। আগামী ৫ জুলাই রানঅফের তারিখ নির্ধারণ করা আছে।

নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেছেন, এবারের নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল। ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৮ শতাংশ। আর গত মার্চে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪১ শতাংশ।

রয়টার্স জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা বড় করে দেখা হলেও দেশের প্রকৃত ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে। পররাষ্ট্র বা পারমাণবিক নীতি ও সরকারের বিভিন্ন শাখার নিয়ন্ত্রণ, সামরিক, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন আর্থিক সম্পদের বিষয়ে তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ কেউ এই নির্বাচনে জয় পাবেন। অর্থাৎ এ নির্বাচনের ফল খামেনির উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করবে।

খামেনির বর্তমান বয়স ৮৫ বছর। ধারণা করা হচ্ছে, যিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি পরবর্তী সময়ে খামেনির উত্তরসূরি নির্বাচনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকবেন।

শুক্রবার ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ইরানে আগামী বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হওয়ায় প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ায় আগাম নির্বাচন হয়। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়